২৩
ঘরে ঢুকে কাপড় ছাড়তে ছাড়তে রাত এগারোটা পার হয়ে গেলো শ্রাবনের। চেঞ্জ করে ও যখন খাবার ঘরে ঢুকলো নির্মলা তখন বাসার কাজের লোকদের খাবার বুঝিয়ে দিচ্ছেন, ছোট ছেলেকে পাঞ্জাবির হাতা গোটাতে দেখে বুঝলেন আজ বাবু বাসায় খাবেন। তড়িঘড়ি করে তাই কাজের লোককে আবার টেবিলে প্লেট দিতে বললেন তিনি।
"হ্যারে শ্রাবণ, বলছি তোর এর মধ্যে বাবার সাথে কোন কথা হয়েছে? "
"নাতো মা... কেন? " শ্রাবন ভাতের থালা সামনে টেনে নিলো। ভীষন খিদে পেয়েছে ওর সমীর মামা আর আদিত্যর খোশ গল্প শুনতে শুনতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুমোর বিয়ের কি হয় সেটা শোনার লোভে ওখান থেকে চলে আসতে পারেছিলনা ও।
"তোর বাবার মেজাজ আজ আকাশে চড়ে বসে আছে।"
শ্রাবন খাবারে মাত্র হাত লাগিয়েছিল, কিন্তু মায়ের কথা শুনে খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে সেদিকে মনযোগী হলো। কি ব্যাপার... মনেমনে ভাবলো আমি তো কিছু করিনি খ্যাপানোর মতো।
ছেলে কি ভাবছে নির্মলা বেশ জানেন, তাই শ্রাবন প্রশ্ন করার আগেই বলে দিলেন যে, সুমনের মামা সমীর ওর বাবার কাছে তার ঋনের সব টাকা শোধ করে দিয়ে গেছেন। কোথা থেকে তিনি হঠাত এতোগুলো টাকার বন্দোবস্তো করলেন সেটা সেই জানেন, কিন্তু রামনাথ চৌধুরী সেই ঘটনার পর অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। পারতপক্ষে কারো সাথে কথা বলছে না আর বললেও তাতে মেঘ গজরাচ্ছে।
যদিও রামনাথ চৌধুরী মুখে বার বার কেবল 'উহ্ মানুষ এতো অকৃতজ্ঞ হয়?' এটাই বলছেন কিন্তু সমীর টাকা পরিশোধ করার পরে তার মন একটুক্ষণের জন্যও শান্ত হয়নি, বরং বিষিয়ে রয়েছে।
ঋনের টাকা শোধ হওয়ায় বাবার যে কেন মেজাজ খারাপ সেটা শ্রাবণ ভালই জানে, ওটা নিয়ে ওর কোন মাথা ব্যাথা নেই। ওই বাড়ির প্রতি ওর বিন্দু মাত্র লোভ নেই। বাবার মতো খালি বাড়ি বাড়ি করে জীবন পার করতেও শ্রাবন রাজি নয়। তবে সময়ে নিজের পায়ে দাড়িয়ে পছন্দ মতো একটা বাড়ি করার শখ ওর আছে। কিন্তু বাড়ি মানেই ওর কাছে কেবল ইট, কাঠ, রড,বালু আর সিমেন্টের ঢালাই বলে মনে হয়না। বাড়ি মানে তার ভিতরের মানুষগুলোর মনের বন্ধন শক্ত হওয়া জরুরি, যা কিনা একটা বাড়ির ভিত। না হলে দামী হোটেল আর লাক্সারিয়াস বাড়ির মধ্যে পার্থক্য কোথায়? স্বপ্ন গুলো ডানা মেলার আগে দুটো মানুষের স্বপ্নটা এক হওয়া অবশ্যই জরুরি। ওর মায়ের মতো কেবল এডজাস্টমেন্ট করে আর বাঁচতে হয় বলে খাই এমন বাড়ির মালিক হতে শ্রাবন চায় না... তারচেয়ে ওর একটা ছোট্ট বাড়ি হোক.. সেখানে ওর স্বপ্ন সারথী ওর সাথে পরম নিশ্চয়তা নিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিক.... এর চেয়ে বেশি কিছু ও চায়না।
"এখন তোর বাবা..... কে সমীর ঠাকুরপোকে এতোগুলো টাকা দিয়ে সাহায্য করলো তার পিছনে লেগেছে। আচ্ছা তোমার টাকা দরকার ছিলো আর তোমার টাকা সে তোমাকে ফিরিয়ে দিয়ে গেছে..... ব্যাপার মিটে গেল। কিন্তু না, তা হবে না..... এখন তাকে সব ঘেটেঘুটে টাকার জাত বংশ সব জানতে হবে... ",নির্মলা একটু দম নিলেন, " অন্যকে এতো অত্যাচার করা কেন বাপু? তারা টাকা ধার নিয়েছিল... তোমার কাছে মাথা বিক্রি করেনি।"
মায়ের কথায় শ্রাবন হো হো করে হেসে ফেললো।
"কিরে.... তুই হাসছিস কেনো অমন করে? আমার কথা কি তোর কাছে কৌতুক বলে মনে হচ্ছে?"
"না, মা... আসলে অনেক বছর পরে কাকতালীয়ভাবে বাবার আর আমার একজন লোকের দিকেই নজর পড়েছে আর আমাদের দুজনেরই বক্তব্য হচ্ছে..... দেখে নেব ব্যাটা তোকে।"
"মানে.... তাকে তুই চিনিস? ঠাকুরপো তোকে বলেছে বুঝি....?"
শ্রাবন মাথা নাড়াল," নাহ"
লোকটা কে সেটা আলবাত জানে ও কিন্তু সব সময় নামের দরকার হয়না, আলামতই যথেষ্ট। আদিত্য যে সুমনের প্রতি অসীম আগ্রহ থেকেই সমীর মামার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ও বাড়িতে এতক্ষণ বসে থেকে আদিত্যর জন্য বাসার সবার যে আন্তরিকতার বহর শ্রাবণ দেখলো .... তাতে সুমনকে, আদিত্যর হাত থেকে ও বাঁচাবে কি করে সেটা নিয়েই শ্রাবনের এখন দুশ্চিন্তা হচ্ছে।
"হমম... আমিও তাই বলি। আমি নিজেও মঞ্জুকে ডেকে পরে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কিন্তু ঔ বললো যে..... যে দিয়েছে সে নাকি নিজের নাম প্রচার করাতে চায় না। লোকটা মনে হয় খুবই ভালো, তা না হলে এখন তো সবাই নিজের নাম ফোটাতে ব্যাস্ত থাকে।"
"হমম... "
শ্রাবণ খাবার খেতে খেতে আবার গভীর চিন্তায় ডুবে গেলো।
...............................................
"শ্রাবণদা...... "
"আরে প্রীতি... কি রে? "
"বলছি আমার না কয়টা টাকা লাগবে, তুমি দিবে? "
"টাকা? কেন? সুমো তোকে আজকাল টাকা দেয়না? "
"সুমনদির সাথে কাল থেকে কোন কথাই বলা যাচ্ছে না, বললেই বলে আমি আর শ্রাবণদার কাছ থেকে কোনদিন টাকা নিতে পারবোনা প্রীতি। "
"কেন? তার আবার কী হলো যে আমার টাকা হঠাত তার অচ্ছুৎ মনে হওয়া শুরু হলো। "
"ওইযে মা এক ভেজাল পাকালো না কাল, সুমনদি তাই বার বার বলছে, বড়মা যদি এর বিন্দু বিসর্গও জানতে পারে প্রীতি তাহলে কত কষ্ট পাবেন আর তারপরই আবার কাঁদছে। "
কথা সত্যি... মঞ্জু মামীর এই কথাগুলো মায়ের কানে কোনভাবেই পৌছাতে দেওয়া যাবেনা। শ্রাবন ব্যাপারটা এতক্ষণ খেয়াল করেনি কিন্তু সুমো খেয়াল করেছে এটা মনে হতেই বুকে শান্তি শান্তি লাগলো।
"আমি তাও এর মধ্যে একবার সুমনদির কাছে টাকার কথা বলেছিলাম ... কিন্তু পরে আর সাহস পাইনি শ্রাবনদ। সুমনদি বলেছে বড়মার কাছে খাবার এনে যেহেতু সে অপরাধ করেছে সেহেতু এ বাড়ির একদানা খাবারো আর দির গলা দিয়ে নামা উচিত না, আর তোমার টাকাতেও সুমনদি আর কখনো হাত দেবে না। "
শ্রাবন এবার হাসলো... বের করছি ওর টাকায় হাত না দেয়া... কতদিন হাত দেবে না শুনি? তবে
সুমো পাগলী এবার সত্যি ক্ষেপেছে মনে হচ্ছে।
"আচ্ছা প্রীতি তোর কেন লাগবে টাকাটা... এবার বল দেখি," শ্রাবন, প্রীতির কাছে জানতে চাইলো।
প্রীতি মুখটা যথাসম্ভব কাচুমাচু করে বললো, "বলতে পারি এক শর্তে... কিন্তু তুমি কথা দাও তুমি হাসবেনা। "
"হাসা যাবেনা? "
"উহুু... একদম না "
"আচ্ছা হাসবনা এবার বল।"
"শ্রাবনদা... আজ আমার বকুলের বিয়ে।"
"বকুলের বিয়ে! এই বকুলটা আবার কে? "
!আমার ঘরের লক্ষী... আমার মেয়ে বকুল। "
"তোর মেয়ে মানে?" শ্রাবণ চেয়ারে বসা থেকে উঠে দাড়াল স্প্রিংয়ের মতো।
"আরে মেয়ে মানে আমার মেয়ে পুতুল... গত বছরই ওর বিয়ে দিয়ে দিতাম শ্রাবনদা কিন্তু একদম দেয়া থোয়া ছাড়া বিয়ে দিবো কি করে তাই মেয়েকে ঘরে বসিয়ে একবছর আইবুড়ো করে রাখতে হলো। "
"কি বললি আইবুড়ো? "হো হো করে হেসে ফেললো শ্রাবন," কি পাকা পেকেছিস রে তুই প্রীতি... আবার দেয়া থোয়াও বহাল আছে।"
"শ্রাবনদা প্লিজ আমায় একটু হেল্প করোনা ... তুমি আমায় গতকাল চকলেট আর আইসক্রিম দিতে চেয়েছিলে , ওটার বদলা আমায় একশটা টাকা দিবে? আমি অন্য সবকিছু ম্যানেজ করতে পেরেছি কিন্তু বকুলের বিয়ের খাওয়ার টাকাটা কিছুতেই জোগাড় করতে পারছিনা। "
শ্রাবন মানিব্যাগ থেকে দুশো টাকা বের করে দিলো প্রীতির হাতে," নে.. এটা তোর মেয়ের বিয়ের গিফট.... আর আইসক্রিম আর চকলেট এমনি পাবি। "
"সত্যিই! থ্যাঙ্কিয়্যু শ্রাবনদা.... থ্যাঙ্কিয়্যু... "
প্রীতি নাচতে নাচতে বাড়ির দিকে ছুটলো...
"অ্যাই প্রীতি... "
"আবার কী ? "
"বলছি তোর মেয়ের বিয়েতে মালা গাঁথছিস না?"
"এইতো এখন যেয়ে গাঁথবো.. টাকাগুলোর জন্য অনেকগুলো কাজ আঁটকে ছিলো জানো.. এখন একটু থির হয়েই গেঁথে ফেলবো।"
"বাপরে... আচ্ছা যা হোক, ওখান থেকে আমায় একটা মালা দিয়ে যাস দেখি। "
"মালা... আচ্ছা।"
"আর সুমোকে একটু ডেকে দে... বল আমি ডাকছি। "
"আচ্ছা.. আচ্ছা... বলছি "
প্রীতির মুখটা আনন্দে জ্বল জ্বল করছে। বড্ডো চিন্তায় ছিল ও এতোক্ষন... বান্ধবীদের সামনে মুখ থাকতো না একদম ওর টাকাগুলো না পেলে। আর মায়ের সামনে তো বলাই যাবেনা, বলবে ধিঙ্গিপনা দেখে বাঁচিনা.. দুদিন পরে নিজের বিয়ে হবে আর এখনও উনি পুতুল খেলে বেড়ান। কিন্তু প্রীতির যে পুতুল গুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে এখনো বড্ডো ভালোলাগে আর তারচেয়েও বেশি ভালো লাগে ওদের জন্য নতুন নতুন কাপড়চোপড় বানাতে।
.....................................
"সুমনদি..... "
" কি " সুমন বসে বসে তিন মাসের পুরোনো কাগজগুলো ভাঁজ করে এক জায়গায় জড়ো করছিলো। কাল এগুলো ফেরীআলা ডেকে বিক্রি করে দিতে হবে, তাহলে চল্লিশ, পঞ্চাশ টাকা পাওয়া যাবে অন্তত। সেই টাকায় প্রীতির পুতুলের বিয়ের খরচ উঠে যাবে।
"শ্রাবনদা তোমায় ডাকে "
"শ্রাবনদা?"
"হ্যাঁ, বললো কি যেন কাজ আছে.... তাড়াতাড়ি যাও।"
"যাচ্ছি "
সুমনের কালকের পর থেকে চৌধুরী বাড়িতে পা দিতেও লজ্জা লাগছে। বড়মা... বড়মা কী ভাববে.. না জানি কত কষ্ট পাবে.....। মামী ওকে কাল দিনভর বকাবকি করেছে সেটা ওর গা সওয়া কিন্তু তার সাথে বারবার সবকিছু ওর চৌধুরী বাড়ি দিতে মন চায়, এই কথাগুলো কাঁটার মতো বিঁধছে ওর। সুমনের ভুল হয়েছে.. অনেক বড় ভুলই হয়েছে... কিন্তু এতে বড়মা বা শ্রাবনদার তো কোন দোষ নেই আর তাছাড়া ওরা কত বড়লোক, এরকম খাবার চৌধুরী বাড়িতে দুই একদিন পর পরই তৈরী হয়। তাদের কানে এমন কথা গেলে তারা কী ভাববে?
"সুমনদি যাও না... "
"যাচ্ছি তো... জ্বালাস না। "
কাগজগুলো খাটের তলায় ঠেলে দিয়ে সুমন উঠে দাড়ালো, ভয় পেয়ে লাভ নেই। সমন যখন এসেছে ময়দানে যেতেই হবে।
সুমন ভয়ে ভয়ে শ্রাবনের দরজার কাছে এসে দাড়ালো। সারা পথ সুমন প্রার্থনা করতে করতে এসেছে যে, বড়মার সাথে যেন কোনভাবে ওর দেখা না হয়। এখনো দেখা হয়নি... মনে হচ্ছে আজ আবহাওয়া ওর অনুকূলে আছে।
"সুমো এদিকে আয়। "
"বলো... "
"মাকে নিয়ে এবার কোথায় বেড়াতে যাওয়া যায় বল দেখি... আমি ভেবে ভেবে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না।"
"বড়মার পায়ের ব্যাথা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে শ্রাবনদা.. তাই এমন জায়গায় যাও যেখানে বড়মাকে বেশি পথ হাঁটতে হবে না।"
"ভালো বলেছিস, আমিতো পাহাড়ে যেতে চেয়েছিলাম।"
"না, না... তোমার মাথা খারাপ! বড়মা এখন প্রায় দিনই ব্যাথার ওষুধ খান। পাহাড়ে তো একদমই না।"
"হমম... তাহলে তুই বল তুই কোথায় যেতে চাস?"
"আমি! "
"হ্যাঁ, আর কাপড় গুছিয়ে ফেলবি আস্তে আস্তে। তোদের কলেজে গরমের ছুটি পড়লেই বেরিয়ে পড়বো, কেমন?"
সুমন, শ্রাবনের কথার কোন উত্তর করলোনা। প্রায় প্রত্যেক বৎসরই বড়মার সাথে শ্রাবনদা ওকেও সাথে করে বেড়াতে নিয়ে যায় কিন্তু এ বছর মামী ওকে যেতে দিবেন কিনা ও জানেনা আর.. আর সাথে ওর জন্য যেভাবে পাত্র দেখা দেখি চলছে তাতে কতদিন আর ও এবাড়িতে থাকতে পারবে সেটাও জানে না সুমন।
"কিরে এরকম চুপ করে দাড়িয়ে রইলি কেন, কোথায় বেড়াতে যাবি বল? আগে থেকে বুকিং না করে রাখলে হোটেল,মোটেল কোনটাতেই সুবিধামতো রুম পাওয়া যায় না। পরে আবার তাই নিয়ে তোরাই হাজারটা কথা শোনাস।"
"শ্রাবনদা... "
"কী?"
"এখন থেকে বোধহয় আমার আর যাওয়া হবেনা," সুমন খুব কষ্টে চোখের পানি পড়া থামাল।
"কেন! "
সুমন উত্তর না দিয়ে নিচু হয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে মেঝে খুটতে লাগলো..
সুমন কিছু বলছে না দেখে রাগ হয়ে যাচ্ছিল শ্রাবনের, এ আবার কোন ধরনের ঢং শিখেছে সুমো.... কিন্তু তারপরই হঠাত কাল ওদের বাড়িতে দেখা অনেকগুলো ছবি, আদিত্যর মতামত আর সমীর মামার কথাগুলো এসে কানে বাজতে লাগলো শ্রাবনের।
হঠাত দিশেহারার মতো ঢোক গিললো শ্রাবন। আচ্ছা পছন্দ করুক বা না করুক পরিবারের চাপে পড়ে যদি সুমন, আদিত্যকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায় তখন? শ্রাবন তখন সুমনকে আটকাবে কী করে?
"সুমো... "
"কী শ্রাবনদা... "
"আমার কী হবে বলতো... সুমো? "
"কেন, কী হবে শ্রাবনদা?"
"কী যে হবে সে তো আমি এখনি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি... তুই শ্বশুর বাড়ি যাবার আগে আমার কোথায় কোন জিনিস রাখা আছে ভালেয় ভালোয় দেখিয়ে দিয়ে যাস .. তা না হলে তো আমি অন্ধ কিছুই খুঁজে পাবনা।"
"যাও... ভালো হবে না বলছি," সুমন ঈষৎ কপাল কুঁচকালো। শ্রাবনদা এসব নিয়ে দুষ্টামি করলে ও যাবে কোথায়?
"যাও কী... আমি তো দেখলাম কাল সমীরমামা আর আদিত্যবাবু বেশ জোর বৈঠক করছেন তোর বিয়ে নিয়ে।"
সুমন এবার কাতর সুরে জানালো, "মামার কাছে কারা কারা যেন ছবি দিয়েছে তাই নিয়ে কাল কথা হচ্ছিলো আদিত্যবাবুর সাথে কিন্তু মামা ওদের সবাইকে না করে দিবে বলে দিয়েছে। আদিত্যবাবুও বলেছে আমার ইন্টার পরীক্ষার আগে কোন বিয়ে শাদী হবে না।"
"আাদিত্যবাবু বলেছে! সমীরমামা, দাদু সবাই রাজি হলো? "
"হমম," সুমন মুখ অন্ধকার করে সায় জানালো, শ্রাবণের কথার মধ্যে ঈর্ষার রেশটুকু ও ধরতে পারলনা। সত্যি বলতে বিয়ের কথা বলতে সুমনের একটুও ভালো লাগছে না.. ওর যদি যা খুশি করার স্বাধীনতা থাকতো তাহলে ও সব ছেড়ে ছুড়ে দূরে কোথাও চলে যেত।
কিন্তু সুমনের উত্তর শুনে শ্রাবনের ঠোঁটের কোনে সূঁচালো একটা হাসির রেখা দেখা দিয়েই আবার মিলিয়ে গেল.. চোখদুটিতে স্বস্তির দেখা মিললো।
শ্রাবন মহারাজ এরপর ধীরে ধীরে প্রশান্তির সাথে বলে ফেললো ,"তা হলে তো বেশ ভালই হলো... দু'পক্ষই অনেকটা সময় পেল.. তাই না? "
চলবে.......
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro