Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

পাঠ-২ : হেনতেন

খুব সম্ভবত দুঃস্বপ্ন দেখছিলাম। তবে স্বপ্নটা স্থায়ী হলোনা আব্বার জন্য।

ঘুমের মাঝে মাথার মধ্যে আব্বার ভটাস করে বাড়ি খেয়ে ঘুম ভাঙল। বাড়ি খেয়েই তড়াক করে বিছানা ছেড়ে লাফিয়ে উঠে খুব স্বাভাবিকভাবেই হাঁটা দিলাম। যেন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম না। জাগনাই ছিলাম, এমনিতেই বিছানায় পিঠ লাগিয়ে ছিলাম।

কলের পাড়ে গিয়ে পেস্ট লাগিয়ে ব্রাশ চিবুচ্ছি। মুখে পেস্ট নাই, তার মানে মুখে ঢুকানোর আগেই পড়ে গেছে। মাথা বাড়ি খেয়ে এখনো বনবন করছে। কিন্তু ঘুম একদম ছুটে গিয়েছে। আব্বার বারি খেয়ে ঘুম ভাঙা কোনো নতুন ব্যাপার না।

ঘুমের মধ্যে আমাকে অনেক ডাকাডাকি করে। আমি ঘুমের ঘোরে উত্তর দিই। উঠে গিয়ে ব্রাশ করি। স্কুলের জন্য রেডি হই। হিসু করি। তারপর ভটাশ করে বাড়ি খেয়ে ঘুম থেকে উঠে দেখি, আমি আসলে ঘুম থেকে উঠিই নাই এতোক্ষন, তার উপর ঘুমের মধ্যে বিছানাতেই হিসু করে দিয়েছি। কি এক কেলেঙ্কারি!

ভাগ্য ভালো যে, স্কুলের বা পাড়ার কেউ এই ঘটনা জানেনা। জানলে আত্যহত্মা ছাড়া আর কোনো গতি থাকতোনা। বড়রা ভাবে ছোটদের কোনো টেনশন নাই, লাজ-লজ্জা বলে কিছু নাই। আসলে বড়দেরই কোনো লাজ-লজ্জা নাই। নইলে ছোটদের যখন তখন পিটাইতে পারে? বাড়িতে আত্বীয়-স্বজনদের সামনে নিজের ছেলের হিসু করার কাহিনী কেউ নির্দ্বিধায় বলতে পারে? বড় বড় আপুদের সামনে কলের নীচে জোর করে বসিয়ে লেংটো করে গোসল করাতে পারে?

আসলে বড়দেরই কোনো টেনশন নাই। তাদের তো বউ আছে। তাদের বাড়ির কাজ বউরা করে।
ছোটদের-তো বউও নাই। কেউ তো এসে তাদের বলবেনা, " ওগো লক্ষীটি দাও তোমার হোম-ওয়ার্কগুলি আমি করে দেই! " কিংবা যদি বলতো, " ওগো আমার সোয়ামী, দাও তো দেখি তোমার ফরিদ টাকলার নোটগুলি আমি তুলে দেই। "

আমি তখন সোহাগ করে বউ-এর কপালে পাপ্পি দিয়ে বলতাম, "আর কাসেম মোল্লার অংকগুলিও নোটখাতায় তুলি দিও বউ, আর সূত্র লিখতেও ভুলবানা, কেমন? "

আহরে কপাল! কোথায় থাকলো বউ-এর সোহাগ, উলটো আরো সকাল সকাল আব্বার ভটাস ভটাস বারি খেয়ে ঘুম ভাঙে। আর কানের নীচে টোঁ করে একটা... ওয়েট এ মিনিট!!

আব্বা কোত্থেকে আসলো?? আমার তো আব্বাই নাই। মানে- আব্বাতো মরছে আরো সাত বছর আগে। এতক্ষণ যা বললাম এগুলি তো বহু আগের কথা!

তাইলে আমাকে বাইড়াইলো কে???

আমার বুক ধ্বক করে উঠলো। দেরি না করে এক দৌড়ে সটাম করে ঘরে ঢুকলাম ঘটনা কি বোঝার জন্য। বুকের মধ্যে যেন কেউ হাতুরী দিয়ে পিটাচ্ছে ঢাকাস ঢাকাস। এসব কি হচ্ছে বাড়িতে!

ঢুকেই ভুল ভাঙল,
ওহ! তেমন কিছু না। ঘর থেকে চুপচাপ বেরিয়ে আসলাম মাথা নাড়তে নাড়তে। মিৎসেফের উপর থেকে মাথার উপর মুড়ির টিন পড়ছে। তাইতো বলি, মাথা ভোঁ-ভোঁ করতেছে কেন এতো! খাটের পাশে মিৎসেফের উপর মুড়ির টিন রাখা ছিলো।

এটাও অবশ্য নতুন না। মিৎসেফের একটা পা নাই বলে খাটের সাথে ঠেক দিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে। আমি পা দিয়ে হালকা খাট লাড়ালাড়ি করলে ঢ্যাব ঢ্যাব করে উপর থেকে বোতল পড়া শুরু করে। ডেকচি পড়ে, বোয়ম পড়ে, বাটি পড়ে, চামুচও পড়ে। চামুচ এর বাড়ি অবশ্য কম লাগে।

তবে চোখের বাত্তির উপর পড়লে আর নিস্তার নাই। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখের বত্তি ফিউজ হয়ে যায়। আজকে ডাইরেক্ট মুড়ির টিন পড়ছে। ভালো, উন্নতি হয়েছে।

এতোকিছু মিৎসেফের উপর রাখার কি দরকার, এটা কে বোঝাবে আম্মাকে? কালকে ঢেড়স পড়ছে, পরেরদিন লাউ পড়বে, পারলে কোনো একদিন আমার আম্মাই পড়বে উপর থেকে।

বই, ব্যাগ নিয়ে ঘর থেকে বের হতেই বুলুর সাথে দেখা হলো। কি একটা মাছের কাঁটা নিয়ে খেলছিলো। আমাকে দেখে কাঁটার উপর আস্তে করে বসে পড়লো।

আমার তো মেজাজ পুরো চটে গেলো। আমি কি ওর মাছের কাঁটা চুঁড়ি করে নিয়ে যাবো? আমার খানাপিনার অভাব পড়ছে? ওর দিকে খিটমিটে একটা লুক দিয়ে বের হয়ে পড়লাম,
" রাখ! রাখ! পাছার তলে লুকায়া রাখ। অবসর পাইলে পাছা চুলকাইস ঐটা দিয়ে। "

স্কুলে যাওয়ার পথে পকেট থেকে সানগ্লাসটা পড়ে নিলাম। ছোটো হওয়ায় চোখে সেটা টানটান হয়ে থাকলো। হাতে পড়লাম ঘড়ি। এগুলা আব্বা কিনে দিয়েছিল সাত বছর আগে। বোঝাই যাচ্ছে কিরকম পুরোনো। ঘড়ির কোনো চাবি নাই। চলে না, আর মিনিটের কাঁটাই নাই। কেউ টাইম জিজ্ঞেস করলে ঘড়ি দেখার ভান করে আন্দাজে বলে দেই।

আমি আবার ভালো আন্দাজ করতে পারি। তবে আন্দাজ একটাও লাগেনা। তো কি হয়েছে, কেউ তো আর জনে জনে জিজ্ঞেস করে কনফার্ম হতে যাচ্ছে না।

চশমা সাইজে ছোটো বলে কেউ কেউ হাসাহাসি করে। টেপা গতকাল বলছে আমার চশ্মা দেখে নাকি মনে হয়, কেউ একজন আমার চোখের উপর দুইপা ফাঁক করে বসে আছে। বলেই সে কি হাসি। আমি কিছু উত্তর খুঁজে পেলাম না। মুখ চোখ বিকৃত করে বিতৃষ্ণা নিয়ে তাকিয়ে থাকলাম! শালার বেটা শালা!

এগুলি পড়ার কারণ একটাই। আমাদের ক্লাসে ঢাকার একটা মেয়ে ভর্তি হয়েছে। ক্লাসের সব মেয়েদের চেয়ে ও অস্বাভাবিক রকম স্মার্ট। ব্লু-কালারের লেন্স পড়ে। ওর উপর ক্লাসের সব ছেলে ফিদা। ইয়ে- আমারও একটু আধটু নজর আছে ওর উপর অবশ্য। আরে আমি তো দূরে থাকুক, টেপা পর্যন্ত পাগল ওর জন্য।
তাই আমিও সানগ্লাস পড়ে ক্লাসে যাই। স্যার আসার আগেই আবার পকেটে ঢুকিয়ে রাখি।

আশা করে আছি ক্লাসে ঢুকতেই দেখা হবে মিতুর সাথে। প্রথম দর্শন হবে সেই অপরূপা রমনীর সঙ্গে। সাথে একটা ধাক্কা লাগলে আরো রোমান্টিক হবে।

কিন্তু এমনই কপাল আমার, দেখা হলো টেপার সাথে। আমাকে দেখেই ভ্রু নাচিয়ে মুখে লোল টেনে জয়ধ্বনি দিলো, " আইদ্যাখ! চ্যুসমা আলা আইছে! আইদ্যাখ্রে ভায়া, চ্যুসমাটা খালি দেখ একবার!"

ক্লাসে হাসির রোল পড়ে গেলো। শুধু মিতু হাসির মত মুখ করে ঘুরে তাকালো। কিন্তু হাসলো না। আমি তবু গজগজ করতে করতে পিছনের সিটে এক কোণে বসে পড়লাম। এমন দিন আসছে, শালার টেপা পর্যন্ত টিটকারি মারে। খালি মিতুর জন্য চুপ করে ভদ্র সেজে থাকি।

নইলে ওর গিঁড়ার মাঝের টিংগেরীর হাড্ডি হ্যাচকা টান দিয়ে ছুটায়ে আনতাম। আমাকে এখনো চিনে নাই।

পিছনে এসে সিটে বসা মাত্রই স্যার ঢুকলেন ক্লাসে। জানালা খোলা আমার পাশে। বৃষ্টি বৃষ্টি একধরণের আবহাওয়া। অদ্ভুত একটা মাতাল করা অন্ধকার আভা ছড়িয়ে পড়ছে সারা ক্লাসে। আর একটুখানি আলো আমার সারা গায়।

স্যার বোর্ডে কি যেন লিখতে শুরু করলেন।

আর আমি....
আমি আস্তে করে সানগ্লাসটা পড়ে সিটের উপর হামলে গিয়ে হাতে ভর দিয়ে মিতুর দিকে তাকিয়ে আছি। আহা কি মোহনীয় সৌন্দর্য তাহার যেন। তার খোলা চুলগুলি মুখের উপর খেলা করছিলো ঢেউয়ের মত এঁকে বেঁকে। কি অপরুপ, এক স্বর্গের অপ্সরী যেন।

আমি যেন কল্পনার সাগরে ভেসে গেলাম। বলতে দ্বীধা নেই, খুব রোমান্টিক রোমান্টিক কল্পনা আসছিলো মাথার ভিতর। যেমন, আমি বিছানায় বসে আছি হেলান দিয়ে। আর মিতু আমার খাতায় ফরিদ টাকলার অংক তুলে দিচ্ছে।

এভাবে কতক্ষন চললো কে জানে। হঠাৎ কোনো অজানা কারণে মিতু পিছনে ফিরে তাকালো একবার। ঘুরে আমার দিকে তাকাতেই বুকের ভিতর হুড়ুম করে একটা বজ্রপাত হলো। কেউ যদি অন্যকে নিয়ে কল্পনা করে, তাহলে সেই অন্যজন কি তা টের পায়? আমার মুখ অটোমেটিক হা হয়ে গেলো! গালের চামড়ায় টান পড়তেই টান টান হয়ে থাকা চশমা আমার ভটাস করে বাস্ট হয়ে গেলো। 

মিতু মৃদু ঠোঁট ফাঁকা করে বড় বড় চোখে একমুহূর্ত তাকিয়ে থাকলো। তারপর গগনবিদারী অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। সে হাসি আর কিছুতেই থামেনা। আমি তার হাসির সে মোহনীয়তা দেখে একেবারে অভিভূত হয়ে গেলাম। কি অদ্ভুত কি অদ্ভুত।

মিতুর হাসি দেখে ক্লাসের সবাই পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো। দেখে অবশ্য কেউ কিছুই বুঝলোনা। বুঝলো শুধু টেপা। আমার চশমার এক নাড়া এখনো কানের কাছে ঝুলছে। তার বুঝার আর কিছু বাকি নাই। সে মিতুর চেয়ে আরো বিকট চিৎকার দিয়ে হাসি শুরু করলো। সেই হাসি যে কি বিধঘুটে তা আর বলার না।

ইচ্ছে হলো টিপ দিয়া টেপার পেটের গু সব বাহির করে দেই। কিন্তু চমৎকার একটা আবহাওয়া আর মিতুর সাথে চোখাচোখি হওয়ার ঘটনা চিন্তা করে সব ক্ষমা করে দিলাম।
:

Next page>>>>>

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro