চেনা-অচেনা-৩
"শুনুন‚আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি। তাও অনেকদিন ধরে। সো..স্টপ ফলোয়িং মি"
সোহেল দিব্যকর্ণ দিয়ে আবিরের হার্টের চেম্বার ভাঙার শব্দ শুনতে পাচ্ছে। ওহ্! ব্যাপার তাহলে এই..
*******************************************
মা আবার বিয়ের বার্তা আনলেন।তবে এবার আর একা নয়। বাবা‚ভাইয়া‚ভাবি এমনকি পাঁচ বছরের ছোট ভাতিজা সমেত! মাকে বিচারকের মত দেখাচ্ছে। তার রায় হল আবিরের সাফাকে বিয়ে করতে হবে। আবিরের মত ধোপে টিকল না।অন্তত পাত্রী দেখতে তো যেতেই হবে। আবির রাজি হল এই ভেবে‚ সাফাকে অন্তত বলা যাবে যে সে অন্য কাউকে পছন্দ করে।
ভালোবাসা দিবসের দিন পাত্রী দেখতে যাওয়া ঠিক হলো। আবিরের চোখ কপালে উঠল যখন সে দেখলো তারা সবাই সোহেলদের বিল্ডিংয়ে ঢুকছে।
সর্বনাশ! মা আবার সাফার পরিবর্তে সোহেলের ছোট বোনকে বউ করার কথা ভাবছে না তো!
আবিরের মনে হল তার বুকের ওপর থেকে যেন একটা পাথর নেমে গেছে‚যখন তারা সোহেলদের ফ্ল্যাট পার করে গেল। আর যাই হোক‚যাকে এতদিন ছোটবোনের মত দেখে এসেছে‚তাকে বিয়ে করতে হচ্ছে না দেখে একরকমের প্রশান্তি লাগছে।
কিন্তু আবিরের জন্য আরো বড় চমক বাকি ছিল। আবিরের মা বেল বাজানোর কিছুক্ষণের মধ্যে যে মেয়েটা দরজা খুলল সে আর কেউ নয়‚ছাদের সেই মেয়েটা!
এবং অত্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে এই মেয়েটাই 'সাফা'!
**********************************************
আবির আর সাফা সেই ছাদেই দাঁড়িয়ে আছে যেখানে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল।
"আবির‚শেষ পর্যন্ত কিনা তোর আমাকেই বিয়ে করতে হচ্ছে! আমি কিনা আন্টির সেই অতি কাঙ্ক্ষিত সবজিওয়ালি!!"
আবিরের মুখে ম্লান হাসি।
"তুই তো আবার অন্য কাউকে ভালোবাসিস", ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেলে সে বলল‚" ঠিক আছে‚আমি সবাইকে বোঝাবো"
সাফার মেজাজ বিগড়ে গেছে। ইচ্ছে করছে উল্লুকটাকে ধরে আচ্ছামত কয়েক ঘা দিতে।
"কি বোঝাবি তুই? ব্যাটা আহাম্মক! উযবুক! উল্লুক! মাথায় কোনো বুদ্ধি নেই‚গর্ধভ!"
"আরে‚গালাগালি দিচ্ছিস কেন? তুই-ই তো সেদিন বললি"
"তুই এতদিন আমার সাথে কথা বুঝতে পারিস নি যে আমি তোকেই ভালোবাসি! খালি তো হাতে-পায়েই বড় হয়েছিস‚বুদ্ধি তো হাঁটুর গোড়ায়!"
"আগে বলিস নি কেন?", আবিরের হার্ট খুশিতে সমারসল্ট মারছে।
"শালা‚তার আগেই তো প্রেমের গল্প ফাঁদলি। ঐদিন আমার যে কি রাগটা হয়েছিল! ইচ্ছে করছিল তোকে খুন করি!"
আবির হো হো করে হেসে উঠল। এতে সাফার মেজাজ সপ্তমে চড়ে গেল।
"তুই কি পেপসোডেন্ট বা কোলগেটের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নাকি? আরেকবার দাঁত বের করলে হাতুরি দিয়ে সব দাতঁ ভেঙে দেব", সাফা রাগত স্বরে বলল।
মেয়েটা রেগে গেলে ওকে আরও সুন্দর লাগে। আবির ছাদের গোলাপ গাছের হলুদ গোলাপটা ছিড়ে সাফার সামনে ধরে বলল,
"রাজকুমারী সাফা‚আপনি কি উপহার হিসেবে আমার ভগ্ন হৃদয়টি গ্রহণ করবেন?"
"সরি‚রাজকুমার আবির‚ আমি সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস গ্রহণ করি না। তবে আপনি হাঁটু গেড়ে বসলে বিবেচনা করা যেতে পারে", সাফা হেসে ফেলল।
আবির হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। এই অদ্ভুত মেয়েটার হাসিমাখা মুখের দিকে তাকিয়ে সহজেই একটা জীবন পার করে দেয়া যায়।
*************** সমাপ্ত ***************
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro