Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

"তুই এখন যা... সুমো.... আমার আর কথা বলতে ভালো লাগছে না।" শ্রাবণ ভারী স্বরে বললো, ওর আসলেই মেজাজ চরম খারাপ হয়ে আছে।

"কিন্তু তুমি এতো ভুল ভাল বকলে আমি যাই কি করে বলতো , কি সব উল্টাপাল্টা বকছো তখন থেকে.. সেদিন বললে তিনটে পুরুষ আবার আজই বলছো চারটে। তুমি কি তাহলে সেদিন ভুল বলেছিলে?" সুমনের চোখে মুখে বিস্ময়।

" হু ভুল বলেছি.. আরও অনেক পুরুষ আছে। শুনবি?"

সুমন কি বলবে বুঝতে না পেরে বোকার মতো হা করে তাকিয়ে রইলো। শ্রাবণদার অনেক মন খারাপ সেটা সুমন দেখেই বুঝতে পারেছে কিন্তু শ্রাবনদার আজ নিশ্চিত মাথা খারাপ হয়েছে। না হলে ওকে তেমন বকছেও না আবার কেমন যেন একটা খাপছাড়া আচরনও করছে, যেন কিছুতেই কিছু যায় আসেনা। সুমনের কেমন যেন ভয় ভয়ই লাগছিলো।

" শোন মহাপুরুষের নাম তো শুনেছিস নাকি। সাথে সুপুরুষ,কাপুরুষ, কালপুরুষ..."

"অ্যা....অ্যাত্তোগুলো ?" সুমনের বিস্ময়ের সীমা নেই। এতো পুরুষ হলে তো রীতিমতো আতঙ্কের বিষয়। এতো সংজ্ঞা মনে রাখা তো ওর কম্ম নয়।

"হু " শ্রাবণ অনমনীয় ভঙ্গিতে বিদঘুটে শব্দটা করলো। দুপুর থেকে ওর ভিতরে পরপুরুষ  শব্দটা আসলে ভীষন পাকাচ্ছে।

"তাহলে তুমি যে সেদিন বললে, " সুমন কাঁদো কাঁদো সুরে বললো।

"যা বলেছি সব ভুলে যা সুমো, আমার কোন কিছুই তোর মনে রাখার দরকার নেই।"

শ্রাবণের ভীষন অভিমান হচ্ছে কিন্তু সেটা কার উপরে সেটা ও নিজেও স্পষ্ট নয়। মা যা বলেছে সেটা শুনতে বাজে লাগলেও একেবারে ফেলনা নয়। সুমো ওর যতোই আদরের পুতুল হোক, একটা সীমানার বাইরে সুমোর উপর ওর অধিকার নেই। আর এটাই শ্রাবণকে বেশী কষ্ট দিচ্ছে।

সুমন স্থির হয়ে দাড়িয়ে ছিল। শ্রাবণের কথাগুলো যেন পর্বতমালার মতোই অনড়। কোন ভাবেই তার বিপরীত হওয়ার কোন অবকাশ নেই।

কিন্তু কথাগুলো শুনে সুমনের ভীষন মন কাঁদছিল। শ্রাবনদা ওকে বার বার বের হয়ে যেতে বলছে কেন ঘর থেকে...  তারচেয়ে বরং ওকে মারুক, সেটা এর চেয়ে ভালো হবে।

"শ্রাবণদা তোমার কি হয়েছে... তুমি এমন কেন করছো? আমি তো বললাম আমি এখন থেকে খুব মনযোগ দিয়ে পড়বো,"সুমন নিজের তরফ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলো। 

"খুব ভাল কথা, এখন থেকে সেটাই মনযোগ দিয়ে করিস আর আমি মার কাছে টাকা দিয়ে দিব। পারলে সমীর মামার সাথে গিয়ে পছন্দমতো কোচিং-এ ভর্তি হয়ে যাস।"

সুমন ওখানে দাড়িয়ে আর কোন কথাই বলার সাহস পায়নি তখন। নিশ্চই শ্রাবণদা ওর পড়া না পারার জন্যই এতো রাগ হয়েছে। আজ তাই ওই অসহ্য দুটোকে একেবারে নাক মুখ চেপে ধরে মুখস্থ করেছে সুমন। শ্রাবনদা বাড়ি ফিরলে আগে দৌড়ে গিয়ে পড়াটা দিয়ে আসবে ও।

"দি মা ডাকছে " প্রীতির কথায় মনে পড়লো মামী ডাকছিলো... লতি বেছে দিতে হবে।

"হ্যারে প্রীতি আমি যাচ্ছি...  তুই আজ টাইমে  ওষুধ খেয়েছিস? "

"হ্যা দি।"

"ব্যাথার ওষুধ?"

"তাও খেয়েছি।"

"ডাব্বু কোথায় রে প্রীতি? "

"মনে হয় ঘুড়ি উড়াচ্ছে পাশের বাড়ির পল্টুর সাথে।"

"ডাব্বু আসলে বলবি এই টেবিলের নিচের ড্রয়ারে ওর জন্য দুটো টফি রাখা আছে। " সুমন ওর বইখাতাগুলো সব একসাথে করলো।

"ওর দাঁতে কিন্তু পোকা সুমনদি।"

"হোক... তারপরও ও ছোট। ওকে না দিয়ে খাই

"আর আমি বুঝি ছোটনা?"

"আচ্ছা বাবা আচ্ছা খুকুমনি তুইও একটা  নিস।"

"থ্যাংক ইউ...."

"প্রীতি আমার একটা কাজ করে দিবি। "

"দেব কিন্তু তার আগে কাজটা কি সেটাতো বলো।"

"বলছি.... তুই এক ফাঁকে একটু চারুদের বাড়ি যেতে পারবি? "

"চারুদিদের বাড়ি...  খুব পারবো। ওদের বাড়ির পেয়ারাগুলো না খুব মজা সুমনদি, আমায় দুটো দিতে বলবে? "

"পেটুক কোথাকার...

আচ্ছা আমি চারুকে বলে দিবখন, তোকে দুটো পেয়ারা দিতে কিন্তু তুই যেনো ওবাড়ি যেতে ভুলিসনা, আমি ততক্ষনে শ্রাবনদাকে পড়াটা দিয়ে আসি গিয়ে।"

প্রীতি ড্রয়ার থেকে একটা টফি চট করে নিয়ে মুখে পুরলো। বিদেশী এই টফিগুলো ওর খুব পছন্দের। বাবাও মাঝে মাঝে গলির মোড় থেকে টফি কিনে আনে কিন্তু ওগুলো সবই প্রায় ডালডা দিয়ে তৈরী, শুধু তালুতে আটকায়। কিন্তু  সুমনদি কে শ্রাবণদা সব ভালো দোকান থেকে চকলেট কিনে দেয়, মোড়ের ওই সস্তার দোকানগুলোতে শ্রাবনদা ঢোকেই না।

সুমন বইপত্র নিয়ে সোজা শ্রাবণের ঘরে হাজির হলো। আজ এই ব্যাকরনের বাচ্চাটাকে যদি ও গিলে না খায় তো ওর নাম সুমন না। বিছানার উপর বই খুলে পড়তে বসে গেলো সুমন।

................

"কাউকে খুঁজছো?"

ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকাতেই শ্রাবণের দৃষ্টিটা একটু বেসামাল হলো। আরে এতো লাবণ্য... ভারী সুন্দর কায়দায় শাড়ি পড়েছে তো। অবশ্য মেয়েটা এমনিতেই সুন্দর। শ্রাবণের দাম্ভিক ঠোঁটের কোনায় মৃদু হাসি ফুটে উঠলো।

"বাব্বাহ তুমি হাসতেও জানো?"

"ওয়েল এতো সরাসরি আক্রমন হয়ে গেলো একদম... তবে অপ্রয়োজনীয় জিনিস আমি আসলে এড়াতে ভালোবাসি।"

"তাই বুঝি? "

"হুমম।"

"পরিচিত মানুষকে দেখে তাহলে দুটো কথা বলা তোমার মতে অপ্রয়োজনীয়," কথাটা প্রয়োজনের চাইতে একটু ঠেস দিয়েই বললো লাবণ্য। ভিতরে ভিতরে আসলে বেশ চটে আছে ও। এই ছেলে কি আসলেই ওর মনোভাব বোঝেনা না নাকি ওকে আরও বাজিয়ে দেখতে চায়, নাকি লাবণ্যকেই ওর পছন্দ নয়। এতোগুলো বছর কেবল দূর থেকে দেখেই গেলো। অথচ লাবণ্য মনে মনে আশা করেছিলো শ্রাবণ নিজে থেকেই ওকে প্রস্তাব দিবে, প্রেমের না হোক বিয়ের জন্য অন্তত। কলেজে সুন্দরী হিসেবে যথেষ্ট নাম ডাক ছিল ওর। কত ছেলে পিছনে লাগলো অথচ লাবণ্য যার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করলো সে একবারের জন্যও ফিরে তাকায় না।

না পেরে সেদিন আক্ষেপ করেই মৌমিতাকে নিজের ফিলিংসটা একেবারে খুলে বলেছে লাবণ্য। মৌমিতাই বললো যে করে হোক ওদের কথা বলার একটা ব্যাবস্থা সে করবে। মৌমিতা কথা রেখেছে, শ্রাবণকে ধরে নিয়ে এসেছে কিন্তু লাবণ্য কিছুতেই শ্রাবণকে ধরতে পারছেনা। সেই গেট দিয়ে ঢোকার সময় এক ঝলক দেখেছে শ্রাবণকে, তারপর যেন হাওয়া। আজ লাবণ্য মনে মনে ঠিক করেছে যে শ্রাবণের জন্য ও আর অপেক্ষা করবেনা, নিজেই শ্রাবণকে সরাসরি নিজের মনের অনুভূতিটুকু জানাবে। এই ছেলে গভীর জলের মাছ না একেবারে হাবা গঙ্গারাম সেটা আজ জানতেই হবে লাবণ্যকে।

" না, না তা কেন হবে। আমি আসলে অতটা ভেবে বলিনি,"শ্রাবণ একটু অস্বস্তিতে পড়ে গেল। লাবণ্য হঠাৎ নিজে যেচে এতো কথা বলছে কেন ওর সাথে ? ওদের ক্লাসের নাক উঁচুর তকমাটা সব সময় এই মেয়ে পেয়ে এসেছে। কেবল মৌমিতার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী বলেই মাঝে মাঝে সামনা সামনি হলে কুশল বিনিময় হতো, তাও সেটা সবসময় নয়। মাঝে মাঝেই এমন হয়েছে যে শ্রাবণ কিছু জানতে চাইবে অথচ লাবণ্য ওকে ইগনোর করে চলে যেত। সেই মেয়ে আবার নিজে শ্রাবণকে জিজ্ঞেস করছে ও কেন তার সাথে কথা বলেনি। দুনিয়া আসলেই একটা আজব জায়গা।

"তা হলে এখন ভেবে কিছু বলো," লাবণ্য মুচকি হাসলো, শ্রাবণ একটু বেকায়দায় পড়েছে মনে হচ্ছে। আচ্ছা শ্রাবণ নার্ভাস নয়তো।

"অ্যা.... " শ্রাবন আসলেই বেকায়দায় পড়েছে। এই মেয়ে হঠাৎ কি মনে করে ওকে এতো কথা বলছে, আশেপাশে সুজয় নেই তো...  এটাই হবে। সুজয়কে জেলাস ফিল করানোর জন্যই বোধহয় এতো আয়োজন।

"কিছু না। আচ্ছা আমি কি দেখতে খুবই খারাপ? মানে আমার দিকে তাকিয়ে কথা বললেও কি মানুষের জাত যায়?" লাবণ্য ঠোঁট উল্টালো।

"হঠাৎ এরকম অদ্ভুত কথা কেন? আমি তো বরং এর উল্টো জানি।"

"মানে?"

"মানে আমি আমাদের গ্রুপের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলার সামনে দাড়িয়ে আছি।"

কথাটা যেন লাবণ্যর পা থেকে মাথা অব্দি ছুঁয়ে গেল। সত্যি! সত্যি বলছে তো লোকটা। কিন্তু মুখে এই খুশিটুকু জাহির করতে নারাজ লাবণ্য। সুন্দরীই যদি হয় তাহলে চোখ তুলে তাকায়না কেন?

"আমার কিন্তু তা মনে হয়না। উল্টো তোমাকে দেখলেই মনে হয় যে আমি একটা বাঘ, যে কিনা নির্বিচারে বনের অসহায় হরিন ছানাগুলোকে মেরে ফেলে।"

"হুমম..  এটা অবশ্য সত্যি, সুন্দরী মেয়েদের সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে এরা নিঃশব্দে ঘায়েল করতে জানে।"

"তাই নাকি, সে অভিজ্ঞতাও তাহলে তোমার আছে? এ পর্যন্ত কতজন ঘায়েল করেলো শুনি। নাকি কেবল অন্যপক্ষকে ঘায়েল করার এলেম আছে। " লাবণ্যর অভিমান চুইয়ে পড়ছে।

শ্রাবণ এবার না হেসে পারলো না," তোমার আজ হলো কি...  দিদির বিয়ে বাদ দিয়ে আমার পেছনে লাগছো কেন বলতো।"

লাবণ্য মনে মনে পারলে শ্রাবণের পিন্ডি চটকাতো। ভ্যাবা গঙ্গারাম একটা, লাবণ্য এদিকে নিজের বিয়ের কোন কূল কিনারা করতে পারছে না আর শ্রাবণ দিদির বিয়ে দেখছে। কিন্তু কথাটা সামনে বলতে পারলনা লাবণ্য, এটাই আফসোস।

"কিছু না এমনি। আসলে তুমিও আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের ভিতরেই আছো অথচ তোমার সাথে সেভাবে কখনো কথা বলা হয়ে উঠেনি।"

"হ্যা আসলে আমরা একসাথে জার্নি করেছি খুবই কম, আর ক্লাসের ফাঁকের আড্ডায় আমার তেমন একটা থাকা হতো না। আমি আসলে বাবার সাথে অনেক আগে থেকেই অফিসে বসি।"

"জানি... মৌমিতা বলেছে। "

"এই দেখো... সেই কখন থেকে কথা বলছি অথচ  যেটা জানার সেটা জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি। তুমি একটু মৌমিকে খুঁজে দেবে। ওকে পৌঁছে দিতে বলেছিল বাসায় কিন্তু এখন খুঁজেই পাচ্ছিনা।"

"সে আছে তার অমিয়র সাথে, তোমাকে ওকে নিয়ে ভাবতে হবেনা।"

"ওহ.... তাহলে পাগল দুটোর মিটমাট হয়ে গেছে বলছো। "

"হু দেবা আর দেবী কিছুক্ষণ মান - অভিমান করেছে। তারপর আমে দুধে মিশে গেছে। "

"তারমানে আমরা এখন আমের আটি। তাই আর আমদের খবর নেওয়া হচ্ছে না।"

"হয়তো..  কিন্তু তাই বলে সবাই তোমাকে আঁটি মনে করে এমন ভাবাও কিন্তু ঠিক না। অনেকের কাছেই তুমি অনেক কিছু কিন্তু সেটা জানতে গেলেও চোখ, কান একটু খোলা রাখতে হয়।"

লাবণ্যর কথায়, চোখের চাহনিতে কিছু ছিলো... নাকি বিভ্রম হচ্ছে শ্রাবণের, সে অযথাই একবার - দুবার কাশল। লাবণ্যকি ওকে কিছু বলতে চাইছে। কথাগুলো কেমন যেন একটু ইঙ্গিতপূর্ণ,  কিন্তু ওর তো সুজয়ের সাথে..  শ্রাবণ আসলে কনফিউজড।

" তুমি কি আসলে কিছুই বোঝনা? "হঠাৎই একদম বুকের কাছে এসে দাড়াল লাবণ্য। কন্ঠে ভীষন এক আকুতি। লাবণ্যর এই হঠাৎ পরিবর্তনটা এতই আকষ্মিক কে শ্রাবণ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাড়িয়ে রইলো।

চলবে.....

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro