Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

পর্ব-১৫

#মাতোয়ারা
#পর্ব_১৫

অনেক দোটানায় ভুগে নিজেকে শান্ত করতে ভাবলাম, ইরিনের সাথে সিরিয়াসলি কথা বলবো। বলবো, আমাদের দুজনেরই বিয়ে নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। আমরা কিভাবে সব সেটেল ডাউন করবো এর একটা গুড প্ল্যানিং দরকার। এভাবে তো চলতে পারে না। আর বিয়ে যেহেতু হয়ে গেছে আমাদের এই সম্পর্কটাকে আন্তরিকতার সাথে পালন করা উচিত। এট লিস্ট চেষ্টা করা উচিত। গিভ এ মিনিমাম চান্স টু আওয়ার রিলেশনশিপ। 
ইরিনের জন্য এই প্রথম আমি শপিং করলাম। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, জিন্স, টিশার্ট, জুতু, পারফিউম। এত এত শপিং করে বাড়ি ফিরে দেখি ইরিন তখনো ফেরেনি। মা'কে জিজ্ঞেস করলাম,
---ইরিন ফেরেনি মা?
---ফিরবে মানে? তোকে বলেনি?
ইরিনের বাবা এসেছিলেন। নিয়ে গেলেন।
---কখন আসবে?
---কয়েকদিন থাকবে। তোকেও তো যেতে বললো।
---কে বলেছে? 
---ইরিনের বাবা বললেন। তোর জন্য তো অনেকক্ষণ অপেক্ষাও করলেন। আমিই তাড়াহুড়ো করে পাঠালাম। মেয়েটা বিয়ের পর এই প্রথম বাবার বাড়ি বেড়াতে গেলো। আচ্ছা, তুই কোথায় ছিলি বলতো? আজ এত দেরি হলো কেন?

আমি মায়ের কথার জবাব না দিয়ে ঘরে চলে এলাম। ইরিন আমাকে একটা ফোন করলো না? জানিয়ে গেলে কি হতো? রাগে দুঃখে মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছিলো। ইরিনের জন্য কিনে আনা সমস্ত জিনিস পুড়িয়ে ফেলতে মন চাইছিলো। ইরিনের সত্যিই তাহলে এই সংসারে, এই জীবনে, এই বিয়েতে, এই আমাতে কোনো আগ্রহ নেই? নেই?

রাতে খাবার জন্য মা অনেক ডাকলেন। মনে মনে ভাবলাম, খাওয়া নয়। সব বন্ধ এখন থেকে। কিচ্ছু করবো না আমি। মহারাণী না আসা পর্যন্ত থেমে থাকবো আমি। গিয়েছে তো গিয়েছে! একটা ফোনের পর্যন্ত খবর নেই। ভাবা যায়?
ইরিন ফোন করলো রাত সাড়ে দশটা নাগাদ। আমি নিঃশ্বাস মুঠো করে ফোন ধরলাম।
---হ্যালো..
---হ্যালো… আপনি নাকি ভাত খাননি? কি হয়েছে? বাইরে থেকে খেয়ে এসেছেন? আন্টি ফোন করেছিলেন। আপনি খাননি বলে তিনি ভাবছেন আপনার মন খারাপ।
---আমার মন খারাপ হবে কেন? এমনিই খাইনি।
---আমিও জানি, আপনার যে মন ভালো। আপনি তো আজ একলা ঘরে রাজত্ব করবেন। শুনুন, আমার কিচ্ছুতে হাত দেবেন না। নীল ড্রয়ারটা তালা দিতে ভুলে গেছি। খবরদার ওটা একদম খুলবেন না। এখানে ওখানে আমার টাকা রাখা আছে। আমি আপনাকে সন্দেহ করছি না। শুধু যাতে আমার টাকাগুলো না দেখেন সেজন্য বলছি।
---আমি তোমার টাকা দেখবো না ইরিন।
---আমি জানি। সেই বিশ্বাস আমার আছে। বলার জন্য বলেছি। শুনুন, আমি চলে এসেছি বলে পড়াশোনা বন্ধ করবেন না। কাল যেটা বাকি ছিলো, সেটা কমপ্লিট করে ফেলবেন।
আমি মনে মনে বললাম, ইরিন তুমি যাবার আগে আমাকে বললে না কেন। না বলেই যেতে পারলে!
---হ্যালো.. কথা বলছেন না কেন? কি হলো? চুপ কেন?
---তুমি কবে আসবে ইরিন?
---দেখি, চলে আসবো। আচ্ছা, আমি আপনাকে একটা চিঠি লিখে রেখে এসেছি, পেয়েছেন? 
---কোথায়?
---আপনার ওয়ারড্রবের উপরে ফোনের চার্জার দিয়ে চাপা দেয়া। ওহ.. আপনি এখনো দেখেননি! আমি তো ভাবলাম ঘরে এসেই দেখবেন। রুমে এসে তো আপনি প্রথমে ফোনের চার্জারই খুঁজেন। তাই রেখেছি….
আমি চট করে ফোন ফেলে দিয়ে ইরিনের চিঠি খুললাম।

মহারাজ,
কুর্নিশ নেবেন। বাবা এসেছেন, আমাকে নিতে। বিশেষ কারণ। আপনাকে বলতে লজ্জা করছে। পরে অবশ্য জানবেন। দিন চারেক থাকতে হবে। বাবা আপনাকেও দাওয়াত করেছেন। তবে আসতে হবে না। আমি জানি আমাদের এখানে এলে আপনার ভালো লাগবে না। ঘিঞ্জি পাড়ায় বাড়ি। প্রথম বার যখন এলেন, দেখলেন না, গলিতে গাড়ি ঢোকে না। এইবার তো রিকশাও ঢুকবে না।এই চারদিন ঘরে মজা করে হাত-পা ছড়িয়ে নিজের মত থাকুন। যা ইচ্ছে করুন। সারারাত টিভি ছেড়ে রাখুন।
এনজয় ইওর ফ্রিডোম এলোন।
সিনসিয়ার্লি ইওরস
ইরিন।

বি:দ্র: আসবার কারণটা বলেই দিই, আমার বাবার বিয়ে।

চিঠি পড়ে আমার রাগ মুহূর্তেই মাটি হয়ে গেলো। ইরিনের কত দুঃখের দিন। ও'র বাবা বিয়ে করছে। আর আমি কিনা ওকে এতক্ষণ ধরে ভুল বুঝলাম। আমি তক্ষুনি গিয়ে মাকে ডেকে তুললাম,
---মা, আমি ইরিনদের ওখানে যাচ্ছি। চারদিন ফিরবো না।

ইরিনদের বাসায় পৌঁছালাম, রাত সাড়ে বারোটায়। দরজা খুললেন ইরিনের বাবা। তিনি বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বেশ ভালো ক্ষমতাই আমার আছে। আমি বিনীত ভঙ্গিতে বললাম,
---আংকেল আপনি আমাকে আসতে বলেছিলেন। আমি তো বাসায় ফিরলাম দেরি করে। ফিরতেই মা জোর করে পাঠিয়ে দিলেন। ইরিন কোথায়? ও'র কিছু জামাকাপড় ফেলে এসেছিলো।
---আসো বাবা। ভেতরে আসো….

ইরিন ঘুম ঘুম চোখে উঠে এলো। আমাকে দেখেই আওওওও করে একটা বিকট চিৎকার দিলো। আঙুল দাঁতে কামড়ে বললো,
---আপনি এত রাতে? থাকবেন? ও মাই গড! কেন এসেছেন বলুনতো? দিনে এসে একবার দেখা করে চলে গেলেই তো হতো?
আমি খুব ভাবসাব নিয়ে থাকলাম। বুঝালাম, তোমার বাবা আমাকে এক্ষুনি আসতে বলেছেন। তাই এসেছি এবং নিতান্ত অনিচ্ছায় এসেছি।  

ইরিনদের ছোট্টবাসা। দুটোমাত্র শোবার ঘর। ইরিন আমাকে নিয়ে ছটফট করতে লাগলো। কোথায় শুবেন কোথায় শুবেন বলে অস্থির করে ফেললো। তাঁর ভাব দেখে মনে হলো, আমি তাঁর মাথায় শুয়ে থাকবো বলে এসেছি। বসার ঘরের মেঝেটা ফাকা। আমার ভয় করতে লাগলো, ইরিন যদি আবার আমাকে মেঝেতে শুইয়ে দেয়?
---ওহ.. আবার খেয়েও আসেননি..! কি দিয়ে খাবেন বলুনতো? মাছ মাংস ছাড়া আপনি কি করে খাবেন?
---খেয়ে আসিনি বলে যে, তোমাদের এখানে খাবো সেটা কে বললো? আমি কিছু খাবো না।
---এক রাত উপোস দিলে এক চড়ুই গোশত কমে শরীরের। আর দশ চড়ুইর শক্তি।
---তোমায় এসব কে শেখায় বলোতো?
---শেখাতে হবে কেন? কোথাও নতুন কিছু শেখার থাকলে আমি নিজেই শিখে ফেলি। আসুন খাবেন।
ইরিন আমার জন্য খাবার বাড়লো।
ভাত, ডাল, ডিম ভাজি, বরবটি দিয়ে মাছের ঝোল। 
---আমি বেশ তৃপ্তি করে খেলাম। খাওয়ার পর ইরিন আরো এক দফা কোথায় ঘুমোবেন, কোথায় ঘুমোবেন বলে চেঁচালো। শেষমেশ নিজের ঘরেই আমার শোবার ব্যবস্থা করলো। ছোট্ট বিছানা, শুতে গিয়ে দেখা গেলো, আমার পা বেরিয়ে থাকছে। ইরিন মাথা চুলকে বললো,
---এই বিছানায় তো আমার জায়গা হয়। তাই বড় বিছানা নিইনি। কে জানতো এখন আমার বিয়ে হবে? আমি তো ভেবে রেখেছিলাম, বাড়ি টাড়ি বানিয়ে বড় বিছানা টিছানা  কিনে তারপর বিয়ে শাদি করবো। এখন কে জানতো বলুন তো, এখানেই আমার বর এসে থাকবে? বাবার বিছানাটা অবশ্য বড়। কিন্তু কাল বেচারার বিয়ে; আজ বিছানা ছাড়তে বলা কি ঠিক হবে?
---আমি এখানেই শুতে পারবো ইরিন। এত ওরিড হবে না।
ইরিন মাথা চুলকাতে চুলকাতে বুদ্ধি বের করলো,
---আপনি একটু কোণাকুণি হয়ে শুয়ে দেখুন তো, পা’টা আঁটে কিনা?
ইরিন আমার পা টেনে আমাকে কোণাকুণি করলো। আমি পা ভাঁজ করে শুলাম।
ইরিন নিজের বিছানা মেঝেতে পাতলো। আমার মনে তখন অন্য ইচ্ছে। ইরিন এই ছোট্ট বিছানায় আমার পাশে শুয়ে পড়ুক। আর পারছি না আমি। আর না, শরীর সত্যিই টগবগ করে ফুটছে আমার।নিঃশ্বাসে যেনো ধোঁয়া বেরোচ্ছে।  
ইরিন মেঝেতে শুয়েই প্রথম যে প্রশ্নটা করলো,
---আপনি কি কালও থাকবেন?
---হুঁ। মা বললেন, একেবারে বিয়ে শেষ করে তোমাকে নিয়ে যেতে। 
---বলেন কি?
ইরিন শোয়া থেকে উঠে বসলো।
---আমি তো বিয়ে শেষ করে যাবো।
আমি মন খারাপ করে বললাম, 
---কি আর করা! মায়ের কথা তো শুনতেই হবে।
---আপনার এই এক ঝামেলা। নিজের রোজগার পাতি নেই। মায়ের টাকায় চলছেন। নিন এখন শুনুন মায়ের কথা। আজ নিজে কিছু করতেন তাহলে একটা দাপট থাকতো। হাত পেতে টাকা নেন যখন কথা তো শুনতেই হবে। অলওয়েজ মানি টকস।
আমি মনে মনে বললাম, আবার কথার গাড়ি চালু হয়ে গেছে। এই প্রথমবার এসে শ্বশুরবাড়ি থাকছি আর আমার বউ কিনা আমি বে-রোজগেরে বলে বলে মাথা খেয়ে দিচ্ছে। প্রসঙ্গ বদলাতে অমি জিজ্ঞেস করলাম,
---তোমার বাবা হুট করে বিয়ে করছেন কেন?
---হুট করে নয়। আগেই কথা হয়েছিলো। আমার বিয়ের জন্য পিছিয়ে গেলো। আসলে বাবা আর আমি তো। ইন্টারমিডিয়েটে বাবার জন্য রান্না করেই তো আমি শেষ। মাঝখান থেকে এডমিশনে মেডিকেলের স্কোর এলো না। ঘরের কাজ করেই আমার সব গেলো। এখন ইউনিভার্সিটিতে উঠেও যদি এমন করতে হয়। তাই আমি বিয়ের বুদ্ধিটা বের করেছিলাম। বাবাও রাজি হয়ে গেলেন। আসলে পুরুষ মানুষ তো। নারী শরীর পাবে শুনলে মন আনচান করে। আমার নতুন মায়েরও আগে আরেকটা বিয়ে হয়েছে। একটা মেয়ে আছে, ক্লাস নাইনে পড়ে। যা সুন্দর দেখতে। ভীষণ প্রিটি। মিলি নাম।
আমি মনে মনে বললাম, তুমিও অনেক প্রিটি ইরিন।
---তবে বুঝলেন? পড়াশোনায় একদম ভালো না। জিজ্ঞেস করলাম, বাতাসের চাপ মাপার যন্ত্রের নাম কি, বলতে পারলো না। এটা কোনো কথা হলো? ক্লাস ফাইভের পড়া, তাও পারে না।তরমুজ ইংরেজী বলতে পারলো না! ভাবতে পারেন? আরে আমার থ্রি’র যে স্টুডেন্টটা আছে না, সেও পারে। 
---তুমি থাপ্পড় দাও নি কেন?
---প্রথম পরিচয়ে দিই কি করে? তবে পরে অবশ্যই দেবো। কাল এলে আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো। আপনি একটা ইন্টারভিউ নিলেই বুঝবেন। আমি তো শিওর এই মেয়ে নয়ের নামতাও পারে না।
---বিয়েতে তোমাদের আত্মীয়স্বজন আর কে আসবে?
---আমার ফুফু আসবেন, উনার লাফাঙ্গা ছেলেটাও আসবে। এখন আপনার মা না আসলেই হয়। আন্টি এলে বাবা বিয়ে করতে খুব লজ্জা পাবেন। মনে মনে আপনি যতই ভাবুন, আপনার মা একা হয়েও তো বিয়ে করলেন না। আমার বাবা কেন করছে? দেখুন আপনার মায়ের থেকে কিন্তু আমার বাবার বয়স কম। তাছাড়া আপনাদের বাড়ি ভর্তি কাজের লোক । আমার বাবার তো কেউ নেই।
---ইরিন আমি এরকম কখনোই বলবো না। ফুফুর ছেলেকে লাফাঙ্গা বললে কেন?
---এক নম্বরের শয়তান। গায়ে হাত দেওয়ার অভ্যাস আছে। মোবাইল ফোন ভর্তি নীল ছবি। কি অশ্লীলভাবে যে তাঁকায়। আরে বাবা চব্বিশঘণ্টা খারাপ জিনিস দেখলে তো মনে খারাপ ইচ্ছে হবেই তাই না?     
আমি পকেটের মাঝে আমার ফোন আঁকড়ে ধরলাম। ইরিন আমার ফোন দেখেনি তো কখনো? চট করে ফোনের ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট করে দিলাম। আমি ভেবেছিলাম রাতে ইরিনকে একটা চুমু টুমু খেয়ে নেবো। ইরিনের এই কথা শুনে ও'র দিকে তাঁকাতেও লজ্জা করছিলো।
ইরিন ননস্টপ কথা বলতেই থাকলো। আমি আড়চোখে দেখতে লাগলাম  শুধু ওকে...
মিষ্টি রঙের টিশার্ট গায়ে মিষ্টি একটা শরীর। আদুরে মুখের পুরোটাতেই কাছে যাবার গভীর ইশারা। আমার পৃথিবী ঝনঝন করে ভাঙছিলো। গাঢ় তাপে ভীষণভাবে আমি গলে যাচ্ছিলাম। শরীর পুড়ানো কামনা আর মন বিবশ করে দেওয়া ভালোবাসা নিয়ে আমি হারিয়ে যাচ্ছিলাম ইরিন নামক গভীর মোহের অতল থেকে আরো অতলে..

(চলবে)

#তৃধা_আনিকা

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro