প্রোমো-১
নেহা আবার ঘড়ি দেখলো। তাঁর হসপিটালের গাড়ি চলে এসেছে।
---ফুফু শুনো, এরকম ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদবে না। এই পৃথিবীতে তুমি কাঁদতে আসোনি। কান্না কখনোই কোনো মতামত আদায়ের হাতিয়ার হতে পারে না।
---আমার ছেলে আমার কাছে থাকতে চায় না। আমি কাঁদবো না? আমি পায়ে ঘুঙুর পরে নাচবো? সতেরো বছর পর আমার ছেলে দেশে এসেছে। এসে বলছে, তাঁর এদেশে কোনো টান নেই, কোনো শক্ত আকর্ষণ নেই। সে আবার চলে যাবে। আর আমি কাঁদবো না। আমি তাঁকে শিকল দিয়ে আটকাবো না?
নেহা তাঁর ফুফুর চোখ মুছিয়ে দিলো।।
---ছেলেকে আটকে রাখার জন্য বিয়ে কখনোই কোনো শিকল হতে পারে না ফুপু। কারো সাথে বিয়ে দিয়ে বউয়ের শিকলে তুমি ছেলেকে কেনো বাঁধবে বলো? তুমি তোমার ছেলেকে তোমার ভালোবাসায় বাঁধবে, তোমার মমতা দিয়ে বাঁধবে। মায়ের মমতার চেয়ে শক্ত শিকল পৃথিবীর কোথাও তৈরি হয়নি ফুফু। তুমি তোমার ভালোবাসার শিকল তাঁর গলায় পরিয়ে দাও।
---ভালোবাসি বলেই তো চাই, তোর মত কেউ তাঁর আপন হোক। তুই আমার ছেলেকে দেখ্। সে চাঁদের টুকরো ছেলে। এমন চাঁদের টুকরো ছেলে তুই দ্বিতীয়টি পাবি না নেহা।
---চাঁদের টুকরোর আমার কোনো দরকার নেই ফুফু? এমনিতে আধখানা চাঁদও আমার অপছন্দ। তাছাড়া চাঁদের টুকরো এখানে পৃথিবীতে কি করছে? সে কেনো আকাশে বিয়ে করছে না। হোয়াই?
---আমি বাবুকে তোর কথা বলেছি। বাবু রাজি। বিকেলে আমি বাবুকে তোর চেম্বারে পাঠিয়ে দিবো। দেখে যদি তোর মনে ধরে যায় আর তখন বিয়ে বসতে কেঁদে আমাকে ফোন করিস,তাহলে কিন্তু আমি জানি না।
---ফুফু চেম্বারে কাউকে পাঠাবে না। প্লিজ। আর শোনো, একটা ধাড়ি ছেলেকে এরকম বাবু বাবু বলে ডাকবে না। শুনতে নেকু নেকু লাগে। মনে হয় ফিডার মুখে, গলায় বিফ বেঁধে তোমার সত্যিই একটা বাবু আছে। যাকে কাত-চিত করে কোলে নিলেই বমি করছে...
ফুফু এবার টেবিল থেকে একটা প্লেট ছুঁড়ে ফেললেন মেঝেতে।
---প্লেট কেনো ভাঙলে ফুপু? এটা ভাইয়ার প্রিয় প্লেট ছিলো। উফ্।খালি ধ্বংস!
নার্গিস সুলতানা উঠে দাঁড়ালেন।
---হালিম, আমার ছেলে বিকেলে তোর মেয়ের চেম্বারে যাবে। তোর কি দেখার দরকার আছে?
---ফুফু বললাম তো কেউ যাতে আমার চেম্বারে না আসে...
---চেম্বার কি তোর বাপের যে আমার ছেলে যেতে পারবে না? আমার ছেলের যেখানে খুশি সেখানে যাবে। দরকার হলে আমি তাঁকে টরেন্টোর দাঁতালদের টিমে ভর্তি করে দেবো। তাঁর দাঁত ভালো। মুক্তোর মত ঝকঝকে। তোর মত গ্যাজাই যদি দেশ ঘুরে ঘুরে দাঁতের ক্যাম্পেইন করতে পারে, আমার ছেলেও দাঁতের ক্যাম্পেইন করবে। তুই মানা করার কে?
---আমি মানা করছি না ফুফু, শুধু বলছি তোমার ছেলে আমার চেম্বারে এলে আমি কিন্তু তাঁর সব দাঁত তুলে ফেলবো। চাঁদের টুকরোর মুখের ভেতরেও তখন চাঁদ দেখা যাবে। মুক্তো উধাও হয়ে যাবে।হুহ…
নেহা ধুপধাপ করে বেরিয়ে এলো। তাঁর খুব কান্না পাচ্ছে। খুউবব! ফুপুর ছেলেকে বিয়ে করতে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। বরং বিয়ে করতে তাঁর বেশ ইচ্ছেই করছে। ছাব্বিশ বছরের এই অনাদরের জীবনে এখন কারো আদরের সঙ্গী হতে বেশ ইচ্ছে করছে। পুরুষ সান্নিধ্যবিহীন জীবন তাঁর কাছে খুব তেতো ঠেকছে ইদানীং । কিন্তু নেহার তো এই ইচ্ছেটাকে গুরুত্ব দেবার একদম সুযোগ নেই। একদমই নেই... তাঁর যে অনেক কিছু মেটাবার আছে! এত সময় কি সে পাবে?
#কুন্দনিকা
#তৃধা_আনিকা
#শীঘ্রই_আসছে...
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro