Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

৩৮


"সুমনদি...  " প্রীতি পাশ বালিশটা টেনে নিয়ে খাটে সুমনের পাশে শুয়ে পড়লো।

"কি? " সুমন উদাসীন হয়ে উত্তর দেয়। আসলে উত্তর দিতে  হয় বলে উত্তর দেয়, না হলে আজকাল কারো সাথেই ওর তেমন কথা বলতে ইচ্ছে হয়না।

"বলছি তোমার বিয়ে উপলক্ষ্যে আমরা যে আদিত্যদাদের ওখানে চলে যাবো, এটা শ্রাবণদাকে তুমি জানাবে না? " প্রীতি আড়চোখে একবার সুমনকে দেখে।

" তাকে জানাতে হবে কেন, সে কি আমার মনিব, কাজের মেয়ে পাইছে আমাকে... আর জানানোর জন্য সে কি বসে আছে ফোন ধরে ? " দুঃখে, অভিমানে বালিশে মুখে গুঁজে সুমন। নিজেই বিরবির করে বলতে থাকে" মানুষ হয় এতো অধর্মের পথে চললে হয়? একটা বার নিজের বউয়ের খোঁজ নেয়া জরুরি মনে করেনা, এঁটোর মতো নিজের প্লেট থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চায়। "

"কিছু বলছো? "প্রীতি বালিশ থেকে মাথা তুলে জানতে চায়।

"কিছু না, তুই ঘুমাতো। "

"হুমম... তবে এটা ঠিক বলেছো, শ্রাবনদারা বড়লোক বলে ধরাকে সরা জ্ঞান করে। আদর যেমন করে, তোমার সাথে খারাপ ব্যবহারও তেমনি করে।"

"প্রীতি! "

"কি প্রীতি, গরীব বলে কি আমাদের আত্মসম্মান থাকতে নেই, সেদিন দেখলাম তো তুমি কি যেন বলতে গেলে অথচ শ্রাবনদা শুনলোই না, তারপর আবার তোমাকে না জানিয়েই চলে গেলো। আর এখন তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে তার পরও একবার খবর নিলোনা, ঘন্টা স্নেহ করে তোমাকে।"

সুমন, প্রীতির কথার কোন জবাব দিতে পারলনা। প্রীতির কথার কোনটাই যেমন মিথ্যে নয় তেমন পুরোপুরি সত্যও নয়। শ্রাবন রেগে আছে ওর উপর, না হলে একবার হলেও ওর খবর নিতো। কিন্তু সুমন কি করবে, রামনাথ ওকে শ্রাবণের থেকে দূরে থাকতে বলেছে। তার থেকেও বড়ো কথা শ্রাবনকে এই কথা ও বলে কি করে..  কি মনে করবে ওকে শ্রাবন?বাড়ির বউ হয়ে ঢোকার আগেই শ্বশুরের নামে কান ভাঙ্গানি দেয়া শুরু করেছে। সাথে ছেলে হয়ে বাবার এই আচরনের কথা শ্রাবন বিশ্বাস করবে তারই বা কি ভরসা আছে।

"না প্রীতি, শ্রাবনদা কোন কারনে রাগ হয়েছে। তুই জানিসনা কেমন পাগলেটে আর জেদী মানুষ সে। আমি হয়তো না বুঝে কোন দোষ করেছি যার জন্য এমন শাস্তি কপালে জুটলো। তুই খামাখা শ্রাবনদার উপর রাগ করে থাকিস না।"

"তুমি কোন দোষ করোনি সুমনদি , এটাই বড়লোকদের অভ্যাস, আমি জানি।"

সুমনের কেন যে এবার খুব রাগ হলো প্রীতির উপর, মাথার বালিশটা পায়ের কাছে ছুড়ে দিয়ে ঠেস দিয়ে বসলো ও বিছানায়।

"খালি বারে বারে বড়লোক বড়লোক, এগুলো কি কথা? শ্রাবনদার খালি দোষ খুঁজে খুঁজে বের করছিস কেন? একটাবার বললেই ইয়া বড় বড় চকলেটগুলো এনে দেয় সেগুলো তো খুব মজা করে গিলিস, তখন মনে থাকেনা যে এগুলো ওই বড়লোকের দেয়া, স্বার্থপরের মতো কথা বলতে শিখেছিস।"

সুমনের গলায় রীতিমতো বিরক্তি ঝরে পড়ছে।

"তারমানে শ্রাবনদা এগুলো করে সেটা কেবল তোমার মনে আছে, তাইতো? "

"মানে? "

" মানে! আরে শ্রাবনদা যখন অভিমানই করে আছে, তখন তোমার উচিত না সেটা ভাঙ্গানো। রাগী লোক, জেদী লোক, হতচ্ছারা পাঁজি লোক সবই তো জানো, তারপরও তোমার সাধের শ্রাবনদা তার একমাত্র আদরের সুমোর বিয়েতে আসবেনা... এটা কি ঠিক? অন্তত একবার তাকে ভালো করে দাওয়াতটা তো দাও।"

"ভালো করে দাওয়াত!"

"হ্যাঁ, এটা তো উচিত। কম করেনি তোমার জন্য শ্রাবনদা আর এখন সে নেই, তার মধ্যেই মা তোমার বিয়ে ঠিক করে ফেললো। যাক করেছে তো করেছে, আর শ্রাবনদাকে মা তেমন পছন্দও করেনা। তারচেয়ে তোমার বিয়ে তুমিই বরঞ্চ ভালো করে দাওয়াত দিয়ে দাও।"

প্রীতি যতো অবলীলায় কথা গুলো বললো এতো সহজ যদি সম্পর্কের হিসেবগুলি হতো। বুক চিরে দীর্ঘশ্বাসগুলো আকাশের পথে পা বাড়ায় সুমনের। বুকটা আজকাল কেমন চিনচিন করে ব্যাথা করে মাঝে মাঝে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। সারারাত আর ঘুম আসেনা সুমনের, এপাশ ওপাশ করেই সময়টা কেটে যায়।

................................................

"মৌমি সব সময় মানুষকে বোঝাটা এতো সহজ হয়না। সময়ের সাথে সাথে মানুষ কি করে যেন পাল্টে যায়।"

" কিন্তু শ্রাবণ এটা তো পুরো ইলিগাল একটা ব্যাপার।একটা মানুষের সাথে ফিজিকালি রিলেশন করার পর কোন মেয়ে আরেক লোককে এভাবে বিয়ে করে কিভাবে? আমার তো সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। "

" জানিনা, আমার মাথা আজকাল কাজ করেনা মৌমি, আ.. মি রাখি।"

"কিন্তু শ্রাবন তুই সুমনের সাথে একবার ক্লিয়ারলি কথা বলেতো দেখবি, যদি কোন কিন্তু থাকে এর মধ্যে? "

"মৌমি, সুমো আমার মায়ের কাছে কি আমি জানি। কোন কিন্তু হলে সুমোর শুধু বড়মার কাছ পর্যন্ত যেতে হবে, তাহলেই ওর সব সমস্যা সমাধান। আর আমি কিন্তু ওকে ফিরাইনি, দূরেও ঠেলিনি, অস্বীকারও করিনি। সে আমাকে গুডবাই ম্যাসেজ দিয়েছে, ক্যান ইউ ইমাজিন ইট। সে আমার কাছে অভিযোগ করতো, আমি দু'দিন পরে তাকে ঠিকই ফোন দিতাম কিন্তু সে এই সম্পর্ক রাখতেই চায়না। তার এখন আদিত্যকে চাই,এখান এখানে আমি ওকে কিভাবে হেল্প করতে পারি? নিজের বউয়ের হাত নিয়ে তার পছন্দের লোকের হাতে দিবো? " শ্রাবন উষ্মার সাথে জিজ্ঞেস করে।

মৌমিও আর কিছু বলার সাহস পেলো না,কিন্তু ওর কেবলই মনে হচ্ছে কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে, কিন্তু সেটা ওর একলার পক্ষে বের করা সম্ভব না।
.

.

.

"অ্যানি প্রবলেম শ্রাবনদা? "

মোহনার ছুঁড়ে দেয়া প্রশ্নে ঘাড় নাড়ল শ্রাবন,
" নাহ, ফ্রেন্ডের কল ছিলো।"

"জাস্ট ফ্রেন্ড?’

" বেষ্টফ্রেন্ড। "

"ওহ.. ওকে..আমিও তোমার বেষ্ট ফ্রেন্ড হতে চাই, যদি তুমি অ্যালাও করো।"

শ্রাবন হাসে, কিন্তু কোন উত্তর দেয়না। মৌমিতার সাথেও ব্যাপরটা ও আসলে আলোচনা করতে চায়নি, কিন্তু মৌমি কিভাবে কিভাবে যেন টের পেয়ে গেছে যে শ্রাবনের মন খারাপ। কিন্তু সেজন্য মৌমিকে ওর ধন্যবাদ জানানো উচিত কিনা বুঝে উঠতে পারছেনা শ্রাবন।

"শ্রাবনদা বলোনা প্লিজ, আমি তোমার বন্ধু হতে চাই, অ্যা বেষ্ট ফ্রেন্ড।"

"তাহলে আগে শ্রাবনদা বলা বাদ দিতে হবে। "

" হোয়াই? "

" এমনি, দাদা বললে আর ফ্রেন্ড হয় কি করে? " এরচেয়ে বাড়তি আর একটুও বলতে ইচ্ছে হয়না শ্রাবনের। শ্রাবনদা বলে বলে একজন বুকে খঞ্জর চালিয়ে চলে গেছে।"

" বাট, আমি তো এজন্যই তোমার বেষ্টফ্রেন্ড হতে চাই যাতে সারাজীবন তোমাকে দাদাভাই হিসেবে পাই।"

মোহনার কথাটা শ্রাবণের মাথার উপর দিয়ে গেলো। ওকে দাদা ডাকার জন্য বেস্টফ্রেন্ড কেন হতে হবে? ওতো এমনিতেই দাদা হয়।

"কি বুঝলে না? "

" না, দাদা ডাকার জন্য বেস্টফ্রেন্ড কেন হতে হবে?"

" উহহ.. দাদা নয়তো দাদাভাই বলবো সে জন্য।"

" মানে?"

" মানে, আমার কোন দাদাভাই নেই। ছয় বছর  বয়সেই আমার দাদা মৃদুল পানিতে পড়ে মারা যায়, তার পর আমার জন্ম। আমি দাদাভাইকে কখনো দেখিনি, ছবিতেও না। মা আমাকে কখনো ওর ছবি দেখায়না। কিন্তু তোমাকে দেখার পর থেকে আমার কেবল মনে হচ্ছে আমার দাদাভাই থাকলে তোমার মতো হতো। তাইতো সেদিন সাদাতো আমাকে ডেটে যেতে বললেও যাইনি।"

" সাদাতো! তোমার বয়ফ্রেন্ড? "

" হুমম.. " মোহনা সলজ্জ হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে।
"মাকে বলো না কিন্তু শ্রাবনদা, মা সাদাতোর নাম শুনলেই ক্ষেপে যায়। "

" তুমি ওকে সত্যি পছন্দ করো?"

" করি, ইনফ্যাক্ট অনেক বেশি করি। সাদাতো দেখতে তেমন সুন্দর নয় কিন্তু ও আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে,অনেক বেশি বিশ্বাস করে।"

মোহনার চোখের তারায় প্রশান্তির ঝলক।

শ্রাবণের কানে মোহনার কথাগুলো ভোমরার গুঞ্জনের মতো গুন গুন করতে থাকে।

'অনেক বেশি ভালোবাসে, অনেক বেশি বিশ্বাস করে।'

অথচ সুমো ওকে এমন একটা জায়গায় এনে ফেলে দিয়েছে যেখানে সুমোকে বিশ্বাস করতে চাইলেও শ্রাবণের এগুনোর জায়গা নেই।

"শ্রাবনদা?"

শ্রাবন, মোহনাকে দেখে। এই দাদা ডাকটা মেয়েটা কেন যে বন্ধ করেনা। শ্রাবণের যে আবার কষ্ট হচ্ছে ভীষন, কষ্টের সুতোগুলো আবার ছিড়ছে... সুমোকে ছাড়া ও বাঁচবে কি করে? কার সাথে?

"তুমি কাউকে ভালোবাসো তাই না? "

"এরকম কিছু না।"

" সরি, আমি দরজায় দাড়িয়ে তোমার কথাগুলো শুনে ফেলেছি। "

শ্রাবন মোহনার কথার কোন উত্তর দেয়না। মোহনা ওর সাথে মৌমির সব কথা শুনে ফেললে ওকে এড়িয়ে যাবার আর কোন পথ নেই।

"আমি জানি সবার কাছে সবটা বলা যায় না, কিন্তু তুমি চাইলে আমি তোমার ভালোবাসার মানুষটার কথা শুনতে চাই। আমার কেন যেন খুব কৌতুহল হচ্ছে।" মোহনা অধীর আগ্রহ নিয়ে বলে।

অনেকদিন পর শ্রাবনেরও কেন যেন মনে হয়... মনের বন্ধ  জানালাটা এবার ওর একটু খোলা উচিত। সুমো ওকে ভালো না বাসলেও ওর ভালোবাসাটাতো মিথ্যে ছিলোনা সুমোর জন্য, সেই মুহুর্তগুলো ওর জীবনের সেরা সময়, তাকে তাচ্ছিল্য করার কোন মানে হয়না।

চলবে......






Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro