কিরিম-পর্ব-২
চায়ের দোকানে মারুফ...
বিস্কুটের দিকে তাকায়ে মারুফের চোখ মুখ বিকৃত হয়ে আছে, ভ্রু যতটুকু বাঁকে, তার পুরোটাই বাকাইন্না।
এডি কি ভাই?
বিস্কিট!!
বিস্কিটের দুই চাকার মাঝে কি?
এইটা কিরিম!
কি কস? কিরিম কি!! কিরমি?
দোকানি হেসে উত্তর দিলো..
_আরে কিরিম আর কি, মিস্টি কিরিম বিস্কুট!
_হালার পো হালা! ক্রিম হইলে কির্মির লাহান এতো কম দিছোস কেন? চোখেই তো দেহিনা। এই এট্টুখানি ক্রিম- আমি কি খামু নাকি গালে মাখমু?
_ভাই! এডি কি আমি বানাইছি? কোম্পানি বানাইছে!
_তো কোম্পানিরর ভিতরে হান্দায় দেখবি না কি বিস্কুট বানায়? অন্তত প্যাকেটের ভিত্রে তো হান্দায় দেখবি বিস্কুটে কিরিম দিছে না কির্মি দিছে?
চা দে এক কাপ!
চা হাতেও শুরু হলো মারুফের ঘ্যান ঘ্যান!
_এই ব্যাডা! চায়ে পিঁপড়া কেন! পিঁপড়াই তো আট আনার চা খায়া ফেলছে। ঐ কি আট আনার দাম দিবো?
_কি কন! ঐটুক পিঁপড়া আট আনার চা খাইতে পারে?
_আরে ব্যাডা, চাইলে পিঁপড়া পুরা মানুষই খায়া ফেলতে পারে। একটা লাশ আইন্না রাখ, দেখবি কেমনে চুক চুক কইরা খায়া লায়। তোরে কয়া লাভ নাই এডি।
আইচ্ছা থাক যাই গা! পরে আসুম নে।
দোকান থেকে বের হওয়ার সময় আরেক চশমা ওয়ালা কাস্টমারের সাথে-
_ এই ভাই পা সরান না! যামু কেমনে?
সবাই তো আর ভোলাভালা টাইপের মানুষ না, কতগুলি বদখৎ টাইপেরও থাকে মারুফের মত।
_ দুনিয়ার জাগা চোখে দেখোস না? চোখে কি স্টিলের সান গ্লাস দিছোস? নাকি চোখের বল্টু দুইটাই ফিউজ হয়া গেছে?
মারুফ তাৎক্ষণিক উত্তরে একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো, তারপর আবার নিজেকে সামলে নিয়ে...
_ ক্যান আপনের পা সরায়া বসলে অসুবিধা কি? মনে হয় পৃথিবীটা পাও দিয়া ঠেক দিয়া রাখছেন যে, পা উঠাইলেই পৃথিবী পকাৎ করে উপরে উঠে যাবে?
লোকটি মারুফ-কে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সিগারেটে একটা বড় টান দিয়ে উপরের দিকে ফুঁ দিলো।
মারুফ বেশি একটা সুবিধা করতে না পেরে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে এলো, " হালার গো হালা! মনডায় কয় পাও দুইটা হাতুড়ি দিয়া পিডায়া পেরেক দিয়া পার্মানেন্ট আটকায়া দেই। ঘাউড়া হালা কোনহানকার!"
মারুফের স্বভাবগত কারণে তার সাথে ঝামেলা লাগেনা এমন মানুষ পৃথিবীতে কমই আছে। যাদের ঝামেলা লাগেনা, হয় তারা মহাপুরুষ কিংবা বয়রা, কানে শুনে না।
সে যেখানে যায় সেখানেই কিছু না কিছু গিট্টু লাগায় আসে, এই গিট্টু সহজে খুলেও না।
বেশি সহজ সরল মানুষ সামনে পেলেতো তো দুই দফা দাবড়ানি দেয়, আর কঠিন কিসিমের মানুষের হাতে পড়লে দাবড়ানি খায়।
তবে তার গুণের কথা বলতে গেলে এটুকু বলতে পারি, সে দয়ালু গোছের মানুষ। একটা উদাহরণ দেই,
একবার এক ছোট্ট পাখি ঝড়ের রাতে তাদের ঘড়ে ঢুকে পড়েছে। সেই পাখি ঘড়ে ঢুকেই ভয়ার্তভাবে এলোপাথাড়ি উড়াউড়ি শুরু করে দিলো।
মারুফ তাড়াতাড়ি গিয়ে ফ্যান বন্ধ করে দিলো। সুইচ অফ করার পরেও - ফ্যান ঝড়ের বাতাসে চোঁ চোঁ করে ঘুরছে। ফ্যানে কাটা পড়ার হাত থেকে বাঁচাতে পাখিটাকে বাঁচানো দরকার। কিন্তু পাখিটাকে ধরবে কি করে?
মাথায় তাৎক্ষনিক আইডিয়া এলো মারুফের। তার ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যাড দিয়ে সাটাম করে বাড়ি দিয়ে পাখিটিকে নীচে নামালো।
অবশ্য তার দয়া কিন্তু ঐ পর্যন্তই। সে যে জোড়ে বাড়ি দিয়েছে তাতে পাখিটির গু বের হয়ে যাওয়ার কথা।
আর হলোও তাই। পাখিটি বাড়ি খেয়ে যখন নীচে পড়েছে তখন কাছে এগিয়ে গিয়ে দেখা গেলো, পাখি স্পট ডেথ। কোনো নড়াচড়া নাই, একদম স্থির।
মারুফ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো, "এতো তাড়াতাড়ি মরলো কেমনে? আজিব তো! হইতে পারে, আমি মাত্র বাড়ি দিয়া নীচে থ্রো করছি, আর যমদূত মনে হয় ডাইরেক্ট ক্যাচ ধরছে!
___<<_____>>_______<<______>>___
:D
পরের পৃষ্ঠায়.....
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro