Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

১৭

"তুই এতটা কাছের তাও কেন খুব দূরের মনে হয় ?
তুই এতটা আদরের তাও তোর গালদুটো আমার আর ছোঁয়া হয়না।
কিন্তু জানিস, তোকে না আমি আমার মনের আয়নায় ইচ্ছে হলেই ছুঁই,
তোর বাড়ান হাতখানা তাই আমার জন্য জলে ডোবা মানুষের মতো শেষ আশ্রয়।
তুই যদি অনেক দূরে চলে যাস, 
তবে তোকে খুঁজতে খুঁজতেই হয়ত একদিন আমিও হারিয়ে যাব দূরে কোথাও, নাম না জানা কোনো দেশে।
সেদিন তুই যেন আবার আমায় খুঁজে মরিস না।
আমি তো তোর মাঝেই আছি, তোর বুকে ইচ্ছে নদী হয়ে।"

                                           
"অরণ্য....। "

" কী? "

"আমার না খুব ভয় করে। "

"ভয়? কিসের ভয়?"

"আমাদের বিয়ের কথাটা কেউ জেনে ফেলবে নাতো? "

"কি জানি, কেন বলত? "

"না মানে যদি কোনোভাবে ঘটনাটা আম্মু - আব্বু বা  বড়ফুপির কানে পৌঁছে যায় তা হলে কি হবে? "

অরণ্য হেসে ফেলল। নিঝুমের বড় ফুপি ওদের বিয়ের ঘটক। কিন্তু এটাও সত্যি যে ব্যাপারটা উনি কোনোভাবে জানতে পারলে, নিঝুমকে উনি  আস্ত রাখবেন না, একেবারে বার-বি-কিউ করে খেয়ে ফেলবেন।

বিয়ের কাবিনটা যত দ্রুত সম্ভব ঝুমের কাছে দিতে হবে। এটা ওর জন্য একটা বাড়তি নিরাপত্তা। কখনও যদি উল্টোপাল্টা পরিস্থিতি তৈরী হয়.... তা হলে অন্তত আইনীভাবে ও লড়তে পারবে সমাজের বিরুদ্ধে। কেন যে কথাটা দোল খেল ওর মনের মধ্যে।

"অরণ্য... "

"হুমম...."

"আমাকে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাবে?"

নিঝুমের কথায় অরণ্যর চোখ কপালে উঠল। ম্যাডাম এখনও লঞ্চের বেডে শুয়ে আছে আর বলে কিনা ঘুরতে নিয়ে যাবে?

"আরো বেড়াতে হবে? "

"আরো মানে? "

"মানে আমরা তো অলরেডি বেড়াচ্ছি।"

"হ্যাঁ তা বেড়াচ্ছি কিন্তু এখানে তো সবাই আছে। সবার সামনে তো হাতটা ধরতেও ভয় লাগে আমার।"

নিঝুমের কথায় অরণ্য হো হো করে হেসে উঠল।

" তার মধ্যেও আমি কিন্তু তোমাকে পেয়ে গেছি।"

অরণ্যর বুকে মুখ লুকিয়ে হাসল নিঝুম। কি থেকে কি হয়ে গেল.. এখন বড্ড লজ্জা লাগছে ওর।

"ঝুম..."

"উমম..."

"বলছি বিয়ের পর আমরা হানিমুন করতে কোথায় যাবো?  পাহাড়ে না সমুদ্রের কাছে?"

"আবারো বিয়ে?" নিঝুম বিস্ময়ের সাথে জানতে চায়।

"হু... বিয়ের অনুষ্ঠানে একদম লাল টুকে টুকে বউ সাজবে... আমি ঘন্টার পর ঘন্টা হা করে আমার বৌটাকে দেখতে চাই।"

নিঝুম হাসে, ঘন্টার পর ঘন্টা!

হ্যাঁ, আজীবন। কিন্তু তার আগে তুমি বলো আমরা হানিমুনে কোথায় যাবো?

"উমমম...  সমুদ্র আমার খুব প্রিয়। তোমার? "

অরণ্য বালিশ থেকে মাথা তুলে হাতের পাতার উপর ভর দিয়ে... অবাক হয়ে তাকায়।

" আমার কান ঠিক আছে তো? "

" কেন? " নিঝুম অবাক হলো। ও কি এমন বলেছে যে অরণ্য চোখ ছানাবরা করে ওকে দেখছে?

"কেন!"

"হ্যাঁ... কেন?"

"কারন ম্যাডাম আমাকে আজ তুমি করে বলেছে, এতো বড়ো সৌভাগ্য দেখে কি অবাক না হয়ে পারা যায়?"

"তুমি তুমিতে, আমি আমাকে হারাই
  যত দূরেই যাই  কেন
  তবু তোর হাতেই আমার ঘুড়ির নাটাই।"

"ইশশ... আসলেই ভুলে হয়ে গেছে। আমি একদম বুঝতে পারিনি, সরি। "

"উহু.. ঝুম,  এই ভুলটা বরং ভুলই থাক। এটা হচ্ছে একটা সুন্দর ভুল। এটাকে শুধরাতে গেলে সেটা হবে জোর করে পাল্টান । আর আমি তো সেই কবে থেকে তোমার, তুমির অপেক্ষায় ছিলাম। ভাবছিলাম যে কবে তুমি সব জড়তা কাটিয়ে আমাকে তুমি বলবে। অবশেষে সেই সময়টা এলো।"

অরণ্যর সাথে প্রথম দেখা হওয়ার পর থেকে সব ঘটনা এত দ্রুততার সাথে ঘটেছে যে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটতে গিয়ে নিঝুমের নাভিশ্বাস উঠে যাওয়ার অবস্থা। আর ওদের কাছে আসার গল্প তো একদম রকেটের মতো। ওর আপনি, তুমির অবস্থাও তাই এই রকম।

"এত চিন্তা করোনা ঝুম। এই বিয়ে আমরা ইচ্ছে করে করিনি। করতে  বাধ্য হয়েছিলাম পরিস্থিতির চাপে পড়ে,  না হলে আমরা ওভাবে চোরের মতো বিয়ে কেন করব বলো।"

অরণ্যর প্রতিটা কথাই সত্যি, ওরা পরিস্থিতির চাপে পড়ে বিয়েটা করতে বাধ্য হয়েছিল। তবু ভয়টা নিঝুমকে এক ফোঁটা স্বস্তি পেতে দেয়না।

"আচ্ছা ওই লোকগুলো আমাদের বিয়ে কেনো দিয়ে দিল? আমরা তো কোনো দোষ করিনি।"

"আর বলোনা, ওটা হলো আমার অতি উৎসাহের ফল। চাকরিতে জয়েন করার সাথে সাথে নতুন জিনিসের প্রতি আগ্রহ ছিল অনেক বেশি।  পুলিশের চাকরিতে ঢোকার পরে আমারো নতুন কোন কেস দেখলে যেচে সেটার কারন গুলো বের করার শখ হতো। আর সেটা করতে যেয়ে রাইসুলের নামের সাথে পরিচয়। আর রাইসুল আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য, অপদস্ত করার জন্য এমনটা করেছে। আর তুমি আমার সাথে ছিলে তাই তুমিও আমার সাথে শাস্তি পেলে।"

"রাইসুল! এটা আবার কে? "

"আছে একজন। তোমার ওর সমন্ধে শোনার দরকার নেই। তুমি বরং আমার দিকে নজর দাও।"

অরণ্য বুকে টেনে নেয় নিঝুমকে। রাইসুলের ছায়াও ও পড়তে দেবে না নিঝুম এর উপর।

নিঝুম চুপ করে গেল। তবে রাইসুল নামটা ওর মাথায় গেঁথে গেল। অরণ্য পারলে ওকে বোধহয় বুকের সাথে পিষে ফেলত। তারমানে কি? রাইসুল নামটাকে কি অরণ্য ভয় পায়?

"ঝুম.. "

"উমম"

"ভালোবাসি.. "

নিঝুম অরণ্যর প্রসস্থ বুকে ভয় গুটিয়ে যাওয়া হরিনের মতো মুখ লুকালো।

নিঝুমের আসলে ভীষন ঘুম পাচ্ছে। কিন্তু অরণ্য একটার পর একটা প্রশ্ন করে যাচ্ছিল, নিঝুম হু হা বলতে বলতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল।

"ঝুম...."

"উম.. "

"তাহলে আমাদের সেকেন্ড হানিমুনটা চিটাগাঙে হবে ঠিক আছে।"

"হুম"

"ঝুম..."

"উমম "

"বউটুকি"

"হু..."

"কি শুধু  উহ্, উম করছ কখন থেকে "

কিন্তু নিঝুমের কোনো সাড়াশব্দ নেই।

"ঝুম... জান ।"

কিন্তু অরন্য কেবল হালকা একটা শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ শুনতে পেল। ওর হাতের উপর হালকা পাতলা একটা অনাবৃত শরীরের কোমলতা টের পেল। নিঝুমের চুলগুলি ওর মুখের উপর এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে আছে। আস্তে করে চুলগুলো ওর মুখের উপর থেকে সরিয়ে বালিশের উপর ছড়িয়ে দিল অরণ্য।

"যাহ্ ঘুমিয়ে গেছে? অরন্য ওর মোবাইলের আলোটা জ্বেলে নিঝুমের মুখে ফেলল। আহ কি  শান্তি! এই মুখটায় আল্লাহ কি দিছে? ঝুমের মুখের দিকে তাকালে ওর নেশা ধরে। ওর নাম মায়াবতী হলে বেশ হত। ওকে দেখলেই খালি ওর গালদুটা টেনে ছিড়তে ইচ্ছে করে অরণ্যর। এভাবে ঝুমের  দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকার লাইসেন্সটা যে ও পেয়েছে এটাই অনেক ওর কাছে। 

মনে হয়  হাজার বছর ও এভাবে পার করে দিতে পারবে শুধু ঝুমের মুখের  দিকে তাকিয়ে । তবু মন বেয়ারা হয়, ঝুমকে কবে ও একেবারে নিজের করে পাবে? ওর ঘরটা কবে থেকে নিঝুমের জন্য অপেক্ষা করছে, মনে হয় দেখা হওয়ারও অনেক  আগে থেকে ও এই মুখটার অপেক্ষা করছিল। সে জন্যই পুতুলকে দেখলে ওর খুব করুনা হতো। মেয়েটা ওর জন্য বেশ একটু পাগল আছে। কিন্তু অরণ্য কি করবে?  ওর মন কোথায় বাঁধা পড়ে আছে ও তো নিজেই জানেনা। নিঝুমকে প্রথম দেখেই ওই যে কেমন নেশা ধরল ওর,  সে রোগ আর সারলই না। হাজারটা পুতুল মিলেও অরণ্যর এই রোগ সারাতে পারবেনা।

আদরের বউটা ওর কেমনে করে ঘুমায় দেখো।  অরন্য আস্তে করে ওর কানের পেছনের চুলটা সরিয়ে একটা গাঢ় করে লাল চিহ্ন একে দিল। তারপর জায়গাটা খানিক সময় ধরে দেখল। তারপর আবার ওই খানটায় খুব তীব্র আবেগের সাথে চুমু খেল।

অরন্য বুঝতে পারছেনা একেই কি সোলমেট বলে? কি তীব্র একটা আকাঙ্খা হয় ওর ভিতরে নিঝুমের সঙ্গ পাওয়ার জন্য। তা না হলে কেন ও রাত নেই দুপুর নেই পাগলের মতো ওর পিছনে ছোটে? দুই হাত দিয়ে নিঝুমকে আবার বুকের ঠিক মধ্যেখানে জাপটে ধরল অরন্য। ওর কানের উপর নিজের মুখটা জোরে চেপে ধরল। " ঝুম কোনোদিন  কোনো কিছুর বিনিময়ে তোমাকে যেন হারাতে না হয়। ওই কষ্টটা তোমার অরণ্য সহ্য করতে পারবেনা, মরে যাবে।"

ঘুমের মধ্যে ঝুম কি বুঝলো কে জানে, ও অরন্যর বুকের মধ্যে আরও খানিকটা নাক ডুবিয়ে দিল।

"আমার ঝুমপরী একটা ফাঁকিবাজ....।"বলেই, অরণ্য এলোপাতাড়ি চুমো খেতে থাকলো ঘুমপরীর ঘুমের রাজ্যে। নিঝুমের মনে হলো কেউ ওকে সুরসুরি দিচ্ছে,  ঘুমের মধ্যেই খিলখিল করে হাসতে লাগল ও পাগলের মতো।

.....................................

"ঝুম.. "

"উমম.. খালি বকো কেন?"

"ঝুম.. প্লিজ.. "

"উহ.. আবার ডাকে,  আমি যাবো না তো কলেজে.. "

" ঝুম.... এই মেয়েতো আজ আমায় মারবে। যত নষ্টের গোড়া ওই শয়তান ছেলেটা। ইচ্ছে করে আমায় ফাঁসাল....  ঝুম প্লিজ উঠো না।"

"উহ.." নিঝুম ঠোঁট ফুলিয়ে... অরণ্যর হাত ছাড়িয়ে আবার উল্টো হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতেই, অরণ্য ওকে টেনে ধরে বসাল।

"এখন উঠো প্লিজ, একটু পরে আস্তে আস্তে সব উঠতে থাকবে। তার আগে ফ্রেশ হয়ে তুমি নিজের কেবিনে না গেলে আজ তোমার মায়ের হার্ট অ্যাট্যাকের কারন হব আমরা। "

নিঝুম কতক্ষণ হা করে তাকিয়ে থাকল অরণ্যর দিকে। অরন্য এরকম খালিগায়ে জিন্স পরে ওর সাথে কি কথা বলছে। কিসের কেবিন? হার্ট অ্যাটাক মানে? ওরা কি তাহলে এখন হসপিটালে?

"আম্মুর হার্ট অ্যাট্যাক হয়েছে? " নিঝুম বিভ্রান্ত সুরে জিজ্ঞেস করে।

"হয়নি। তবে  এবার হবে, তোমাকে এই অবস্থায় আমার সাথে দেখলে। "

নিঝুম সাথে সাথে চোখ বন্ধ করল।  ঘুমের মধ্যে ওর সব জট পাকিয়ে গিয়েছিল। কাল রাতের ঘটনা মনে পড়ে তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে নিল ও।

নিঝুম ওয়াশরুমে গেলে বাইরে দাড়িয়ে রইল অরন্য। ওকে রুমে ঢুকিয়ে দিতে পারলে ও একটু নিশ্চিত হয় । এরমধ্যে কোনোভাবে নিঝুমের আম্মু উঠে এলে সর্বনাশ। নাহ মাকে বিয়ের ব্যাপারটা বলে দেওয়া উচিৎ। ঢাকায় ফিরে সবার আগে এই কাজটা করতে হবে ওকে।

................................

অরন্যর নানু বাড়িতে পা দিয়ে খুশিতে আটখানা ওরা নিঝুম । অনেক খানি জায়গা নিয়ে বাড়িটা। সামনে বড় একটা লিচুগাছ। তাতে লাল লাল লিচু ঝুলছে। কিন্তু গাছটা পুরো নেট দিয়ে ঢাকা। নিঝুম বুঝতেই পারছিলনা কারনটা। একবার মনে করল কাউকে হাত দিতে দিবে না বলে বোধহয় এমন করে আটকে রেখেছে অরন্যর নানু। 

কিন্তু নানুকে দেখে মোটেই সেরকম মনে হলনা। উনি নিঝুমকে দেখে এত আদর করলেন যে নিঝুমের আধাবেলাও লাগল না ওনার ন্যাওটা হতে।অরন্যর মামী খুব চমৎকার রান্না করেন। ওদের জন্য অনেক রকম পিঠে বানিয়ে রেখেছেন। সকালের নাস্তা খেয়ে আশু আবারও ঘুম। নিঝুমেরও খুব  ঘুম আসছিল। কিন্তু ওর কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছিল। মনে হচ্ছিল সবাই ওর ঘুমের কারনটা বুঝে ফেলবে। অথচ জার্নির কারনে সবাই আসলে ঘুমাচ্ছিল।

অরন্য আর অয়নকে দুপুরে ভাত খাওয়ার আগে দেখা গেলনা। দু'ভাই একসাথে কোথায় যেন গেল। দুপুরের খাবার খেয়ে অরন্য নিঝুমের সাথে কথা বলতে আসলে নিঝুম রাগ দেখিয়ে কথাই বলল না।

..............................

অরন্যর নানুবাড়িটা  অনেকটা পুরানো জমিদার বাড়ির মতো। অনেকগুলো ঘর। পনের ষোলটা তো হবেই। তবে সব ঘরের আয়তন এক না। নিঝুম ঘুরে ঘুরে রুমগুলো দেখছিল। একটা ঘরের সাথে পুরানো আমলের প্যাচানো লোহার সিড়ি দেখতে পেল ও। ওটা বেয়ে ছাদে ওঠা যায়। কিন্তু যদি ভেঙে পড়ে সেই ভয়ে ওটা ধরে যাবে কি যাবে না করছিল, সেই সময় অয়ন এসে ঢুকল ঘরে।

"কি সর্বনাশ ঝুমঝুমি... তুমি সুইসাইড এটেম্প করছ কেন? "

ওর কথায় হকচকিয়ে গেল নিঝুম। "মানে? "

"মানে  বলছি আমার ভাইয়ের রাগ সিড়ির উপর কেন দেখাচ্ছ?"

"ওহ " এবার হেসে ফেলল নিঝুম।

" আরে না, পাগল নাকি। আমি আসলে এতে উঠা যাবে কিনা বুঝতে চেষ্টা করছি। "

"সেটাই তো বলছি। তার চেয়ে কাপড় পাল্টে নাও আমি তোমাকে বরিশাল শহর ঘুড়িয়ে দেখাই। আর তোমার কুম্ভকর্ণ বর বেশ নাক ডাকিয়ে ঘুমাক। "

"অরণ্য ঘুমাচ্ছে? " নিঝুম একটু রেগে বলল।

"আমি তো তাই দেখলাম। "

"দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা। ঘুরাতে নিয়ে এসে পড়ে পড়ে ঘুমানো বের  করছি ওনার।"

"এক কাজ করো, এক মগ পানি নিয়ে শয়তান ছেলেটার মাথায় ঢেলে দাও।"

নিঝুম অয়নের কথার উত্তর না দিয়ে অরণ্যকে খুঁজতে লাগল। অয়ন যা বলেছে একদম ঠিক। লোকটা বালিশে মুখ ডুবিয়ে ঘুমাচ্ছে।

নিঝুম আস্তে করে রুমের দরজাটা আটকে নিল। এই লোকের ঘুম যদি না ছুটিয়েছে আজকে। কোথায় মানুষ বিয়ের পরে বউ নিয়ে একটু এদিক ওদিক ঘুরতে যাবে তা না খেয়ে আবার এসে ঘুম। ও যে রাগ করে কথা বলল না, তাও পর্যন্ত গ্রাহ্যি করলনা, পচা একটা লোক। অথচ অয়ন পর্যন্ত ওকে নিয়ে বেড়াতে যেতে চাইল।

নিঝুম হাঁটু গেড়ে বসে অরণয়কে ধাক্কা দিল।  কিন্তু ওই লোক মনে হয় একশটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছে। নিঝুমের ধাক্কা খেয়ে আরো জোরের সাথে বালিশ জাপটে ধরে ঘুমাতে লাগল ও।

"আশ্চর্য রকমের একটা খারাপ লোক।" নিঝুমের মনে হল দেয় একটা খামচি। কিন্তু অরণ্য কী একটা যেন বলল বিরবির করে ঘুমের মধ্যে। নিঝুম বুঝতে পারলনা প্রথমে। ভাল করে অরণ্যর মুখের কাছে কান পাততেই শুনতে পেল অরণ্য আই লাভ ইউ জান বলছে। একটা মিষ্টি হাসিতে মুখটা হেসে উঠল নিঝুমের। কিন্তু পরের শব্দটা শুনে নিমেষে মুখটা অন্ধকার হয়ে এল ওর।

অরণ্য অনা নামে কাকে যেন ঘুমের মধ্যে চুমু খাচ্ছে।

নিঝুমের পায়ের নিচটা একদম ভূমিকম্প হওয়ার মতো দুলে উঠল। অরণ্য মনে মনে অন্য কাউকে ভালোবাসে?

কিন্তু এটা আবার ওই সুজির মতো কেউ না তো? হুমম তাই হবে শিওর। পাঁজিটা বোধহয় ইচ্ছে করে ওকে রাগানের জন্য এইসব করছে। দেখা যাবে অনা হয়ত ওর কোলবালিশের নাম। খুব খারাপ একটা লোক। খালি ওকে কষ্ট দেওয়ার কায়দা খোঁজে। আস্তে করে অরণ্যর চুলে হাত দিয়ে ওগুলো এলেমেলো করে দিল নিঝুম। লোকটা তারপরও পরে পরে ঘুমাচ্ছে দেখে আস্তে করে মুখ নিচু করে ওর গালে একটা চুমু খাওয়ার জন্য মুখ নামাল নিঝুম।

চলবে........

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro