১১
কলিং বেলের শব্দ এত বিশ্রী জানা ছিল না আশুর। একদম জঘন্য। ও এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো চেয়ার থেকে উঠলো দরজা খুলতে। প্রতিবারই আশু মনে করছে এই বুঝি আপু এল কিন্তু প্রতিবারই ও ধোঁকা খাচ্ছে।
ঘড়ির কাঁটা সন্ধ্যা সাতটা ছুঁই ছুঁই করছে। আশু নিঝুমের ফোনে ফোন দিলে শুধু নট রিচেবেল বলছে আর অরণ্যকে ফোন দিলে বলছে, "আশু আমরা একটু পরেই আসছি। "
ওদিকে ওর মা বড়ো মেয়ের চিন্তায় অস্থির হয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু আশু দরজা খুলে দেখলো এবারও অন্য লোক। সবুজ নামের এক পিচ্চি ছেলেকে লন্ড্রী থেকে কাপড় দিয়ে পাঠিয়েছে মনিরুল চাচা।
লন্ড্রী ব্যাগটা রেখে চরম বিরক্তির সাথে বিরবির করতে করতে আবার পড়ার টেবিলে গিয়ে বসল আশু।
....................................
নিঝুমের একফোঁটা ইচ্ছে হচ্ছে না এই লোকের সাথে কথা বলার। গাড়ি ওদের বাড়ির গেটের কাছে দাঁড়ানোর সাথে সাথে নিঝুম দরজাটা খুলে বের হয়ে গেল। ওর এতো রাগ হচ্ছিল যে নিজের পার্সটা সঙ্গে নেয়ার কথাও নিঝুমের মনে থাকল না।
ডোরবেল বাজাতেই দরজাটা খুলে গেল।
" আপু তোরা এত দেরি করলি কোন সাহসে... আম্মু কি পরিমান টেনশন করছিল সে খবর রাখিস! অলরেডি তার প্রেশার বেড়ে হাই হয়ে গিয়েছে।"
"কি আশ্চর্য... মানুষ একদম বললেই সবসময় টাইম মত পৌছাতে পারে? তার জন্য প্রেশার কেন বাড়াতে হবে? বিয়ে দিলে তো মেয়ে বাইরে থেকে কখন বাসায় আসবে যাবে সে খবরও পাবে না, তখন কি করবে... আম্মু?" নিঝুম উল্টো রাগ ঝাড়ল আশুর উপর।
"আশ্চর্য... আমি কি করেছি? তুই আমার উপর কেন রাগছিস?" আশু অবাক। ও মনে করেছিল সারাদিন ঘুরে ফিরে আপু এখন হাওয়ায় উড়তে থাকবে অথচ মুখ দেখে মনে হচ্ছে তার উল্টো অবস্থা।
"কিছু না... সর সামনে থেকে," নিঝুম আর দাঁড়াল না। সোজা সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেল।
আশু কিছুই বুঝল না। ও কি এমন বলল যে আপু এত চোটপাট দেখাচ্ছে ওর উপর।
"কারও ভাল করতে নেই। সবাই পচা, শুধু এই বাচ্চা মেয়েটার উপর যতো পারে তেজ দেখায়... হুহ্। "
আশু পড়তে যাচ্ছিল কিন্তু ডোরবেলটা আবারও বিকট শব্দে বেজে উঠল। মুখ কুঁচকে আশু চিৎকার করে বলে উঠলো...' ফ্রি তে কলিং বেল পেয়ে সব যতো পারো বাজাও।'
কিন্তু দরজা খুলে সামনে অরণ্যকে দেখতে পেয়ে আশুর মুখটা পাংচার হয়ে গেল। অরণ্য বিষন্ন মুখে দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছে। ওর হাতে নিঝুমের ফেলে আসা পার্স।
"জিজু আপনি? আমি তো মনে করলাম আপুকে নামিয়ে দিয়ে আপনি চলে গেছেন।"
আশুর প্রশ্নে অরণ্য হাসার চেষ্টা করলো কিন্তু আদতে কেবল অপচেষ্টাই হলো, আসল কাজ কিছুই হলো না।
"আশু ঝুমের পার্সটা ও গাড়িতেই ভুলে রেখে চলে এসেছে। আচ্ছা আন্টি কি আমার উপর খুব বেশি রেগে আছেন?"
"না.. না... জিজু, আম্মু রাগ করেনি, একটু টেনশন করছিল আরকি। আসলে আব্বুকে আপনাদের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথাটা আম্মু বলেনি।"
আশু অরণ্যর হাত থেকে পার্সটা নিল। ওর কেন যেন মনে হচ্ছ নিঝুম আর অরণ্যর মধ্যে কিছু একটা গরবড় হয়েছে, যেটা দুজনেই ওর কাছ থেকে লুকাচ্ছে অথচ দুজনের মুখেই এখন হাসি থাকার কথা ছিল।
"আমি কি আন্টির সাথে একটু দেখা করতে পারি? আসলে সন্ধ্যায় এত জ্যাম পড়েছিল রাস্তায়," অরণ্য লজ্জিত কন্ঠে জানতে চায়। আজ আসলেই ও একটা বড়ো অন্যায় করে ফেলেছে।
"আল্লাহ... কি বলছেন জিজু আপনি এটা? আসুন আমার সাথে, আম্মু বরং আপনার সাথে কথা বললে একটু স্বস্তি ফিরে পাবে।।"
অরণ্য পায়ে পায়ে রুমানার ঘরের দরজায় গিয়ে দাঁড়াল।
"আন্টি আসব? "
অরণ্যকে দেখে তাড়াতাড়ি শোয়া থেকে উঠে বসল রুমানা। ছেলেটাকে দেখে জানে পানি আসল যেন ওর। সেই কখন ফিরে আসার কথা ওদের আর এতোরাত করে বাড়ি ফিরলো।
"এসো বাবা। "
"আন্টি আই অ্যাম সরি।"
"না না সরির কিছু নেই, কিন্তু বোঝোইতো বাবা দিনকাল ভাল না।"
অরণ্য শুধু মাথা নাড়ল। আজকে যা হলো, তারপর কোনো কথাই আসলে ওর বলা সাজে না।
"রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল।"
" সে জন্যই বোধ হয় তোমাদের এতো দেরী হলো। "
"জি... আসলে আমরা একটু ফ্যান্টাসি কিংডমে গিয়েছিলাম। "
অরণ্য পরের অংশটা আর বলার সাহস পেল না। আজকের ঘটনাটা ওকে একদম নাড়িয়ে দিয়েছে আমূলে। নিজেকে এত অসহায় লাগছিল যে, নিঝুমের দিকে তাকানোর সাহসও হচ্ছিল না। সারা রাস্তায় নিঝুম ওর সাথে কোনো কথাই বলেনি। অরণ্যও ওকে জোর করতে পারেনি। এত খারাপ লাগছিল অরণ্যর নিজেরই। এত সুন্দর ভাবে যে দিনটা শুরু হয়েছিল,তার শেষটা এত খারাপ কেন হলো?
"ঠিক আছে, বুঝতে পেরেছি। কিন্তু বাবা বিয়ের আগে তোমরা এত দূরে আর যেওনা। বোঝতো সবাই ব্যাপারটা একভাবে নেবে না। নিঝুমের বড় ফুপি দিলারা আপা কিন্তু খুব কঠোর এ সব বিষয়ে। উনি আসলে শুধু তোমার বাবার জন্য অনেক কিছু চুপ করে মেনে নিচ্ছেন বা করছেন। তা না হলে ধর্মীয় অনুশাসন উনি খুব মেনে চলার চেষ্টা করেন। আর তোমরা তো এখনও বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হও নি। "
অরণ্য মাথা নিচু করে চুপ করে বসে রইল। আজকের সব ঘটনার জন্য আসলে একমাত্র ওই দায়ী। কোন আক্কেলে ও নিঝুমকে নিয়ে ওখানে গিয়েছিল? যতই সিভিল ড্রেসে থাকুক ও যে এখন আর কখনই সাধারন মানুষের মত জীবন যাপন করতে পারে না, ভুলে গিয়েছিল অরণ্য। তার খেসারত ওর ভালবাসার মানুষটাকে দিতে হলো। ঐ ঘটনার পরে নিঝুম কেমন একটা ঝিম মেরেছিল পুরো সময়টায়। অরণ্যও আর ওকে ঘাটায়নি। আসলে ওর নিজের অবস্থাও নিঝুমের থেকে খুব বেশি ভাল না। ঘটনাটা যদি কোনো ভাবে ওদের পরিবারের কাছে পৌছায় তা হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। ভয়ে গলা শুকিয়ে আসে অরণ্যর। ঐ কথা কানে গেলে ঝুমের সাথে ওর দেখা করা বন্ধ করে দিতে পারে ঝুমের পরিবার। না... না... কোনো ভাবেই ঐ কথা ওদের কানে পৌছাতে দেয়া যাবে না। মুখ নিচু করে নিজের সাথেই নিজে কথা বলতে থাকে অরণ্য।
"বাবা আমার কথায় তুমি কিছু মনে করোনা, কেমন। "
"না, না আন্টি.. আপনি আপনার জায়গায় একদম ঠিক আছেন। এই ভুল দ্বিতীয়বার আর হবে না, আসি। "
অরণ্য বেড়িয়ে যেতেই নিঝুম এসে মায়ের কাছে বসল।
"কি রে মুখ অমন হাড়ি করে আছিস কেন নিঝু?" রুমানার প্রশ্নে কান্না আটকে রাখা কঠিন হয়ে গেল নিঝুমের জন্য। তাও অনেক কষ্টে চাপিয়ে রাখতে হলো। এ কথা কেউ জানলে ওর বাবা মা কাউকে মুখ দেখাতে পারবেন না। নিঝুম জীবনেও ভাবেনি যে,ওর কারনে ওর বাবা মায়ের মুখ মানুষের সামনে এভাবে ছোট হয়ে যাবে।
মায়ের ঘর থেকে উঠে এসে বালিশে মুখ গুঁজল নিঝুম। কোনো ভাবেই এখন আর চোখের পানিটা আটকে রাখতে পারলনা ও। ওর যে কি কস্ট হচ্ছে, কাউকে বলে বোঝাতে পারবে না নিঝুম। এমনকি অরণ্যকেও এই দুঃখ বোঝান সম্ভব না।
কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল জানে না নিঝুম, হঠাৎ করে কারো আঙ্গুলের ছোঁয়ায় ঘুমটা ভেঙে গেল ওর।
" আশু প্লিজ, যা এখন। আমার কথা বলতে ভাল লাগছে না।"
"ঝুম আমি অরণ্য। "
অরণ্যর নাম শুনে এবার লাফ দিয়ে উঠে বসল নিঝুম। রেগে গিয়ে হিস হিস করে বলে উঠলো, " আপনি! আপনি এখানে কেন এসেছেন? আপনার কি এখনও শিক্ষা হয়নি? আরো কত অপদস্ত করতে চান আমার পরিবারকে? আরো ছোট করবেন আমাকে আর আমার পরিবারকে? তাহলে মিলবে আপনার শান্তি?"
"সশশ... আস্তে। তুমি আগে শান্ত হও,ঝুম।"
"আপনি আগে এখান থেকে যান। আপনার নির্বুদ্ধিতার জন্য আজকে লোকে আমার বাবা-মাকে তুলে কথা বলেছে। আপনি... আপনি আমার জীবনের একটা কুফা। আপনার সাথে দেখা না হলে, আমার জীবনটা এরকম ভাবে লন্ডভন্ড হতো না।"
নিঝুমের কথায় অরণ্য কোনে প্রতিক্রিয়াই দেখাল না, দৃশ্যত অবিচল রইলো। কিন্তু সত্যি কথা হলো, নিঝুমের কথা গুলো ওর হৃদয়টাকে সুঁইয়ের মতো এফোঁড়ওফোঁড় করে দিচ্ছিল। কি ভীষন এক যন্ত্রনা ওকে কুড়েকুড়ে খাচ্ছে সেই থেকে। ওর ঝুম ওকে কি করে এই কথা গুলো বলল? নিঝুমতো পুরো ঘটনার সময় ওর সাথেই ছিল। পরিস্থিতি কতটা খারাপ দিকে মোড় নিয়েছিল, সেটাতো ঝুম নিজের চোখেই দেখেছে। কিন্তু মুশকিল হলো অরণ্য ঝুমের উপর রাগও করতে পারছেনা। মেয়েটা আসলে এরকম একটা ঘটনা সামলে উঠতে পারছেনা, ওর আরো সময় দরকার।
"আমি যাবো কিন্তু তার আগে তুমি কান্না বন্ধ করো প্লিজ। আর যদি না করো তাহলে কোলে তুলে নিয়ে সোজা ড্রয়ইরুমে গিয়ে বসে থাকব," অরণ্যর কথায় নিঝুমের রাগ যেন আরও বাড়ল। অথচ অন্যদিন হলে নিঝুম এখন নিশ্চিত ভাবে লজ্জা পেত। ইশশ.. একটু ভালোবাসার উপস্থিতি মানুষের আচরনকে কত পাল্টে দেয়, অরণ্যর দেখে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় রইলো না।
"আচ্ছা আমি চলে যাবো কিন্তু অন্তত দশটা মিনিট একটু বসি। পাইপ বাইতে আজ খুব কষ্ট হয়েছে, তুমি বরং ঘুমাও আমি একটু পরেই চলে যাবো। "
অরন্যর কথার পিঠে নিঝুম আর কিছু বলল না, শুধু আস্তে করে বালিশে মুখ গুঁজল।
কতক্ষণ ঘুমিয়েছিল বলতে পারবেনা নিঝুম। কিন্তু একটা দমকা বাতাসে কাচের জানালাগুলো সব থরথর করে কাঁপছে, এই শব্দ শুনেই তাড়াতাড়ি বিছানায় উঠে বসল নিঝুম।
"অরণ্য..."
আশপাশটা ভালো করে চেয়ে দেখলো নিঝুম। ভোর হয়ে এসেছে। অরণ্য যে চেয়ারটায় গতকাল বসে ছিল সেটা খালি পড়ে আছে। কখন চলে গেল লোকটা?
আকাশের পানে তাকাতেই নিঝুম দেখল আকাশে একরাশ কালো মেঘের ঘনঘটা, ঝড় আসল বলে। বাতাসের হুড়োহুড়িতে জানালাগুলো তখন বেসামাল হয়ে বারি খাচ্ছে,
তাড়াতাড়ি দৌড়ে জানালাগুলো আটকাতে গিয়ে থমকে গেল নিঝুম। অরণ্য ওর সাদা রঙের পাঞ্জাবির হাতা গোটাতে গোটাতে রাস্তা পার হচ্ছে। তারমানে মাত্রই গিয়েছে সে। লোকটার জন্য কেমন একটা মিশ্র ধরনের অনুভূতির জন্ম হলো নিঝুমের। সারা রাত ওর পাশে বসে ছিল লোকটা! ভাবতেই কেমন একটা কষ্ট হলো ওর কিন্তু কালকের কথা মনে পড়ে যাওয়ায় সেটা আবার মূহুর্তে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। কালকে যা হয়েছে নিঝুম জীবনেও সেটা ভুলতে পারবেনা। ওই লোক ওর সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।
আকাশের দিকে তাকিয়ে মন খারাপের মাত্রাটা আরও বেড়ে গেল নিঝুমের।
..................................................................
"অরণ্য.... "
নিঝুম কি ডাকল? অরণ্যর সমস্ত শরীর কেমন কেঁপে গেল। আরেকটু হলেই পাইপ থেকে হাত ছুটে যেত ওর। একবার মনে হলো উপরে উঠে দেখে আসে, কিন্তু পরক্ষনেই চিন্তাটা বাতিল করল অরণ্য। এমনিতেই ওর উপর খেপে আছে নিঝুম, তার উপর আবার এখন ওকে দেখলে ফালতু ফালতু চিল্লাবে। রাস্তা পার হয়ে নিঝুমের ঘরের জানালার দিকে তাকাতেই দেখল জানালাটা আটকানো। কে আটকালো? ঝুম নাকি আন্টি? মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গেল অরণ্যর। জানালাটা বন্ধ দেখে মনে হচ্ছে ঝুম ওর মুখটা দেখতে চায় না বলে জানালাটা বন্ধ করে দিয়েছে। বুকের ভেতরে তোলপাড় শুরু হলো।
তারপর ভাবলো হয়তো ও যা ভাবছে সেটা সত্যি না। হয়ত ঝড় আসছে বলেই জানালাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
" কিরে নিঝু... কাল অরন্য তোকে ফ্যান্টাসি কিংডমে নিয়ে গিয়েছিল বুঝি? " রুমনার মুখে ফ্যান্টাসি কিংডমের নাম শুনে মুখটা ভয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেল নিঝুমের।
"হ্যাঁ.. মানে ওই আরকি।"
"সব রাইডেই উঠেছিলি তোরা? দুপুরে খেলি কোথায়? ওর ভেতরেই বুঝি? "
" হ্যাঁ ওর ভেতরেই খেলাম, ওরা বাইরের খাবার নিতে দেয় না আম্মু।"
"আমিও তাই শুনেছি। আচ্ছা অরণ্যদের বাসায় যাওয়ার তারিখটা এ সপ্তাহেই রাখলাম। গত সপ্তাহে তো তোর মেজ ফুপির জন্য পারলাম না। পরশু ওদের বাসায় আমরা সবাই যাব বলে ঠিক করেছি। মনসুর ভাইও পরশু ফ্রি আছেন, কি বলিস? "
"হুমম।"
"এই কি উমম.. হুমম করছিস? কি হয়েছে তোর? "
"কিছু না। "
"কিন্তু? "
"আহ রুমানা, কেন খামোখা মেয়েটার পেছনে লেগেছ। বড়ো হয়েছে, এখন ওর পিছনে সব সময় এত লেগে থাকার দরকার কি? " শাহেদ এসে নিঝুমের মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিলেন। মেয়েটা তার বড়ো হয়ে গেল। শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে দিতে হবে। কলিজা ফেটে যেতে চায়। কিন্তু কি আর করা? প্রজাপতি এখন তার পূর্ণ আকৃতি পেয়েছে... উড়তে তাকে দিতেই হবে।
মাথায় বাবার হাতের ছোঁয়া পেয়ে কান্নার বাঁধটা ভেঙ্গে গেল নিঝুমের। কিছুতেই আটকে রাখতে পারলনা নিজেকে। বাবাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল ও।
"কি রে মামনি? এই নিঝু, কাঁদছিস কেন?" শাহেদ বুঝতে পারে না হঠাৎ মেয়ের কি হলো?
রুমানা তাড়াতাড়ি এসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরল, "কি ব্যাপার! নিঝু তোর কি হয়েছে? "
"ও বাবা... আমি তোমাদের ছেড়ে কোথাও যাব না, আমি তোমাদের ছেড়ে কি করে থাকব? আমি কিছুতেই অন্য বাসায় গিয়ে থাকতে পারব না। "
নিঝুমের কথায় শাহেদ আর রুমানা দুজনেরই মন খারাপ হয়ে গেল। নিঝুম ওদের বড়ো সন্তান। ওর জন্য ওদের দুজনেরই টান টা বরারবরই একটু বেশি। নিঝুমের চোখে পানি দেখে শাহেদ আর রুমানার চোখও ছলছল করতে লাগল।
........................................................
আসমা আজকাল খুব ব্যাস্ত দিন পার করছেন। অরণ্যর বিয়ে উপলক্ষে গয়না তৈরি করাতে হচ্ছে।নিঝুমকে সাথে নিয়ে তাই জুয়েলারিতে যাবেন তিনি,ওর হাতের মাপটা নিতে হবে চুড়ি তৈরির জন্য।
হাটতে হাটতে অয়নের ঘরের দরজায় একবার ধাক্কা দিলেন তিনি। ছেলেটা আজো মশারি টাঙায়নি। কাথামুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। সুযোগ পেলেই অনুটা এই কাজ করে। দরজা টেনে দিয়ে এবার অরণ্যর ঘরের দরজায় টোকা দিলেন আসমা। আসলে অভ্যাস করছেন। এরপর ছেলে বউ আসলে যেন সমস্যা না হয়।
অরণ্য একটু অবাক হলো। ওর দরজায় টোকা দিচ্ছে কে?গলাটা একটু চড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,
"কে?"
"অরু আমি।"
"আম্মু! এসো। দরজা তো খোলা। "
দরজার পাল্লাটা সরাতেই আসমার চোখটা জুড়িয়ে গেল। কি সুন্দর লাগছে অরণ্যকে। ইউনিফর্মে দেখলে আসলে নিজের পেটের ছেলেকেও কেমন যেন আলাদা লাগে। কেমন একটা অনুভূতি যেন।
"কিছু বলবে আম্মু ?" চুলটা ব্রাশ করে নিল অরণ্য।
"হুম"
"কি? "
"বলছি.. নিঝুমদেরকে নিয়ে তোর নানাবাড়িতে যাই চল দুদিনের জন্য। অনেকদিন যাওয়া হয় না। "
মায়ের এমন প্রস্তাবে কি বলা যায় অরণ্য খুঁজে পেল না। ঝুমকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়া মানে তো ওর জন্য আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া। কিন্তু ঝুম কি যেতে রাজি হবে? তাহলে বরঞ্চ ওকে ভাল করে বোঝানোর সময় পেত অরণ্য।
"আমার মনে হয় এ বিষয়ে তুমি আর বাবাই কথা বল আঙ্কেল আর আন্টির সাথে। যাওয়া ফাইনাল হলে বলো আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিব।"
" দেখি তোর বাবার সাথে কথা বলে। আজ আবার তোমার বউয়ের চুড়ির মাপ দিতে যাব জুয়েলারিতে।"
" অয়নকে সাথে নিও আম্মু, গয়নার দোকানে একা যাওয়া ঠিক না।"
"ঠিক আছে," আসমা বের হয়ে যাচ্ছিলেন।
"আম্মু "
"কি? "
" তোমার বউয়ের জন্য একটা নাকফুল দেখতো, " বলেই অরণ্য টেবিলের উপরে রাখা রিস্টওয়াচটা খুব ব্যাস্ত হয়ে খুঁজতে লাগল।
আসমা ছেলের এরকম আচরন দেখে হেসে ফেললেন। অরণ্য কি লজ্জা পাচ্ছে?
" আচ্ছা কিন্তু তোর বউ যদি হীরার নাকফুল পছন্দ করে বসে, তখন?"
" হীরে দেবার সামর্থ্য আমার নেই তা নয় তবে কষ্ট হবে। কিন্তু ওকে যতোদূর চিনেছি তাতে মনে হয়না সে ওরকম কিছু দাবী করবে। সে জন্যই তোমাকে বললাম। তুমি দেখে যেটা ভালো মনে হয় করবে।"
"আচ্ছা ঠিক আছে হীরের নাকফুলই দেব তোর বউকে," আসমা হেসে ফেললেন। ছেলে তার একেবারে ধরাশায়ী নিঝুমের প্রেমে। ভাল, ওদের ভালবাসাটা হাজার বছর বেঁচে থাক।
..............................................
দুপুরেও চুপচাপ বিছানায় শুয়ে ছিল নিঝুম। কিছুই ভাল লাগছে না। কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলে গেছে ওর। কোনো কিছু এভাবে বাবা মায়ের কাছে গোপন করা ওর জন্য এই প্রথম। এটাতো কোনো ছোটো খাটো বিষয় নয়। আল্লাহর কাছে বার বার প্রার্থনা করছে, কোনোভাবে যেন এই কথা আব্বু আম্মুর কানে না আসে। তাহলে ওনারা হয়ত জীবনে আর ওর মুখ দেখবেনা।
ব্রি......
ফোনটা বেজে উঠতেই, ভাইব্রেশনে রাখা মোবাইলটা ছুড়ে মারতে ইচ্ছে হলো নিঝুমের। আজ খুব অসহ্য লাগছে ওর। ফোনটা হাতে নিতেই দেখে অদীয়ার ফোন।
"হ্যালো.. "
"হ্যা, নিঝু..."
"বল শুনছি।"
"এক্ষুনি একবার হলে আসতে পারবি?"
"মানে? "
"মানে স্যাড নিউজ আছে একটা। আমাদের নওরিন আছে না? ও প্রেগন্যান্ট আর ওর বয়ফ্রেন্ড এখন ওর ফোন ধরছে না। তারমধ্যে ওর ফ্যামিলি ওর বিয়েও ঠিক করে ফেলেছে অন্য এক ছেলের সাথে। নওরিন পাগলের মতো করছে, তুই পারলে একবার আয়। "
নিঝুমের মনে হলো গোটা দুনিয়াটা ওর চোখের সামনে দুলছে। প্রায় চব্বিশ ঘন্টা পরে ওর হঠাৎ অরণ্যকে খুব দেখতে ইচ্ছে হলো। নওরিন আর রাসেলের সম্পর্কটা প্রায় তিন বছরের। ওরা বান্ধবীরা সবাই মোটামুটি ওদের দুজনের বিষয়টা জানে। সেই ছেলে এতদিন পর নওরিনকে ধোঁকা দিল! কাউকেই তো তাহলে বিশ্বাস করার উপায় নেই।
মোবাইলের স্ক্রীনটা আনলক করতেই কোনায় অনেকগুলো মিসডকল চোখে পড়ল নিঝুমের, সর্বনাশের কথা হলো তার বেশির ভাগই অরণ্য আর আসমা আন্টির।
হায় হায় আন্টির সাথে এগারটার দিকে ওর জুয়েলারীতে যাওয়ার কথা ছিল। এখন? ও তো একদমই ভুলে গিয়েছিল। নিঝুম লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে অরণ্যকেই এবার ফোন দিল।
"হ্যালো "
"আ.. মি, নিঝুম। "
"জি বলুন,আপনার কি সমস্যা?"
"জি! অরণ্য আমি নিঝুম বলছি।"
"আমি এখন ডিউটিতে আছি আর কোনো সমস্যা ছাড়া আমাদের কাছে কেউ এই সময়ে ফোন করে না।"
" আমি দুঃখিত, আসলে... আমি"
"আপনি?"
"আমি একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।"
"হমম।"
"তো আন্টির সাথে জুয়েলারিতে..."
"হমম"
"কি শুধু রোবটের মতো হমম হমম করছেন। "
"তো কি করব? "
"আমি বললাম না আমি দুঃখিত।"
"হ্যাঁ শুনলাম আপনি দুঃখিত, এখন কি করব?"
নিঝুম এবার ভারি অস্বস্তিতে পড়ল। এই লোক কি এখন শুধু এরকমই করবে?
"বলছি কি একটু আসতে পারবেন এখন বাসায়," মিনমিন করে কথাটা বলল নিঝুম। ওর বুক কাঁপছে তির তির করে। লোকটার সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেছে ও তখন।
"এখন! এখন ডিউটি রেখে কি করে আসব?"
"ওসব আমি জানিনা এখনই আসতে হবে," ফোনটা কানের সাথে জোরে চেপে ধরলো নিঝুম। অরণ্যর শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ গুলোও এখন ওর কাছে অনেক দামী।
" তাহলে এক কাজ করো। তুমি এখন আম্মুর সাথে জুয়েলারিতে যাও, কাজ শেষ করে আমাদের বাসায় চলে আসো। আমি বাসায় আসছি। "
"আপনার কি মাথা খারাপ... আমি আপনার বাসায় কি করে যাবো?"
"গাড়িতে, অয়ন আর আম্মু এসে তোমাকে নিয়ে যাবে। "
"সে হলো। কিন্তু আমি আন্টিকে কি করে বলব যে, আমি আপনার বাসায় যাবো। বেহায়া ভাববে না আমাকে?"
"মুখ দিয়ে বলবে, তা বেহায়া একটু ভাবতেই পারে। ভাবলে ভাববে..."
"ধ্যাত।"
নিঝুমের কথায় এবার হো হো করে হেসে ফেলল অরণ্য, "আচ্ছা আমি বলে দিচ্ছি, তা পুরোটা বলব না অর্ধেক?"
"মানে? "
"কিছু না তুমি তৈরি হও, আমি আসছি এক থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যে তোমাদের বাসায়। আর আম্মুর সাথে কাল অবশ্যই যেয়ো জুয়েলারিতে। না হলে আম্মু খুব কষ্ট পাবে৷ পরশু বোধহয় তোমাদের সবার দাওয়াত আমাদের বাসায়। "
"হমম... শুনেছি। "
ফোনটা কেটে দিয়ে চুপ করে কিছুক্ষণ বসে রইল নিঝুম। হঠাৎ কেন যেন অরণ্যর আমাদের আর তোমাদের কথাটায় খুব কষ্ট হলো ওর। এখনও কি আমাদের আর তোমাদের বলে কোন শব্দ আছে ওদের মধ্য? সব কি মিলেমিশে এক হয়ে যায়নি?
............................................
নওরিনকে, রাসেলের বাসায় নিয়ে গিয়ে ওর বাবা মায়ের সামনে সব স্বীকার করিয়ে কাজী ডেকে বিয়ের কাজ শেষ করতে করতে রাত প্রায় নয়টা বাজল ওদের। অদীয়া যখন বার বার অরণ্যকে ধন্যবাদ দিচ্ছিল, তখন চোখ দুটো ভিজে আসছিল নিঝুমের।
এই ভেবে কেন যেন খুব আনন্দ হচ্ছিল যে, এই লোকটা ওর, শুধুই ওর। কাল থেকে বুকের উপর চেপে বসা অশান্তির পাহাড়টা যে কখন আস্তে করে নতুন করে ধেয়ে আসা কালো মেঘ দেখে ভেসে গেছে, বুঝতে পারেনি নিঝুম। কিন্তু এতটা সময় অরণ্যকে খুব মনযোগ দিয়ে দেখেছে ও।
ওর এক কথায় এতটা করবে অরণ্য ভাবেনি নিঝুম। শুধুমাত্র ওর মন রক্ষা করতেই নওরিনের মতো অচেনা একটা মেয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সে। লোক চিনতে সামান্য হলেও ভুল করেছে নিঝুম, এটা ভেবে নিজেই লজ্জা পেল ও।
কাল অত বড় বিপদে না পড়লে নিশ্চই ওই কাজে রাজি হত না অরণ্য। মনে মনে অরণ্যকে ক্ষমা করে দিতে বাধ্য হলো নিঝুম, সত্যি সত্যি।
রাসেলকে ভাল করে বুঝিয়ে কি কি যেন বলল অরণ্য। রাসেল মাথা নিচু করে মাথা নাড়ল শুধু।
বাসায় আসতে আসতে দশটার বেশি বাজল নিঝুমের। অরণ্য ওর সঙ্গে আসতে চেয়েছিল, কিন্তু নিঝুম মানা করল।
"আপনি এখন বাসায় যান। অদীয়া মাকে ফোন করে সব বুঝিয়ে বলেছে, আম্মু জানে ব্যাপারটা। "
"ওকে.. বাই "
নিঝুম ভিতরে যেতেই, অরণ্য হাটতে শুরু করল। আজ গাড়ি নেই ওর সাথে।
................................................................
"নিঝুম, এগুলো কি শুনলাম? তোর বান্ধবীগুলোর সব কি অবস্থা? " ফুপির কথায় নিঝুমের অবস্থা বেহাল।
"ফুপি নওরিন খারাপ নয়, ও ছেলেটাকে সত্যি ভালোবাসত," নিঝুম বোঝানোর চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিল।
"মারে, সেজন্যই তো বিয়ের আগে ভালোবাসতেই নিষেধ করা হয়েছে। "
"ফুপি আমাকে কেন বলছ? আমি তো কিছু করিনি। "
"কিন্তু তোর বান্ধবী তো করেছে। তোর এরকম বান্ধবী আছে শুনলে ছেলেপক্ষ যদি পিছিয়ে যায়?"
নিঝুম আর কথা বাড়াল না। আর ছেলেপক্ষ!
ওর শরীরে আর কুলোচ্ছে না। ও কথা বলতে থাকলে ফুপি কথা বলতেই থাকবে। নওরিন যে ঠিক কাজ করেনি সেটা ওর চেয়ে আর ভাল এই মূহুর্তে কে জানে। কিন্তু ও তো আর নওরিনের অভিভাবক নয়।
উপরে এসে কাপড় পাল্টে চুল আচড়াতে বসল নিঝুম। সারাদিনের দৌড়াদৌড়িতে খুব খারাপ অবস্থা ওর চুলগুলোর।
নিচে নেমে আস্তে করে খেয়েই আবার উপরে আসল নিঝুম। অরণ্যকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য একটা ফোন করতে হবে। ঘরে ঢুকে হাসি হাসি মুখে দরজাটা লাগিয়ে দিতেই, ভয়ে হার্ট অ্যাটাক হচ্ছিল ওর। জানালার ফ্রেমে লম্বা করে একটা ভূত বসে আছে।
"আপনি... আপনি কখন এলেন?"
"এই তো মাত্র। যাওয়ার কিছু পাচ্ছিলাম না। তাই ভাবলাম বউ যখন আছে, শ্বশুরবাড়িতেই ফিরে যাই।"
"খুব খারাপ একটা স্বভাব আপনার, " নিঝুম এবার একটু হাসল। অরণ্যর মনে হলো বুক থেকে অপরাধের পাহাড় কিছুটা হালকা হলো ওর। কাল মেয়েটা ওর কারনে সারাদিন অনেক কষ্ট পেয়েছে।
"কি করব, বউ কে না দেখে থাকতে পারছিনা তো।"
বউ কথাটা এবার খুব আলোড়ন তুলল নিঝুমের বুকের ভেতরে। বউ... সত্যি বউ।
কথা বলতে বলতে অরণ্য কখন যে একদম ওর কাছে এসে দাঁড়িয়েছে, বোঝার আগেই ওর বুকের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল নিঝুম।
"অরণ্য, না এই.. প্লিজ ছাড়ুন।"
"ঝুম প্লিজ, আজকে জড়িয় ধরতে দাও। "
"কিন্তু কেউ যদি দেখে ফেলে? "
"তো দেখবে... আমি আমার বউকে আদর করলে যদি লোকের দেখতে ভাল লাগে, তো দেখবে। "
"অরণ্য না প্লিজ। "
অরন্য এবার সত্যি রাগল। ও যেয়ে নিঝুমের বিছানায় গিয়ে বসে পড়ল।
"ধন্যবাদ, " নিঝুম মিষ্টি করে হাসল।
"লাগবে না। জুতো মেরে এখন গরু দান। লাগবে না এমন ধন্যবাদ। এমন ধন্যবাদ আমি নেই না।"
"আমি কিন্তু সিরিয়াস ভাবেই আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। "
"কেন দিচ্ছ? আমি কি তোমার কাছে ভিক্ষা চেয়েছি? লাগবেনা তোমার ধন্যবাদ, আমি যাচ্ছি।"
অরণ্য উঠে জানালার কাছে যেতেই, নিঝুম ভয় পেল। সত্যিই ওই লোক চলে যাবে নাকি এত রাতে ? সত্যিই কি রাগ করল? গাড়ি তো নেই সাথে।
অরণ্য জানালার পাল্লা খুলে পা বের করতে যাবে তার আগেই নিঝুম যেয়ে ওকে পাশ থেকে জড়িয়ে ধরল।
"প্লিজ আমার ভুল হয়েছে, প্লিজ।"
"ছাড় আমাকে নিঝুম। আমি একটা খারাপ মানুষ তোমার কাছে, সুবিধাবাদী আর আমি এমন কেউ না তোমার যে তার জন্য তোমাকে কষ্ট পেতে হবে।"
"না প্লিজ, আমি সরি, অনেক গুলা সরি।"
"হাত ছাড় নিঝুম।"
"না আগে ঝুম বলো।"
" বললে কি দিবা?"
"এইত জড়ায় ধরছি। আবার এত কিছু কেন লাগবে?"
"ধরছ কেন? আমি পরপুরুষ ছাড়ো।"
"ইহ্ বললেই হলো..."
"কি বললেই হলো?"
"আপনি পরপুরুষ।"
"তা নয় তো কি? "
নিঝুম এবার খুব জোরে আকড়ে ধরল অরণ্যকে। চোখ বন্ধ করে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল," আমার বিয়ে করা বর।"
চলবে........
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro