Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

৩য় পর্ব


"শ্রাবনদা.... "

"হুমম..."

"এই লোকগুলো এতো খারাপ কেন...  অন্যের জায়গা জোর করে দখল নিয়ে নিচ্ছে।"

"হুমম... "

"কি খালি হুম হুম করছো।"

সুমন যারপরনাই বিরক্ত। শ্রাবন একমনে কাগজের পর কাগজ ঘেটে যাচ্ছে। কি উদ্ধার করতে চায় কে জানে। অথচ ওদের আশেপাশের জায়গাটা কিন্তু খুব সুন্দর। ইচ্ছা হলেই ওরা নদীর ধারটা ধরে হেটে আসতে পারতো, এমনকি নদীর পাড়ের ছোট্ট নৌকাটা নিয়ে একটু ঘুরতেও পারতো। কিন্তু কাগজের গাদায় বসে থাকা উকিলকে সেটা কে বোঝাবে। পাশের বাড়ির রুমাবৌদি ঠিক বলে, তোর শ্রাবণদা নামেই বুদ্ধিমান কাজের বেলায় ঠনঠনা।

তবে এর আসল কারনটা সুমন জানে, রুমাবৌদি নিজের ঘরের জানালা থেকে প্রায়ই লুকিয়ে লুকিয়ে শ্রাবণদাকে দেখে, যখন সামনের ব্যালকনিতে দাড়িয়ে শ্রাবনদা কফি খেতে খেতে কেস স্টাডি করে। শ্রাবনদা সেটা জানে কিনা সুমন জানেনা, তবে ফাইলে ডুবলে এই লোক তার সামনে না কিছু দেখে আর না কিছু শোনে।

ফুরেফুরে বাতাসে দূরের ধানক্ষেতটা তখন সমুদ্রের মতো দোল খাচ্ছে,সবুজ ক্ষেতের আল ধরে অলস ভঙ্গীতে হেলেদুলে হাটছে একটা মা ছাগল। তার পাশেই তিড়িংবিড়িং করে লাফিয়ে চলছে ছোট দুটো ছানা। এর মাঝেই গোল চক্কর কেটে  টুপটাপ বৃষ্টির মতোই কোন বাড়ির টিনের চালে ঝপঝপ করে বসে পড়ছে কবুতরের দল। সুমনের খুব ইচ্ছে হচ্ছে ওখানে ছুটে যেতে। কিন্তু কাগজের স্তুপে ডুবে থাকা লোকটাকে বলতে কোনভাবেই সাহস হচ্ছে না, জানে তে কি ভীষন কাজ প্রিয় সে।

তাছাড়া সুমন এখন জানে যে, ও আর এখন আগের মতো ছোটটি নেই। তাই মনের খুশিমতো যা ইচ্ছে তাই করা ওর আর সাজে না... তাই এখন আর আগের মতো আমগাছ, পেয়ারা গাছে টহল দিয়েও বেড়ায় না। ওর  বাড়ন্ত শরীরটা দেখে যে অনেকেরই চোখ লোভে চকচক করে সেটা বোঝে এখন সুমন। মোড়ের দোকানটায় যাবার সময় তাই ওড়নাটা ভাল করে গায়ে জড়ায়, বিলু নামের এক কেন্নো প্রায়ই অশ্লীল কিছু বলতে চায় দেখলেই।

"কি রে অমন হুতোম প্যাঁচার মতো মুখ করে রেখেছিস কেন?" শ্রাবন ফাইল থেকে একটা কাগজ বের করে তারিখ মেলাতে মেলাতে জিজ্ঞেস করে, পাশে রাখা ফটোকপির সাথে।

"এমনি। "

"আর দশ মিনিট অপেক্ষা কর, এই জমিতে অনেক প্যাঁচ বুঝলি... যে মার্কেট করছে সেও এক রকম জমির দাবীদার বের হচ্ছে। কেসে জিততে গেলে অনেক প্রমান লাগবে।"

শ্রাবণের কথায় সুমনের মন তিল মাত্র প্রশান্তি পায় না। ওর ফুচকা খাওয়া আজ বুঝি আর হলোনা। এই করেই শ্রাবনদা আজ দিন পার করবে। এর চেয়ে তো বাড়ি গিয়ে, মোড়ের মাথার ফেরিওয়ালার কাছ থেকে ঝালমুড়ি মাখা খাওয়া ঢেড় ভালো ছিল.….. শুধুই শুধুই ও মামীর কাছ থেকে কথা শোনার ব্যবস্থা করলো।

শ্রাবণ কাজ শেষ করে দেখে পুচকিটা রেগে টমেটো হয়ে গেছে। বুকের কাছে কলেজের ব্যাগটা ধরে রেখেছে যক্ষের ধনের মতো আর মাঝে মাঝে হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে চোখ মুছছে।

"কি রে সুমো কাঁদছিস কেন? মানুষ কি বলবে এত বড় ধিঙ্গি মেয়ে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছে "

"আমি একটুও শব্দ করে কাঁদছি না শ্রাবনদা আর তুমি আমার সাথে আজ চিটিংবাজি করেছ। তোমার সাথে আমার কাট্টি, কথাই বলবো না।"

"ওই... মারব এক গাট্টা। কোথায়... কি চিটিংবাজি করলামরে? " সুমনের কানের কাছে মারতে গিয়ে আবার হাতটা ফিরিয়ে নিয়ে আসলো শ্রাবণ। নাহ বেচারি দুপুরে খায়নি,থাপ্পর খেলে ফিট লাগবে।সুমন ততক্ষণে ভয়ে মাথাটা দূরে সরিয়ে ফেলেছে।

"করেছ..  আমি সেই কখন থেকে এখানে বসে আছি, কিচ্ছু খাইনি," সুমন ঠোঁট ফুলালো। আজ বড়মাকে না বলেছি তো আমার নাম সুমো না। বাদর একটা ছেলে বানিয়েছে, দুধ কলা খাইয়ে।

"তো......? "

"কি তো....?"

"আমি খেয়েছি?  আমাকে খেতে দেখেছিস? "

এবার একটু বিপাকে পড়লো সুমন। শ্রাবনদাও খায়নি এটা ঠিক কথা কিন্তু ফুচকার ক্ষিধে শ্রাবনদার পায় কিনা সেটা তো সুমন জানে না। তাই উপায় না দেখে বললো, " তুমি কত বড় একটা মানুষ, আমি কি অত বড় হয়েছি নাকি? "

"বাহ বড় মানুষের তাহলে ক্ষিদে পায়না?"

"উমম...  জানিনা। ও শ্রাবনদা আমি শুধু একপ্লেট ফুচকা খাব, আর কিছু লাগবেনা।"

"আগে তুই গাড়িতে ওঠ, এখন খালি পেটে ফুচকা মিলবে না। আগে শক্ত কিছু খেতে হবে তারপরেরটা পরে দেখা যাবে।"

"ইই.... না...... তুমিতো সেদিন বলেছিলে সুমো এরপর যেদিন বাইরে যাবো সেদিন ফুচকা কিনে দিব।"

"অ্যাই তুই উঠবি না আমি একাই যাব তোকে ফেলে।"

"উঠছি এতো বক কেন সব সময় ? আজ আমার বাবা - মা নেই বলে সবাই আমায় খালি বকে।"

"চুপ... একদম।"

সুমন এই যে মুখ গাড়ির জানালার দিকে ঘুরিয়ে বসলো, সেটা কফিশপে না যাওয়া পর্যন্ত সোজা হলো না। শ্রাবন অবশ্য কোনরকম চেষ্টাও করেনি, পাসতার প্রতি বিশেষ দুর্বলতা আছে সুমনের, বিড়াল তপস্বী ওটা দেখলেই তপস্বা ছেড়ে মর্তলোক থেকে ধরায় ফিরে আসবেন জানা কথা। তাই আর বাড়তি কথায় না যেয়ে একদম কফিশপের সামনে এসে গাড়ি পার্ক করলো শ্রাবণ।

"এখন হয় একটা বার্গার নয় পাস্তা খাওয়াতে পারি। কাপড় কিনে যাওয়ার পথে চোখে পড়লে ফুচকা জুটবে আর না থাকলে না," গাড়ির দরজাটা খুলে সুমনকে নিচে নামার ইঙ্গিত করলো শ্রাবণ।

বার্গার! পাস্তা! কিন্তু একটা কেন? এতো কষ্ট করলো সুমন,  দুটোই কিনে দিলে কি এমন হতো ?

"কি এতেও হবেনা? না হলে আমার আর কিছু করার নেই। বাড়ি যেয়ে দুপুরের ভাত খাবি চল," ঠাস করে আবার গাড়ির দরজাটা আটকে দিল শ্রাবণ।

"না, না হবে তো... কিন্তু..."

"কিন্তু? "

"না কিছু না.... " সুমন স্তিমিত স্বরে বললো। শ্রাবনদার গলা বিশেষ সুবিধার লাগছেনা।

"সুমো কোন কথা শুরু হলে তার শেষ হওয়াটা জরুরী, ফলাফল যাই হোক না কেন। "

"হুমম"

"কি হুমম? আমি কি জানতে চাইছি? "

"না মানে ইয়ে মানে... পাস্তা আর বার্গার দুটোই যদি খেতাম তাহলে আজ ফুচকা না হলেও হতো," মিনমিন করে কথাগুলো বলেই আবার ব্যাগটা বুকের কাছে চেপে ধরলো সুমন। কিন্তু তাতেও লাভ হলনা। উত্তর দেওয়ার সাথে সাথেই  চুলের বেনীতে জোরে একটা টান খেল সুমন।

"আবার কি করলাম যে মারছো?"

"মারবনা তো কি....  ছুঁচো কোথাকার। নে চল দুটোই দিব কিন্তু তার আগে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হতে হবে।"

"হ্যা হ্যা চলো চলো "

"ভাত খাবেনা আর বাইরে আসলে খালি হাবিজাবি খাওয়ার জন্য খাইখাই করতে থাকে।"

শ্রাবনের বকা খেয়েও এবার সুমনের চেহারার ঔজ্জ্বল্য কমলো না, পাস্তা ওর ফেভারিট উমম... হোয়াইট সস দিয়ে গরম পাস্তার গন্ধটাই একদম আলাদা। ইস প্রীতির কথা খুব মনে পড়লো সুমনের, প্রীতিরও খুব পছন্দ পাসতা।
মঞ্জু মামী চিৎকার না করলে ও প্রীতিকেও নিজের সাথে আজকে নিয়ে আসতে পারতো।
..................

খাবার খেয়ে শার্টের কাপড় কিনে ওরা যখন গাড়িতে উঠলো সুমনের চোখদুটো তখন ঘুমের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে।

গাড়ি চলতে শুরু করতেই সুমন ঘুম৷ শ্রাবন অবস্থা দেখে সুমনের সীটবেল্টটা বেঁধে দিল তাড়াতাড়ি , না হলে জোরে ব্রেক কষলেই সোজা নাক ভাঙবে গাধীটা।

"পাগল একটা, " শ্রাবণ একা একাই হাসলো। আসলে সুমনের নয় শুধু ওর নিজেরও প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে। ঘরে গিয়ে আগে কাপড় ছেড়ে ঘন্টাদুয়েক ঘুমাবে ও, তারপর কালকের কাজ নিয়ে বসবে। 

বাড়ি পৌছে সুমনকে ডেকে তুলে দিয়ে  নিজের একগাদা ফাইল নিয়ে ঘরে পৌছাতে পৌছাতে শ্রাবণের বিড়ম্বনার শেষ নেই। কোনমতে ফাইলগুলো বিছানা উপর ধপ করে নামিয়ে রেখে পকেট থেকে গাড়ির চাবিটা বের করলো শ্রাবন, কিন্তু সেই সাথে সুমন আর প্রীতির জন্য জমা রাখা দুটো চকলেটও উঠে এলো হাতে। কাজের লোকের হাতে চকলেট দুটো পাঠিয়ে দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই বালিশের পাশে ফোনটা বাজতে শুরু করলো।

ধরব না ধরবনা করেও তিন বারের বার কলটা ধরলো শ্রাবণ।

'হ্যালো... '

"শ্রাবণ "

"মৌমী তুই! আবার কি হলো?"

"কিছু হয়নি কিন্তু এবার হবে "

"কি? "

"প্রেম "

"মানে... কার প্রেম? "

" সেটা জানতে হলে তোকে অবশ্যই লাবন্যর দাওয়াতে যেতে হবে।"

"তোর ভয় নেই মানুষের প্রেমের গল্প জানি বা না জানি তোকে ঠিক দাওয়াতের পরে বাড়ি পৌছে দিব , তুই নিশ্চিত থাক।"

"সে আমি জানি বাছাধন, আমি তো জাস্ট তোকে একটা দারুন খবর বলতে চাচ্ছি।"

"মৌমী প্লিজ আমি ভীষন টায়ার্ড... আজ থাক, এইমাত্র বাইরে থেকে আসলাম। "

"ওহ সরি সরি " মৌমী সত্যিই লজ্জা পেয়েছে বলে মনে হলো।

শ্রাবণ,  মৌমীকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনটা কেটে দিলো। কিন্তু মনের অজান্তেই মৌমীর কথাটা মাথায় ঘুরতে লাগলো... ওকে কার প্রেমের গল্প শোনাতে চায় মৌমী? মৌমীর নিজের! নাকি লাবন্যর। লাবন্যর  নামটা মনে হতেই সুজয়ের কথা মনে হলো শ্রাবনের। সুজয় খুব পছন্দ করে লাবন্যকে, কিন্তু বেচারাকে মোটে পাত্তাই দেয়না লাবন্য।

চলবে......  

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro