Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

১৬

"আমি কি এবেলার টাকার হিসেবটা এখন একটু দিয়ে যাব? " শ্রাবণের ঘরের ভিতরে গলাটা বাড়িয়ে দিয়ে জানতে চাইলো সুমন। সকালে প্রায় দশপাতা পড়া দাগিয়ে দিয়েছে শ্রাবণ আজ ওকে, তার বেশিরভাগ গুলোই সুমনের মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে। আরো বেশ কয়বার না পড়লে ওগুলো ওর মাথায় কিছুতেই ঢুকবে না।

বড় আয়নাটার সামনে দাড়িয়ে নিজের চুলগুলো নিয়ে নানা কায়দায় আচড়িয়ে দেখার চেষ্টা করছিল শ্রাবণ। কিন্তু কোনটাই ওর বিশেষ পছন্দ হচ্ছে না। আজ সেলুনে গিয়ে নতুন কায়দায় চুল কেটেছে সে, কিন্তু এখন সেগুলো বাগে আনতে  যেয়ে ভীষন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে ওর। ধ্যাতত্তেরি.... .

"শ্রাবণদা..... " আগের চেয়ে জোরে প্রায় খানিকটা চেঁচিয়েই বললো সুমন। সেই কখন থেকে নিজের চুলগুলো নিয়ে মেয়ে মানুষের মতো করছে শ্রাবনদা, সুমনের ভারি রাগ হচ্ছে। সামনের ওই চুলগুলো লাল ক্লিপ দিয়ে আটকে দিলে বেশ হতো।

"ওহ এসে গেছিস। আয় তো দেখি এখানে.... আমাকে একটু ভাল করে গুছিয়ে দেতো," শ্রাবণ চিরুনী রেখে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।

"আমি!" সুমন বড় বড় চোখ করে তাকাল। শ্রাবনদার কি আজকাল অ্যামনেশিয়া হয় নাকি যখন তখন, ও কি করে শ্রাবনদাকে গুছিয়ে দিবে... ডাব্বুর মতো ছোট আট-নয় বছর বয়সী ছেলে হলে না হয় আলাদা কথা ছিল।

"হ্যাঁ, তুই... আলমারি থেকে ভাল দেখে একটা স্যুট বের কর দেখি আমার ৷ রাতে কিছু পুরানো ফ্রেন্ড মিলে একটা ফ্যামিলি গেট টুগেদারের ব্যাবস্থা করেছি। বন্ধুদের সাথে ওদের ফ্যামিলিও থাকবে, বলা যায়না বিয়ের জন্য আমাকে কারও পছন্দ হয়েও তো যেতে পারে।"

হাসি হাসি মুখ করে বললো শ্রাবণ।

সুমন, শ্রাবণের দিকে এক পলক তাকিয়েই অন্য দিকে চোখ ফেরালো। শ্রাবণদার যতো আজগুবি কথা...  তাকে কারও পছন্দ হয়েও যেতে পারে, ঢঙ... ওদিকে নিজে কোন মেয়ের প্রতি গরজ দেখায়না... না  হলে এতোদিনে কবে বিয়ে হয়ে যেতো। ওই মৌমিতাদি তো মৌমাছির মতো ঘুরতেই থাকে, তবু বাবুর চোখ খোলে না।

"নে নে তাড়াতাড়ি কর," শ্রাবণ তাড়া দিল সুমনকে।

সুমন ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কাপড় বের করার জন্য চাবিটা হাতে নিল, তারপর আলমারির দরজা খুলে সেখানে ঠায় দাড়িয়ে রইলো।

"কি হলো বের করে আন " শ্রাবণ প্যাকেট থেকে নিজের জন্য কেনা নতুন জুতাজোড়া বের করলো। শ্রাবণ জুতা আর বেল্টের ব্যাপারে ভীষন চুজি, ব্ল্যাক ওর অল টাইম ভেফারিট। কিন্তু এবার ব্রাউন কিনেছে... সুমোর ব্রাউন কালারের প্রতি উইকনেস আছে জানে শ্রাবণ।

আসলে আজ অব্দি শ্রাবণ জামা জুতো ম্যাচ করে পরতো বাইরের লোক বাহবা দিবে বলে, কিন্তু এখন সেই লোকগুলো পাল্টেগিয়ে একজন মানুষে হয়ে দাড়িয়েছে.... সুমোর চোখে ভাল না লাগলে পুরো চেষ্টাটাই বরবাদ।

"তুমি কোনটা পড়বে সেটা আমি কি করে জানবো, তুমি বলো আমি দিচ্ছি," সুমন উষ্মার সাথে জানাল। কিন্তু আসলে সুমন নিজেও জানে যে,  শ্রাবন এমন ভয়ঙ্কর কিছু বলেনি ওকে যে ওর বিরক্ত হতে হবে। শ্রাবনের কাপড়- চোপড় বরাবরই ওর তত্বাবধানেই থাকে। মাঝখানের কটা দিন হয়তো একটু এদিক সেদিক হয়েছে। কিন্তু সেটা এমন কোন দোষের কিছু নয়।

"না আমি বলবো না.... আজ তুই ঠিক করে দে। দেখি তোর সৌন্দর্যবোধ কেমন," শ্রাবন ফিচেল একটা হাসি দিল।

শ্রাবণের কথায় কেন... কে বলবে... বিছুটি পাতা গায়ে লাগার মতো জ্বালা করে উঠলো সুমনের অন্তর্আত্মা পর্যন্ত। কিন্তু জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হলে যদি এ অশান্তি শেষ হতো তাহলেও বোধহয় কিছুটা শন্তি পেত সুমন কিন্তু সেখানেও কোন আশার আলো নেই। সুমন জোরে জোরে শ্বাস ফেলে অভিমান দমনের বৃথা চেষ্টা করলো।

"আমার মনের কোন সৌন্দর্যবোধ নেই শ্রাবনদা তাছাড়া আমার অভিজ্ঞতারও যথেষ্ট  অভাব আছে। আমার উপর ভরসা করে কাপড় পরলে লোক হাসানোর মতো পরিবেশ তৈরী হতে মোটেই সময় লাগবেনা। তারচেয়ে তুমিই বলো কোনটা পরবে, আমি বের করে দিচ্ছি।"

একেবারে টান টান উত্তর সুমনের। কোথাও কোন দুর্বলতা নেই, আবার প্রয়োজনের চাইতে বাড়তি অহংও নেই....  কিন্তু কি যেন একটা.... দুর্ভেদ্য দেয়ালের মতো যেটা সুমনকে, শ্রাবণের থেকে আলাদা করে ফেলছে।

সুমনের কথায় শ্রাবণ কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে গেল। কথাগুলো কি সুমোই বললো! মাত্র কয়টা দিন.. এর মধ্যেই কি এতোটা বদলে যেতে পারে কোন মানুষ! কৈ ওর কাপড় তৈরীর সময় তো সুমো মানা করেনি কোনদিন, উল্টো ওর কাপড়ের হিসাব দর্জি ওর চাইতে সুমোর কাছে বেশি দেয়। তাহলে?

অভিমান...  টুং করে কানের গোড়ায় কেউ ঘন্টি নেড়ে বলে দিয়ে গেল শ্রাবণের। বেশ করে আরো হাঁকিয়ে হাঁকিয়ে বলো কাজের মানুষ। বেশ হয়েছে... এতোকাল বিনি পয়সায় সেবা পেয়ে এসেছ  আর এখন হেদিয়ে মরোগে যাও।

আরে তা হবে কেন..  আমি মোটেও বিনি পয়সায় কোন কাজ করাইনি কখনো সুমোকে দিয়ে বরঞ্চ ওর সমস্ত খরচ এতোকাল ধরে টেনে আসছি। নিজেই নিজেকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাল শ্রাবণ।

হাবা গঙ্গারাম... ভালোবাসার মানুষের পিছনে পয়সা খরচ করলে তার হিসেব নিতে আছে! পয়সা সেতো আদিত্যও নেয়নি, তাহলে কি দাড়ালো আগে থেকে পরিচয় থাকলে আদিত্যও সব ফ্রিতেই পড়িয়ে দিতো সুমনকে... তাহলে তো আদিত্যও, সুমনের জন্য সুপাত্র কি বলো?

উফফফফ......... এতো জটিল কেন সব। শ্রাবণের মনে হলো ওর মগজ গলছে এই সব অসুস্থ তুলনা করে করে। কে কার কি করেছে, কাকে ফ্রিতে খাইয়েছে, কাকে ফ্রিতে পড়িয়েছে তার হিসেব করতে গেলে ওর পাগল হতে দুই সেকেন্ড সময় লাগবে। তার চেয়ে সোজা রাস্তায় চলা ভাল। সুমো শুধু শ্রাবনের এই হলো শেষ কথা.. সে এ জন্মে হোক আর পরজন্মে। অন্যকারো হাতে সুমোর হাত সহ্য করা দূর...  মেহমানদারি করতে দেখলেও শ্রাবণের গা জ্বলে যায়, এর চেয়ে স্পষ্ট করে ভালোবাসার প্রতি অধিকার বোধ ওর আগে কখনো হয়নি। লাবণ্যর প্রতি সূক্ষ্ম একটা আগ্রহবোধ ছিলনা সেটা বললে মিথ্যে হবে, কিন্তু ভালোলাগা আর ভালোবাসায় একটা বিশাল ফারাক আছে মৌমি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে না দিলে সেটা জানতেই পারত না শ্রাবণ। লাবণ্য সব দিক দিয়ে সুমোর চেয়ে এগিয়ে... হোক সে সৌন্দর্য, শিক্ষা- দীক্ষা বা পারিবারিক অবস্থান। কিন্তু তারপরও এই শ্যামলা মেয়েটার মুখ না দেখলে শ্রাবণের দিন শুরু হওয়ার আগে শেষ হয়ে যায়। এই জিনিস হাজার লাবণ্য এসেও পূরন করতে পারবেনা... শ্রাবন তাই মনে মনে ঠিক করেছে লাবণ্যর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবে ও নিজের এতোবড় নির্বুদ্ধিতার জন্য। সাথে মৌমিতাকে ধন্যবাদ দিবে ওর চোখের সামনের পর্দাটা তুলে দেবার জন্য। কিন্তু তার চেয়েও জরুরি যেটা সেটা হলো এখন এই কঠিন সত্যটা সুমোর মাথায় ঢোকানো।কিন্তু সুমো ওকে সেভাবে ভালোবাসেতো?

খানিকটা ইতস্তত করেও শেষে পর্যন্ত সুমনের হাত দুটো ধরে ওকে নিয়ে বিছানায় বসাল শ্রাবণ। নরম স্বরে জানতে চাইলো

" তোর হয়েছেটা কি সুমো? "

শ্রাবণের কথা আর কাজ দুটোই আজ পাল্লা দিয়ে এতো  অস্বাভাবিক যে... দ্রুত শ্রাবণের হাত থেকে নিজের হাত দুটো টেনে সরিয়ে নিল সুমন," কি আবার হবে,কিছু হয়নি তো।"

"কেন অভিনয় করার চেষ্টা করিস সুমো...  তোর হাসির কোনটা আসল, কোনটা নকল আমার চেয়ে বেশি কেউ চেনে? তুই  একবার বল সমস্যাটা আসলে কোথায়..  আমার ভুল হলে আমি সেটা শুধরে নিচ্ছি।"

শ্রাবণের কথাটা সুমনের কচি মনের কোথায় গিয়ে ধাক্কা মারল একমাত্র বিধাতা জানেন। দুঃখগুলো আসলে বড়ই অবিবেচক... জাত-পাত, ধনী- গরীব কিছুই মানেনা। ভূমিকম্পের লাভার  মতোই সুমনের ভিতরের দুঃখগুলো তাই হালকা সমবেদনা পেতেই ছিটকে পড়ে পুরো এলাকাকে কাঁপিয়ে একদম তচনচ করে দিতে লাগলো।

শ্রাবণ এমন দৃশ্য যে আজ প্রথম দেখলো তা কিন্তু নয়। কিন্তু তার মনের পট পরিবর্তন বিশাল এক তারতম্যের সৃষ্টির কারন হয়েছে এখন। আগে যেখানে সুমনকে কাঁদতে দেখলে একরাশ বিরক্তি এসে ভর করতো সেখানে আজকাল থেকে থেকে নাম না জানা এক ব্যাথা যেন ঘিরে ধরে ওকে। খানিকটা সময়ের জন্য নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারায় শ্রাবণ। মন, শরীর কোনটাই  তখন আর সঙ্গ দিতে চায়না। প্রিয় মানুষটাকে দুঃখ পেতে দেখলে মানুষ এতোটা আলোড়িত হয়... এতো আবেগপ্রবন হয়, আগে জানা ছিলনা শ্রাবণের। সুমনের চোখের পানির প্রতিটা ফোঁটাও  আজকাল হীরার চেয়ে দুর্লভ লাগে
শ্রাবনের, সুমনের হাসির তুলনাটা না হয় তোলাই থাক। কিন্তু ওর কারনেই ভালোবাসার মানুষটা দুঃখ পাচ্ছে এর কি প্রতিকার করা যায় সেটাই প্রতিনিয়ত শ্রাবনকে এখন পোড়াচ্ছে।

ইচ্ছে হলো সুমোকে ভীষন জোরে জড়িয়ে ধরে, চোখের পানিগুলো এক নিমেষে শুষে নেয়...  কিন্তু ভাবা যতো সহজ করাটা কেন যেন তার চাইতে অনেক অনেক গুন কঠিন। জড়িয়ে ধরা দূরে থাক, আগের মতো সহজ ভাবে মারার জন্যও এখন আর হাত উঠেনা শ্রাবণের। কোথায় যেন একটা বড় ধরনের গোলমাল হয়ে গেছে। এখন সুমনের অনুমতি ছাড়া কোনটাই শ্রাবণের অধিকারে নাই...  মায়ের ইঙ্গিতপূর্ন যে কথাগুলো নিয়ে ভীষন রাগ হয়েছিল সেদিন... সেইসব পুরুষের দল আজকাল শ্রাবণকেও বড্ড ভাবায়। পরপুরুষ থাকলে তার বিপরীতে নিজের পুরুষ বলেও একটা শব্দ জন্মগত ভাবে থাকবে। সুমোর জীবনে সেই পুরুষটি কে? সে নিজে না আদিত্য নামের অচেনা কেউ... শ্রাবন জানেনা।

কতটা সময় সুমনের দিকে অপাঙ্গ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল জানেনা শ্রাবণ। কিন্তু দেয়াল ঘড়িতে ঢং করে শব্দ হতেই নিজেকে দ্রুত সামলে নিল সে।

আজকাল  সুমোকে  চুরি করে দেখতেও বেশ লাগে শ্রাবনের, কেমন বুক ঢিপঢিপ করে। প্রথম প্রেম... আনকোরা অনুভূতিগুলো ছুঁয়ে যায়।
সুমনের মুখটা এই মুহুর্তে ঠিক কিসের সাথে তুলনা করা যায়... মিল খুঁজছিলো শ্রাবণ। পাহাড়ের চূড়ায় যখন সন্ধ্যা নামে, মেঘের দল যখন সেই রঙটা শুষে নেয়.... অপার্থিব, মনলোভা কৃষ্ণচূড়ার মতো। সুমোকে ঠিক সন্ধ্যার গোধূলি বেলার মতো লাগছে যেখানে হেলান দিয়ে শ্রাবণ ডুবতে চায় ক্লান্ত হয়ে, কিন্তু সুমোটা কেন যে বুঝতে চাইছে না।

"নাহ এমন করে কাঁদলে আর আজ আমার কোথাও যাওয়া হলো না, " শ্রাবণ মাথা নাড়ে। ওর দিকে কোন মনযোগই নেই সুমোর। একমনে তানপুরার সুর তুলে কাঁদছে।

"না..  না..  তা কেন? তুমি বলো কোন রঙেরটা পরবে আমি এক্ষুনি নামিয়ে দিচ্ছি।"

"তোর মনের রঙেরটা "

"মানে? "

"মানে তোর মনটা এখন কুটকুটে কালো হয়ে আছে তেমন একটা।"

সুমন ভিতরে ভিতরে ভিতরে চমকে উঠে। ওর মনের রঙ আজকাল দেখতে পায় নাকি শ্রাবণদা।

"যাহ..  আর জুতো অমন খয়েরী! "

"হ্যাঁ, ভালো লাগবে না? " খানিকটা চিবিয়ে চিবিয়ে বলে নিজের রাগ ঝারল শ্রাবণ। এই মেয়ে ওকে সারাজীবন জ্বালাবে। ওর... ওর পিন্ডি চটকে খাবে....

"কি যে সব বলো  "শেষ পর্যন্ত উঠে গিয়ে একটা ক্রীম কালারের স্যুট বের করলো সুমন। "ওই জুতা পরলে এটা মানাবে। কালো তো সবসময়ই
পরো।

"দে...  "একটানে সুমনের হাত থেকে স্যুটটা নিয়ে বিছানায় ফেললো শ্রাবণ।

"আমার তোয়ালটা একটু ভিজিয়ে আনতো সুমো.. বাথরুম থেকে।"

সুমন তোয়ালের কোনটা ভিজিয়ে হালকা নিংড়ে নিয়ে ঘরে পা দিতেই থমকে গেল। শ্রাবনদা পুরো  শার্ট খুলে দাড়িয়ে আছে ঘরের মাঝখানে। সুমন আস্তে করে তোয়ালেটা চেয়ারের উপর রেখে কেটে পড়তে চাচ্ছিলো কিন্তু ফেঁসে গেল।

"এই তুই কোথায় যাচ্ছিস? আমার পিঠটা ভালো করে মুছে পাউডার দিয়ে যা।"

"আ..... মি! "

"হ্যাঁ, কেন, কোন সমস্যা? "

"শ্রাবনদা আমার অনেক কাজ....  মামী বার বার বলেছে খেয়ে থালা বাসনগুলো সব ধুয়ে ফেলতে কিন্তু আমি না করেই চলে এসেছি।"

"তো ঠিক আছে চলে যা...  কিন্তু তুইতো আমাকে এবেলার হিসাবটাই দিসনি, সাথে ছোট্ট একটা কাজ দিলাম সেটাও করলিনা আবার বললিও না আমার  অপরাধটা কী? এটা কি ঠিক সুমো? তোর সমস্যাটা কি সেটাতো অনন্ত আমাকে বলা যায় নাকি? "

"না মানে,"  সুমন আবারো ঢোক গিললো। ওর সমস্যার কথা কি করে শ্রাবনদাকে বলবে সুমন....  আজকাল শ্রাবনদাকে খালি গায়ে দেখলে ওর গা কেমন শিরশির করে, হাত পা কাঁপে,  গলা শুকিয়ে আসে অথচ দুই মাস আগেও এরকমটা হতো না। শ্রাবনদা পিঠে  চুলকে দিতে বললে উল্টো মনমতো খামচি দিয়ে চলে যেত উপরি খাটানোর জন্য।

"কি হলো ওরকম হিক্কা তুলছিস কেন? " শ্রাবণ ভ্রু কুঁচকে জানতে চাইলো।

"কি... কিছু না...  তু.. তুমি আমাকে সেদিন কাজের লোক বলে অপমান করেছ..  আমি তোমার কোন কাজ করে দেবনা ব্যাস।  আমি এখন চললাম।"

"আশ্চর্য কাজের লোক বলেছি তাতে রাগ হচ্ছে.... তাহলে কি অকর্মার ঢেঁকি বললে খুশি হতি?  আজকাল ভালো মানুষের কথার কোন দাম নেই, যারা শুধু গাল ভরা কথা বলে চাটুকারিতা করতে পারবে তাদের জয়জয়কার।"

"সে করুক তারপরও তারা তোমার মতো আমার সাথে ঝগড়া তো করেনা। তুমি একটা ঝগড়ুটে।"

"সুমো বেশি হচ্ছে কিন্তু।  অনেকদিন মারিনা বলে আর কোনদিন মারবনা তার কিন্তু কোন গ্যারণ্টি নেই।"

"পারবেনা কেন.... তুমি তো কেবল ওই পারো"

"আচ্ছা ইচ্ছে করে ঝগড়া কেন বাধাচ্ছিস বলতো ? আমি কতবার করে বলছি আমার অনেক বড় ভুল হয়েছিল , এ জন্মে আর তুই কাজের এ কথা  আমি মুখ দিয়েও বের করবনা।"

"শ্রাবনদা.... "

"কী... "

"আজ সকালে একশ টাকার পাখির খাবার আনা হয়েছে  আর বলাইদা বিশটা টাকা নিয়েছিল বিড়ি খাবে বলে। এই খরচ হয়েছে,আমি গেলাম এখন।"

"সু.. সুমো...  আরে শোন..  ভালো দেখে কাপড় পরে চলে আয়, আজ তোকে ফুচকা খাওয়াবো।"

কিন্তু সুমন ততক্ষণে সিড়ি বেয়ে নিচে চলে গেছে। ফুচকা.....  কাল সকালের আগে ও আর এবাড়ি মুখো হচ্ছে না।

চলবে......

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro