শেষ পর্যন্ত - ২
বারান্দার রেলিং ধরে বসে আছে আসমানী। বাইরের প্রকৃতির সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করতে পারছে না। সে তাকিয়ে আছে বিশাল বাগানের একপাশে থাকা সাদা দোলনাটার দিকে। ঝাপসা প্রকৃতির মাঝে উজ্জ্বল হয়ে আছে দোলনাটা।
“আইচ্ছা দাদী, আফামণির নামের মানে কি?”
আজমেরি বেগম আকাশ দেখছিলেন একমনে।সেভাবেই উত্তর দিলেন,“আয়না ”
“সুন্দর মাইনষের সুন্দর নাম। আফামণির বিয়া হয় নাই?”
“হুমম ”
“তার স্বামী তো এতদিনে একবারও আইলো না! আর আফামণি কি সারাজীবন এইখানেই থাকবেন?”
“তোর আপামণিরও অনেক আত্মসম্মানবোধ।কখনো কারো উপর নির্ভর করে না।নিজের রোজগার নিজে করে। কত বড় ডাক্তার জানিস! এটাই ওর কাল হলো।”
দীর্ঘশ্বাস ফেললেন আজমেরি বেগম। আরশি তার খুব আদরের। এই মেয়েটার মায়াবী, শান্ত, স্নিগ্ধ চেহারায় তিনি দুঃখের ছাপ দেখতে পারেন না।
“আফামণির মত ভাল মানুষের জীবনেও দুঃখ আছে!”
আসমানী নড়ে চড়ে বসলো। তার বেশ কৌতূহল হচ্ছে। কি সুন্দর টানা টানা চোখ, লম্বা চুল! কি সুন্দর করে কথা বলেন! গ্রামের মানুষ একটু অসুস্থ হলেই তার কাছে ছুটে আসে। এমন মানুষের জীবনে কষ্ট থাকবে কেন? কষ্টতো থাকবে তার মত আসমানীদের জীবনে, যাদের দু’বেলা সৎ মায়ের অত্যাচার সহ্য করতে হয় ; বাবা ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে বয়স্ক লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়!
আজমেরি বেগম চোখ বন্ধ করে ফেললেন।সে মনে প্রাণে চায় আরশির জীবনে ভালবাসার যা কিছু আছে সব সে পাক।
“জানেন দাদী, গতকাল আফামণির নামে একটা চিঠি আসছিলো। আমি তারে দিছিলাম।”
“ওমা! কার চিঠি এল আবার? তা হ্যাঁ রে, কার চিঠি তুই জানিস? নাম দেখেছিলি? তুই তো একটু আধটু পড়াশোনা জানিস”
“দেখছি তো। কি কঠিন নাম! কি জানি ছিল....হ মনে পড়ছে... নাম লিখা ছিল ‘নীলাদ্রি হক’।”
******************************************************************************
চলবে...
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro