Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

পর্ব-১৭

#মাতোয়ারা
#পর্ব_১৭

ইরিনের বাবা বিয়ে করতে আমার গাড়িতে রওনা হলেন। ইরিন বাবাকে তুলে দিয়ে বললো,
---আমি অন্য গাড়িতে আসছি।

ইরিনের ফুফু বেছে বেছে এসে আমার গাড়িতেই বসলেন। আমি দাঁত কিড়মিড় করে ইরিনকে বললাম,
---ইরিন, বরযাত্রী যেতে যেতে আমি যদি তোমার ফুফুর মাথা ফাটিয়ে দিই, তুমি কি খুব রাগ করবে?
ইরিন বিরক্ত চোখে তাঁকালো। 
---আপনার সবসময় শুধু ভায়োলেন্ট ভাবনা। ফুফু এতটাও খারাপ নয়।
---তোমার ফুফা আছে?
---না। সাতবছর হয় মারা গেছে। তখন থেকেই তো ফুফু একা। বেচারি বড়ো দু:খী।  
---কি করে মারা গেলো?
---ফুফার হার্টে সমস্যা ছিলো। হার্ট ফেইল করে মারা গেছেন।
---তোমরা ভালো করে তদন্ত করোনি তো! করলে জানতে তোমার ফুফু এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। হার্টটা উনার জন্যই ফেইল করে গেছে। 

ইরিন ফুফুকে কিছুক্ষণ অন্য গাড়িতে বসবার জন্য টানাটানি করলো। উনি কিছুতেই রাজি হলেন না। ইরিন অসহায় কণ্ঠে বললো,
---মারামারির মত কিছু বললে আমাকে ফোন করবেন।
---ফোন করার তো টাইম পাবো না। তারচেয়ে বরং তুমি আমার গাড়িতে এসো।
ইরিন অগত্যা বাধ্য হয়ে আমার পাশে বসলো। 
ইরিনের ফুফু গাড়িতে বসেই প্রথম যে কথাটা বললেন তা হলো,
---বাবা, তোমার কি মদ-গাঞ্জার অভ্যাস আছে? 
সিগারেট যে খাও সেটা আমি জানি। ঠোঁট দেখলেই বুঝা যায়। যারা রাজনীতি করে তারা শুনেছি বাবা খায়। বাবা বুঝলেনা ওই যে লাল ট্যাবলেট। ইয়াবা। বাবা তোমার কি পারমানেন্ট অভ্যাস? নাকি মাঝে মাঝে?
ইরিন অস্থির কণ্ঠে বললো,
---ফুফু, উনি সিগারেটও খান না। 
---তুই চুপ কর। ছাত্র রাজনীতি করা পোলাপান আমাকে চেনাতে আসবি না? আচ্ছা বাবা, তোমরা তো চাঁদাও পাও তাইনা? তা বাবা চাঁদা কি ইউনিভার্সিটির ছেলেদের থেকেই নাও, নাকি তুমি বাইরের এলাকা থেকেও নাও? চাঁদা আদায়ের সিস্টেমটা কি? মাসিক না সাপ্তাহিক?   
আমি ইরিনের দিকে তাঁকিয়ে চোখ রাঙালাম। 
ইরিন গিয়ারের উপর রাখা আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো। অনুনয়ের চোখে তাঁকালো। 
ইরিনের হাত ধরায় আমার মনে তখন অন্যরকম আনন্দ!
ইরিনের ফুফু কথা বলতেই থাকলেন।
---বাবা তোমাদের গ্রুপের নাম কি? আমাদের পাড়ায় আছে একদল। কেউ নতুন বাড়ি বানালেই চাঁদা দেওয়া লাগে। ইট বালি আনবার আগেই চাঁদা দেও। পাড়ায় তাঁর নাম কংক্রিট মতিন! ইট কংক্রিট করবার আগেই চাঁদা দিতে হয় কিনা। বাবা তোমার দলের নাম কি?

ইরিন এবার দু-হাতে আমার হাত চেপে ধরলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে বললো,
---ফুফু, তুমি জানো না। উনি চাঁদা নেওয়া তো অনেক দূর বরং নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করে রাজনীতি করেন।
---তোর জামাইর পকেটে টাকাটা আসে কোথা থেকে? শোন্, আমাদের পাশের বাসার এক ছেলে তোর জামাই’র মত ছাত্র রাজনীতি করে। এই চাঁদার টাকা দিয়েই নিজের ফ্ল্যাট বানিয়ে ফেলেছে। তোর জামাইকে দ্যাখ, বাড়ি গাড়ি কিছুই নেই। বাবা তুমি কিন্তু আমার কথায় মন খারাপ করো না। ইরুর বয়স কম; সে তো আর ভবিষ্যত বুঝবে না। সংসারের হাল ধরতে হবে তোমার। শোনো বাবা, তোমার এই টাকাপয়সার কিছু ইরুর নামেও রেখো। কখন তোমাকে পুলিশ এনকাউন্টার করে, তখন তো ইরুকেই পথে নামতে হবে। বাচ্চা-কাচ্চা  নিয়ে মেয়েটা তখন কোথায় যাবে?
ইরিন চাপা চিৎকারে বললো,
---ফুফু তোমার পায়ে ধরছি। আর একটা কথাও না। প্লিজ..

ইরিনের ফুফু কথা শুনলেন না। তাঁর কথার মেশিন চলতেই থাকলো।
---শুনেছি, বাবা জেল খাটলে ছেলেমেয়েরও সরকারি চাকরি হয়না। তার উপর তুমি তো দাগী আসামী। বাবা তোমার উপরে রেপকেইস টেইস নেই তো?

আমার মনে তখন অন্য চিন্তা। ইরিনের হাতটা ধরেই আমি তখন ঠিক করে ফেললাম, আজ রাতেই একটা অঘটন ঘটাবো আমি। এই ফুফুর ঝাল কথায় আমার মনের তীব্র ভালোবাসা নতুন গতি পেলো। মন বললো, ইরিনের বাবা নতুন বউ নিয়ে বাসরঘরে থাকবে আর আমি থাকবো উপোস? হবে না…কিছুতেই না।
এবার ইরিনের কাছে সত্যিই যাবো আমি। 
বিয়ে থেকে ফিরে, রাতে আমি লুঙ্গি পরে, গায়ে পারফিউম মেখে মহাপ্রস্তুতি নিয়ে ইরিনের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। প্ল্যান সাজালাম, প্রথমে ইনিয়েবিনিয়ে ভালোবাসার কথা বলবো। পজিটিভ সাইন পেলেই একটা গাঢ় চুমু খাবো ঠোঁটে। গাঢ় চুমু দিয়ে শুরু... ব্যস তারপর এই ঘরে শুধু বৃষ্টি হবে। ভালেবাসার বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিতে বন্যা হলে হোক্। সব ভেসে যাক্।ইরিনের  ফুফুও ভেসে যাক্। 

সব কাজ সামলে ইরিন ঘরে এলো যখন, তখন রাত দুটো বাজে। আমার মেজাজ তখন ১০০তে চড়ে আছে। এই তাঁর আসার সময় হলো? 
ইরিন ঘরে এসেই বললো,
---আপনি ঘুমোননি? 
---দেখতেই পাচ্ছো!
---আমি তো সব গুছিয়েই দিয়ে গেলাম। তাও জেগে কেন?
---এই ঘরে শোয়া যায়? মশা! প্যাঁনপ্যান করছেই।
---কেন? কয়েল জ্বালিয়ে দিয়ে গেলাম তো? এই যে.. জ্বলছে তো। আজকাল সব কয়েল বুঝলেন, দুই নম্বর। মশা যায় না। 
ইরিন খাটের নিচে থেকে কয়েলের প্লেট বের করে দেখালো।
---দেখুন কেমন জ্বলছে? 
আমি আমতা আমতা করলাম। 
---কয়েলে আমার এলার্জি। নাকে জ্বলে। নেভাও কয়েল, নেভাও।
ইরিন তাড়াতাড়ি কয়েল নেভালো।
---আগে বলবেন তো! আমি স্প্রে কিনতাম। আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি মশারি দিয়ে দিচ্ছি। নিন ঘুমিয়ে পড়ুন।
---দু-দুবার আধো আধো ঘুমে বাঁধা পড়লো তো।এখন ঘুমটা  চোখছাড়া হয়ে গেছে। ঘুম আসবে না!
---ঘুমের ঔষধ খাবেন? বাবার থেকে এনে দিই? 
---এতরাতে বাবাকে ডাকবে?
---বাবা তো জেগেই। কালকে বৌ-ভাত না? বাবুর্চিরা মুরগী টুরগী কাটছে। এসব দেখছেন। না দেখলে তো চলবে না। দেখা যাবে, অর্ধেক চুরি করে নিয়ে গেছে। মুরগীর পা তো আমার খুব ফেবারিট। বাবা সব সামলে রাখছেন।
---তোমার নতুন মা কই?
---মা’ও জেগে আছেন। বাবাকে একটু পরপর চা বানিয়ে দিতে হচ্ছে কিনা!
---কেন? তোমার ফুফু এত কথা বলতে পারে, আর চা বানাতে পারেনা?
ইরিন হুট করে আমার পা ধরে ফেললো।
---পায়ে ধরছি। আর দুটো দিন সহ্য করুন।
আমি মনে মনে বললাম, শুধু শুধু পায়ে কেনো ধরছো ইরিন? তুমি আমার বুকে একশোটা করে চাকু বসিয়ে দিলেও আনন্দে সহ্য করবো আমি।
কিন্তু মুখে বললাম,
---পা ধরা ভীষণ খারাপ জিনিস। আর কখনোই পায়ে ধরবে না।
---তাহলে অনুরোধটা করবো কি করে?      
আমি প্রসঙ্গ পাল্টাতে বললাম,
---তোমার জন্য কিছু কাপড় এনেছিলাম। পছন্দ হয়নি? 
---হয়েছে। 
---পরোনি কেন?
---পরবো..
---আজ পরতে পারতে। আমি দেখতাম হলো কিনা?
---সব ঢিলে হচ্ছে। সাইজে হয়নি।
---মানে? জামারও সাইজ আছে নাকি?
---হু.. সবকিছুতেই সাইজ আছে।
---তোমার কত?
ইরিন মশারি গুঁজে দিতে দিতে বললো,
---একটা মেয়েকে সাইজ জিজ্ঞেস করতে আপনার লজ্জা করে না।
আমি থতমত খেয়ে গেলাম।
ইরিন মশারি গুঁজে বিছানা থেকে নামতে যাবে, আমি ও'র হাত চেপে ধরলাম। এক নিঃশ্বাসে বললাম,
---নিচে শুতে হবে না!
---তাহলে শুবোটা কোথায়?
আমি চোখ বন্ধ করে বললাম,     
---বিছানায়! এই পাশে। 
ইরিন হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,
---এই বিছানা কিভাবে মটমট আওয়াজ করছে, দেখছেন? আমি সহ শুলে তো ভেঙে পড়বে নিশ্চিত। 
আমি এবার সত্যিই খেয়াল করলাম, বিছানায় মটমট আওয়াজ হচ্ছে। 
ইরিন বিছানা থেকে নেমে গেলো।
আমি ভাবলাম, বলবো, আমিও নিচে তোমার পাশে শুবো। তার আগেই ইরিন বললো,
---আপনি লুঙ্গি পরেই ঘুমোবেন নাকি?
---হু.. কেন? যা গরম লাগছে।
---শর্টস পরে শোন।
---কেন? লুঙ্গিতে কি সমস্যা?
---না মানে..৷ ঘুমোলে আপনার হুঁশ থাকে না। একবার বাসায় শুয়েছিলেন মনে নেই? সারারাতে দশবার মেঝে থেকে লুঙ্গি কুড়ালেন। আপনি বিছানায়, লুঙ্গি মেঝেতে।
আমি এতে ভীষণ আনন্দ অনুভব করতে লাগলাম। ইরিন তাহলে আমাকে দেখেছে। ও মাই গড। আমি গলায় গাম্ভীর্য এনে বললাম,  
---এত গরমে আমি শর্টস পরতে পারবো না। আমি লুঙ্গি পরেই ঘুমোবো। 
ইরিন উঠে গিয়ে দরজা ভালো করে আটকালো। জানালার ফাঁকে দেখলাম, কাপড় দিয়ে চাপা দিলো। আমি মনে মনে আনন্দে শিহরিত হতে থাকলাম। ইরিন তাহলে আমার ইশারা বুঝে ফেলেছে। ওহ.. আজ রাতে তাহলে সবটা হচ্ছেই!
আনন্দে আমার শরীরে লোম দাঁড়িয়ে গেলো।  
ইরিন একটা চাদর আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
---এটাও রাখুন। লুঙ্গি মেঝেতে পড়লে তখন এটা গায়ে দেবেন৷
---আমার কোনো চাদর লাগবে না ইরিন। তুমিই তো ঘরে।
---অবশ্যই লাগবে। ওই জানালায় হালকা ফাঁক আছে। আমি দেখলে তো কিছু সমস্যা নেই। অন্যরা দেখলে?
---দেখলে দেখুক। আমি চাদর নেবো না। 
---আপনার যা সুন্দরবনের জঙ্গল। যে দেখবে সেই ভয় পাবে। জীবনেও তো জঙ্গল ক্লিয়ার করেন না। এখন সবাইকে সেটা জানিয়ে দেবার কি আছে?
আমি প্রথমে ইরিনের কথাটা বুঝলাম না। যখন বুঝলাম, ধাপ করে উঠে বসলাম। ও মাই গড! এই ব্যাপারটা তো মাথায়ই আসেনি আমার। এই প্রস্তুতির কথা তো মাথায়ই আসেনি। লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছিলো আমার। ইরিনের কাছে কি কালারটাই না হয়ে আছি আমি! ইশশশশ… লুঙ্গির ভেতরে নিজের দিকে তাঁকিয়ে লজ্জায় আমার মনে হচ্ছিলো এই পৃথিবীতে এই আমাজন জঙ্গল নিয়ে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার আমার নেই। আমি অপরাধী। জঙ্গলধারী অপরাধী।                       

(চলবে)

#তৃধা_আনিকা

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro