Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

#২. "রাতে ভাত খাবো না"

“ওরে বড়লোকের বেটি! সারা দিন তো কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকো, এখন একটু দয়া করো! উঠে ডিনার করে আমাকে উদ্ধার করো!” মায়ের গলা সবসময় যেমন কর্কশ লাগে, এবার মনে হলো তার চেয়ে তিনগুন বেশি।

“রাতে ভাত খাবো না,” আমার শীতল, সহজ উত্তরে মা ভীষণ চটে গেলেন।

“কি বললি তুই? নাটক করা হচ্ছে আমার সাথে? প্রতিদিন এমন খাওয়া নিয়ে ঢং না করলে হয় না বুঝি তোর? তোর আর এই বাড়িতে খেতে হবে না! কাল থেকে আমি আর ভাতই রাধঁবো না! তোর রান্না তুই নিজে করে খাবি, কু*!”

এই বলে মা গজরাতে গজরাতে আমার অন্ধকারাচ্ছন্ন রুম ত্যাগ করলেন।

আমি কেবল ভেজা বালিশে মুখ গুজে আরো চোখের জল ঝরালাম। 

মায়ের দূরাগত বিলাপ ঠিকই আমার কানে বাজতে থাকে, “কি করে এমন একটা অমানুষ আমার পেট থেকে জন্ম নিলো একমাত্র আল্লাহ্ জানেন!”

মনে হচ্ছে মাথা কেমন অসহ্য যন্ত্রনায় ফেটে যাচ্ছে।

এমন সময়, দরজায় এক ছায়ামূর্তির আগমন। আমি দ্রুত চোখের জল মুছে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করি। কোনমতে ভেজা বালিশটাকে দূরে সরিয়ে রাখি।

ওপাশ ফিরে বুঝিয়ে দিলাম এই যাত্রায় আমাকে আর ভাত খাওয়াতে পারবে না।

শুকনো কুশনে চোখ বোজার পর এক আদর মাখা কোমল পরশ পেলাম আমার চুলে।

"খাবো না," আমি আগের একই ভঙ্গিতে জবাব দিলাম, শুধু এইবার একটু ঊচ্চস্বরে।

"এই তোমাদের জেনারেশনের একটা কমন প্রবলেম। কোন কিছু হলে তোমরা খাবারের সাথে রাগ দেখাও। খাবারের সাথে কখনো রাগ দেখাতে হয় না। শরীর হচ্ছে একটা মেশিন; মেশিন যেমন তেল ছাড়া চলে না  অমনি শরীরও খাবার ছাড়া চলে না," আমি এপাশে ফিরতে না ফিরতেই বাবা এতগুলা কথা বলে ফেললেন।

"ইচ্ছা করছে না, বাবা," আমি নরম স্বরে জবাব দিলাম।

"ইচ্ছা না করলেও খেতে হবে। না খেলে তো মাথা ঠিক থাকবে না। আর তোমাদের যা কঠিন সিলেবাস, খাবার তো খেতেই হবে। পুঁইশাক দিয়ে চিংড়ি আর কাঁচকি মাছের চ্চ্চড়ি হয়েছে। তাও কি খাবে না, নাকি?"

হঠাৎ কেমন সব আবার ভালো লাগতে লাগলো। মনে হলো খিদেয় পেট জ্বলে যাচ্ছে।

"তুমি যাও, আমি আসছি, বাবা।"

"আচ্ছা।"

আমি রুমের লাইট না জ্বালিয়ে একবারে  বাথরুমের লাইট জ্বালালাম।

আয়নায় দেখলাম নিজেকে। নাকে হাল্কা লালচে ভাব। ক্লান্ত চোখ। কেমন ঘুম ঘুম লাগছে। বাদামি ব‍্যাঙস ঘামে ভেজা। খানিকক্ষণ আগেও কেমন একটা অস্থির অস্থির বোধ করছিলাম; এখন আর তেমনটা নেই।

মনে মনে ভাবলাম, আঠারো বছরের  নিজেকেই ঠিক মতো চিনতে পারছি না, সেই আমি আবার কি করে একজনের সাথে তিন বছর কাটিয়ে তাকে চিনবো?

"রাইমা, খাবার যে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে!"

"আসছি, বাবা।"

ঠান্ডা পানি দিয়ে বেশ খানিকক্ষণ মুখ ধুয়ে খাওয়ার টেবিলে গেলাম। বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, মনে আমি এখন একটু তৃপ্তি পাচ্ছি।

মা এখনো চটে আছেন। কিছু বললেন না আমাকে। বাবা বেছে বেছে বড় চিংড়িগুলো আমার পাতে দিলেন। আমিও আর বাড়তি কিছু বললাম না।

চিংড়ি মুখে দেওয়ার পরই মনে হলো আমি যেন নিজের প্রাণ ফিরে পেলাম। পরক্ষণেই বাবা আর মায়ের দিকে তাকাতেই মনে পড়লো আজ বড় মূল্যবান এক জিনিস হারিয়ে আমি বাড়ি ফিরেছি।

আমার মায়ের গলার 'আল্লাহ' লেখা লকেটটা চিকচিক করছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা থেকে কেনা ঝুলন্ত টার্কিশ লাইটের বাহারি আলোতে। বাবা চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছেন। তার "ঢাকা ইউনিভার্সিটি'৮৬" টি-শার্টটা  তাকে বেশ মানিয়েছে।

"ডাল আছে, দিবো?" মা খুব মিষ্টি করে জিজ্ঞেস করলেন।

আমি এর উত্তর শোনার আগেই নিজের ভাবনায় ডুব দিই। আমিও তো চেয়েছিলাম আমারও এমন হবে... কই, তা তো আর হলো না। বাবা-মায়ের তো এর‍্যান্জ্ড ম‍্যারেজ, আজ এতো বছর পরেও তাদের ভালোবাসা কেমন অটুট রয়েছে। আমি  ভাবতাম, যারা প্রেম করে একে অপরকে  জীবনসঙ্গী করার প্রতিজ্ঞা করে, তাদের ভালোবাসা কোনদিনও কমে না। তাহলে  আমার সাথে এ কি হলো?

"আজকে ক্লাসে যেতে পেরেছিলে ঠিক মতো?" বাবা আমার ভাবনার জাল ভেদ করলেন।

"হ‍্যাঁ," আমি চ্চ্চড়ি প্লেটে নিতে নিতে উত্তর দিই।"

"অনিক, শুভ্র, নিকিতা ওরা ভালো আছে?" বাবা পাল্টা প্রশ্ন করলেন।

এতো মানুষ থাকতে তুমি অনিকের কথা কেন জানতে চাইছো, বাবা? আমি আবারো একটু যন্ত্রনা অনুভব করি।

"সবাই ভালোই আছে," আমি ঢোক গিলি একটা, "অনিক আর আমার ক্লাসেস এক সাথেই, শুভ্র আর নিকিতারা তো আমাদের সাথে এক্সাম দিচ্ছে না, তাই ওদের ক্লাসেস আলাদা। ওদের আর বাকি কয়েকজনের সাথে তাই খুব একটা দেখা হয় না। চ‍্যাটস‍্ হয়," আমি ভাত-চ্চ্চড়ি‌ মুখে নিয়েই বলি।

"ওহ। তা ওদের সাথে যোগাযোগ রেখো। না হলে একটা সময় এমন আসবে যখন ওদের থেকে এমনভাবে বিছিন্ন হয়ে যাবে যে আর চাইলেও হয়তো ওদের মতো এতো ভালো বন্ধু পাবে না।"

আমি ভাত মাখানো প্লেটের দিকে তাকিয়ে  কেবল উত্তর দিই, "হুম!"

এমন সময়ই মা চেঁচিয়ে উঠলেন, "তা ভাত খাবি না, ভাত খাবি না যে করলি, এতোগুলো ভাত কি এখন ভূতে এসে খেয়ে গেলো?"

বাবা হো হো করে হেসে উড়িয়ে দিলেন।

আমি অপরাধীর মতো তাদের দুইজনের  দিকে চেয়ে রইলাম।

তোমরা তো সবসময় আমাকে আগলে রাখার জন্য থাকবে না। তখন আমি কিভাবে থাকবো, বাবা?

*****

লেখিকার কথা

এই চ‍্যাপটারে চেষ্টা করেছি টিপিক্যাল ফ‍্যামিলি রিলেশনশিপ ফুটিয়ে তুলতে। কোন পার্টটি আপনারা রিলেট করতে পেরেছেন কমেন্টে জানাবেন।

আশা করছি এই চ‍্যাপটারের মতোই আগামী চ‍্যাপটারে আমার এই পাঠকদের আমি পাশে পাবো।

ধন্যবাদ।

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro