Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

৩. আরো একটি মুহূর্ত, প্রতীক্ষার

আবীরের আজ মন খুব ভালো। শুধু খুব ভালো বললে হবেনা। ভীষণ ভীষণ আর ভীষণ ভীষণ ভালো বলতে হবে।
তবু সে কেন জানি তার ডায়েরীটা বের করে মন খারাপ করা কিছু শব্দ লিখে ফেললো খসখস করে। মন খারাপ করা শব্দই যদি মাথার ভিতরে ঘুরতে থাকে তবে তার কি-ই বা করার থাকতে পারে?
ডায়েরী বন্ধ করার আগে শেষ একবার স্পর্শ করে দেখল শেষাংশের শব্দের শেষ পঙক্তিমালা-গুলো!

'দখিনের বালু বেলা ভিড়ে
মরুময় ধু- ধু-
আজো কেউ হায়, ছুটে যায়,
ফেলে রেখে যায় কিছু
পদচিহ্ন শুধু'

ডায়েরীটা বন্ধ করে আবীর তা বুকে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ বসে থাকল চুপ করে। তারপর ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, সযত্নে সেটা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখল।

আবীরের আজ কলেজের প্রথম দিন। অবশ্য কলেজ শুরু হয়েছে আরো দু'মাস আগেই। একটু অবশ্য দেরীতেই ভর্তি হয়েছে সে, কিন্তু তাই বলে প্রথম দিনও দেরী করে উপস্থিত হওয়ার বিন্দু মাত্র শখ নেই।

তাড়াতাড়ি গোসল শেষ করে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চমকে ওঠে থমকে গেলো নিজেকে দেখে। মেয়েদের মত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল নিজেকে। কি আশ্চর্য! নিজেকে এতোটা সুন্দর তার আগে কখনোই মনে হয়নি। নাকি আগে কখনো নিজেকে ভালো করে লক্ষ্যই করেনি?

অবশ্য এটা সে ভালো করেই জানে, সুখী মানুষের হাসি মুখগুলি সবসময় সুখের বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারে চারিদিকে! আশেপাশের সবকিছুর মাঝেও সে সুখ সংক্রামিত হতে পারে অনায়াসে! সেই সুখ সবসময়েই সুন্দর।

দুঃখ কিন্তু কখনো মানুষের মাঝে এতো সহজে বিচ্ছুরিত হতে পারেনা। দুঃখ যেন কুণ্ডলী পাকিয়ে মানুষের শরীরে বসবাস করে সুখগুলিকে শুষে নিতে থাকে ভিতর থেকে, আর মানুষটার ভিতরে বাড়তে বাড়তে একদিন ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষটার শরীর চিড়ে বেড়িয়ে আসতে পারে হঠাৎ করেই। দুঃখও কিন্তু সুন্দর, চোখের পানিও সুন্দর। শুধু অবস্থা ভেদে সৌন্দর্যের প্রকার ভিন্ন। ভিন্ন তার বহিঃপ্রকাশ।

আরো একটা মুহূর্তে মানুষকে ভীষণ সুন্দর লাগে, জন্মগ্রহণের পর।

আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আবীর যেন কল্পনার মাঝে হারিয়ে যায়, আর তখনই আয়নার প্রতিবিম্বটা হঠাৎ কথা বলে ওঠে,

" ওয় হালা, আয়নার সামনে খাড়ায়া মাইয়া মাইনসের লাহান এত্তো কি দেহস?? "

আবীর যেন ঘোরের মধ্যেই তার কথার উত্তর দিয়ে দেয়...

" দেখছি, আমারই আঁখি পল্লব জুড়ে কোন ছায়ার বিস্তৃতি। আমার নেত্র-বারীতে কোন প্রতিমার প্রতিচ্ছবি। তেপান্তর হতে ভেসে আসা কোন রমণীর কিন্নর কণ্ঠ ঢেউ হয়ে আমায় যেন ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কোন সমুদ্রতীরে। সেই সমুদ্রের বালুকাময় রাশির উপর একজোড়া নূপুর পড়ে ঝড় তুলেছে কেউ এই বুকে। "

" উড়িসশালা!!! আয়নার সামনে খাড়ায়া তুমি এরিস্টটল ভাব ধরছ! কলেজে যাইয়া এইগুলা কোন মাইয়ারে শুনাইয়ো, প্রথম দিনেই খড়মের বাড়ি দিয়া তোমার দার্শনিক গিরি ছুডায়া দিবে। "

আবীর অন্যমনস্ক হয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে আবৃত্তি করতে থাকে,

" যদি দেখা হয়
আজ কোন অপ্সরী এই মর্তে
ভেঙে দেবো সাত আসমান
এনে দেবো নীল
বিনা শর্তে "

" বান্দর পুলা, কলেজে গিয়া পড়াশুনা কি করবা সেইডা তো বুইজ্জালচি আমি! এহনি সে- অপ্সরীর খোঁজের উপ্রে আছে, উডাই লেও মোরে খোদা। "

আবীর ভ্রুক্ষেপ করেনা, জানালা দিয়ে হাত বের করে মেলে ধরে বাহিরে। আর অবচেতন মনে বলতে থাকে,

" দখিনা হাওয়ায় তার এলোমেলো চুলের মাঝে খেলা করবে এক রাশ ঢেউ"
" হ, পারলে তোমারে শুইধ্যা ভাসায়া নিবো।"

" তার কালো মেঘের মত চুল নাড়া দিলেই মনে হবে- এই বুঝি বৃষ্টি নামল, আর যেন ভিজিয়ে দিয়ে গেলো আমায়- এই বর্ষার প্রথম বৃষ্টি।"

" হ, আর হাঁচ্চি দিলে মনে হইব, নাকের ফুটায় বিজলী চমকাইতেছে!"

" তার চোখ দুটি হবে যেন মহাকাশের সবচেয়ে উঁচুতে প্রজ্বল্যমান দুটি নক্ষত্র যা নীল আলো বিচ্ছুরিত করতে করতে হিরণ্ময়ের দ্যুতি ছড়াতে থাকবে সারা গায়ে।

" চোখ যদি নক্ষত্রের মত হয়, তইলে মুখ কি হইব ব্ল্যাক হোলের মত? আশেপাশের সব কিছু ভগ ভগ কইরা খাইয়া ফেলাইতেছে?"

" তার ঠোঁটের নীচে ছোট একটা তিলও থাকতে পারে। খুব ছোট, অনেকটা বিন্দুর মত!"

" সেই বিন্দুতে তুই কাটা কম্পাস বসাইয়া বৃত্ত বানা হারামজাদা।"

" ওর মাখনের মত নরম গাল যখন আমার গালে অলতো করে স্পর্শ করবে তখন...." ( মাঝখানে থামিয়ে দিয়ে প্রতিবিম্বটা বলে ওঠে)

" গালাগালি? "

আবীর হতচকিত হয়ে যায়,
" গালাগালি মানে? "

" গালাগালি মানে গালে গালে যে যুদ্ধ। ব্যাকরণ পড়সনা হারামজাদা?"

আবীর অবাক হয়ে যায়।
" এই ব্যাকরণ কোন বইয়ে লেখা আছে? আর গালে গালে যুদ্ধ করব কি জন্যে?"

" না করলে নাই। তর ব্যাপার। তইলে এক কাজ কর, সাথে করে ফুল নিয়া যা, তুই ওর খোপায় ফুল ঢুকায়া দিবি, আর ওয় তোর খোপায় ফুল ঢুকায়া দিবো। ভালা হইবো না?"

আবীরের মুখ হা হয়ে যায়,
" আমার খোপা মানে? "

" ওহহো -" প্রতিবিম্বটা ভেগ ভেগ করে হাসতে শুরু করে দেয়। " হালার পুষ্টি, তর তো খোপাই নাই। হেহ হে"

" আচ্ছা সত্যি সত্যি যদি এমন কারো সাথে দেখা হয়ে যায়, তাকে কি দেবো আমি? মেয়েদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের নাম বলতে পারো?"

" হালার সেনোরা, চলবো? "

আবীর আয়নার সামনেকার পর্দাটা টেনা দেয়। আর কথা চালানো সম্ভব নয়। আবীরের এরকম কল্পনার প্রতিবিম্বের সাথে কথা বলার কাজটা প্রায় প্রতিদিনের। এটা এক ধরণের দুষ্টামি নাকি নিজেকে নিজেই সঙ্গ দেয়া নাকি অন্য কিছু, তা সেই বলতে পারবে একমাত্র।

আবীর সকল দুষ্টামি বাদ দিয়ে ভদ্র, শান্ত- শিষ্ট ছেলের মত কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল কলেজের উদ্দেশ্যে।


continued to next part....
৪- কলেজের প্রথম দিন

**Go to next page!>>>
& don't forget to
vote
:)

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro