কোন এক দিন
আইসক্রিমের বক্স নিয়ে জানালার পাশে দাঁড়ালো সবে সুমন। চামচ নিয়ে তুলে তুলে খাচ্ছে। এই অভ্যাস বাসার সবার খুব অপছন্দ। তাতে থোড়াই কেয়ার করে সুমন। কিছুটা খেয়ে টেবিলের উপর বক্স রেখে ড্রয়িং কপি নিয়ে বসলো। কাল জমা না দিলেই নয়। এই ঝামেলা আর বয়ে বেড়াতে পারছে না সে। তবে মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে। আকাশের রঙটা বেশ লাগছে আজ। একটু চেষ্টা করে দেখা যাক কেমন ড্রয়িং শেখা হল তার.......
অন্যদিকে লাইব্রেরিতে না গিয়ে বাড়ি ফিরে এলো শ্রাবণ। জ্বর জ্বর লাগছে। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বেশ কড়া এক কাপ চা খেল। ভর দুপুরে চা খেতে দেখে বেশ অবাক হলেও কিছু বললো না তার মা। এই বয়সে কত কিছুই না করতে ইচ্ছা হয়......চা নিয়ে সোজা জানালায়। বেশ লাগছে আকাশটা। জ্বর ভাব থাকলেও দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে তার।
চা খেতে খেতে অন্যমনস্ক হয়ে সামনে তাকাতেই দেখলো এক মেয়ে। কিছুক্ষন বাইরে তাকাচ্ছে আবার খাতায় কি যেন করছে। বেশ কিছুক্ষন পর বুঝলো বাইরে থেকে দেখে দেখে কিছু একটা কপি করছে মেয়ে। আবার কি যেন খাচ্ছেও। গায়ে জ্বর ভাব নিয়ে এই দৃশ্য যেন তার মাথায় গেঁড়ে বসলো। এমনিতেই জ্বর নিয়ে যা দেখে যা শুনে তাই মাথায় গেঁড়ে বসে। আবার আকাশটাও আজ যেন একটুকরো ভালোবাসা...
পাঁচদিন হলো জ্বর ছেড়েছে শ্রাবণের। তবে বিকেলে জানালার পাশে দাঁড়াতে ভুল হয়নি তার। যদি দুই বেণি করা সেই মেয়েকে চোখে পড়ে..... কেন জানি সেইদিনের দৃশ্যটা মুছতে পারছে না শ্রাবণ। অবশ্য লাফাতে লাফাতে দুই একবার জানালার কাছে দাঁড়িয়েছিলো। আবার বেণি দুলিয়েই বিদায় নিয়েছেন তিনি। ধন্য শ্রাবণ..... কেন জানি মেয়েটাকে বারবার দেখতে ইচ্ছে করছে। শান্ত রূপে.... সেইদিনের মতো।
অবশেষে বন্ধুর সহায়তায় ঝুঁকিটা নিলো শ্রাবণ। নিজের নাম্বার নিয়ে দরজায় ঠকঠক নেড়ে কাগজটা ফেলেই দৌড়ে নিচে নামলো শ্রাবণ। বুকটা ধুকপুক করছে। নাম্বারটা কার হাতে পড়বে কে জানে।
উল্টোপাল্টা কিছু হলে.......আর ভাবতে পারছে না শ্রাবণ।
অবশেষে...... খুশিতে দুই একপাক ঘুরলো শ্রাবণ। ভাগ্য সহায় হয়েছে তার। নাম্বারটা দু ' বেণির হাতেই পড়েছে। স্রষ্টার অশেষ কৃপায় ফোনও দিয়েছেন তিনি। তবে ল্যান্ডলাইন থেকে। মোবাইল ব্যবহার করার অনুমতি এখনো আসেনি তার। টুকরো টুকরো কিছু কথা হলো তাদের। কি কথা হলো তা আর ভাবতে চাচ্ছে না শ্রাবণ। তখন দুজনের গলাই উত্তেজনায় কাঁপছিল। শ্বাস ফেলছিল জোরে জোরে। সে শব্দ শোনা গেছে ভালোমতোই। তবে কথাগুলা দুজনেরই থাক শুধু। একান্ত ব্যক্তিগত হয়ে। প্রথম বলে তো কিছু একটা আছে নাকি?
ল্যান্ডলাইন দিয়ে কথা বলে সুমনা। তাই শ্রাবণ বেশি আর এগোয় না। দেড় - দুইদিন পর পর কথা হয় তাদের। বাকি সময়ের আক্ষেপটা মেটায় জানালার পাশে তাকে দুই বেণি ঝাঁকাতে দেখে। নিজের অজান্তেই হেসে ফেলে শ্রাবণ। এই দুই বেণির প্রেমেই সে পড়লো। আবার আজকাল চোখের সামনে এই দুই বেণি দুলছে ভীষণ। কি আশ্চর্যের ব্যাপার ঘটছে এটা? তাল মেলাতে পারে না সে।
বেশ কাটছে সুমনের দিনকাল। সেইদিনের সেই বিচ্ছিরি ড্রয়িংটা ছিঁড়ে ফেলেছে সে। কি কুক্ষণে সে আকাশ দেখে ছবিটা আঁকতে গেলো কে জানে। অত বড় মাপের শিল্পী সে কখনোই হতে পারবে না। আকাশ দেখে ছবি আঁকা। হুহ। এর চেয়ে সাধারণ ভাবে আঁকলে হয়তোবা আরও দুটোদিন বাঁচতো। তবে বিচ্ছিরি ড্রয়িংটা ছিঁড়ে আবার রেখেও দিয়েছে সে। ওটা করতে গিয়ে সামনের বাসার এক বান্দার সাথে তার চোখাচোখি হয়েছে কিনা। বেশ খেয়াল করেছে সে। তার বান্ধবীদের বদৌলতে সে আবার এ সম্পর্কে একটু আধটু জানছে ইদানীং। মানে বিশেষ কিছু অনুভূতি সম্পর্কে বেশ ভালোই ধারণা পাচ্ছে সে।
সেও বুঝতে পারছে আকাশের রঙগুলো অন্য চোখে দেখবার সময় চলে এসেছে। সাদামাটা আকাশটা এই রঙিন হলো বলে
বেলা গড়াবার সাথে সাথে শ্রাবণও একটু গড়িয়ে নিচ্ছে। বেশ হ্যাপা পোহানো লাগলো। পরীক্ষাটা বড্ড যন্ত্রণা দিয়েছে এবার। জ্বরটা বেশ কাবু করেছিলো তাকে। আবার জ্বরে পুড়ে আরেকটা কান্ড ঘটিয়েছে । দু ' বেণির প্রেমে একদম পা পিছলে পড়লো সে। পড়েছে তো পড়েছেই, আর উঠেই দাঁড়াতে পারলো না! এমন সর্বনাশও ঘটতে আছে? হাসছে শ্রাবণ। পরীক্ষার সময় সুমনের সাথে কথা হয়নি তার। যদিওবা হয়েছে তাও দু এক মিনিট। পড়ায় বেশ গ্যাপ পড়েছে শ্রাবণের। তাই সুমনও আর বিরক্ত করেনি।
দু একদিনের মধ্যে সুমনও হাত পা ঝেড়ে বেশ আয়েশ করে বসলো কথা বলতে শ্রাবণের সাথে। বেশ কিছুদিন কারোরই ব্যস্ততা নেই। তবে শ্রাবণ আর তার বন্ধুরা ট্যুরে যাবে। নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় কিনা তা বুঝা যাচ্ছে না। চুটিয়ে কথা বলতে হবে এ কয়দিন।
আবার সুমনও তার নানাবাড়ি যাচ্ছে। যাক দুজনেই ঘুরতে যাচ্ছে। তবে বেশ কিছুদিন কথা হবে না। তাই প্রচুর কথা বলছে। মাঝে মাঝে তারা দুজনেই চুপ হয়ে যায় কথা বলতে বলতে। অবশ্য দুজনের নিশ্বাসের আওয়াজ সেই শব্দহীনতার আক্ষেপ মেটায়।
বেশ কিছুদিন ধরেই সুমনদের বাড়িতে ঝামেলা চলছে। ছোট বলে তাকে বলা হয় না। সে নিজেও কিছু বুঝতে পারছে না। শ্রাবণের প্রেমে হাবুডুবু না খেলে ঠিক ধরতে পারতো। ওইটুকু সময় বাসায় নজর রাখলে ঠিক হতো। তবে আজকাল যা হচ্ছে না তার। সময়ে অসময়ে চুম্বকের মতো সেঁটে থাকে জানালাতে। বাসায় ঠিকই কিছুটা আন্দাজ করতে পারছে। আবার ল্যান্ডলাইনে কথা বলা বেড়েছে কিনা। ঝামেলার জন্য বাসায় অবশ্য এই জিনিস লক্ষ করলেও ঠিক গুরুত্ব দিচ্ছে না। সুমনও কম সেয়ানা না। বেশ সাবধানে থাকছে। এতো কিছুর তাল সামলাতে গিয়ে কি নিয়ে ঝামেলা লাগলো তা বুঝতেও পারছে না বা কাউকে জিজ্ঞেস করতেও পারছে না। গলা ছেড়ে কাঁদবে কি? কি এক তালগোল পাকালো সে? ঝামেলাটা বেশ বড় বলেই মনে হচ্ছে তার।
শ্রাবণ বাবা মায়ের আদরের একমাত্র ছেলে। একমাত্র বলেই কিনা মা তাকে খুব একটা বাইরে যেতে দেন না। অবশ্য এলাকার পরিবেশও ঠিক তাদের সাথে যায় না। শ্রাবণ প্রায় বলতে গেলে কাউকেই চেনে না। সুমনের মুখেই শুনলো যে কিছু বখাটে ছেলে তাকে আর তার বড় বোনকে বাঁকা নজরে দেখে। তবে বড় আপুকে জ্বালায় বেশি। শুনেই কেমন যেন হাত মুঠো করে ফেলেছিলো শ্রাবণ। প্রথম প্রেমের জোয়ারে ভেসে গিয়েই সে ছেলেগুলোকে মারতে চাইছিলো। কিন্তু মায়ের মুখটা মনে পড়ছিলো খুব। আবার সুমন মানা করাতে আর কিছু করেনি। তবে সেইদিন নাকি এক বখাটে সুমনের পিচ্চি ভাইকে ডেকে চকলেট দিতে চেয়েছিল। দেখতে পেয়ে সুমন টান দিয়ে ভাইকে নিয়ে আসে। উল্টোপাল্টা যদি কিছু করে? তাই দুজনেই ভয় পাচ্ছিলো। তবে শ্রাবণের ট্যুরে থাকার সময় সুমনও নানাবাড়ি থাকবে। তাই আর চিন্তা না করে শ্রাবণ ট্যুরের প্ল্যান করছে। আর কথা তো চলছেই সুমনের সাথে।
অবশেষে শ্রাবণ রওনা হলো। গতকাল কথা হলো একটুখানি। মন ভরলো না তাতে। সুমনও রওনা হবে কাল। তাই তাকেও আর বিরক্ত করলো না। বগুড়া যাচ্ছে সুমন। নানাবাড়ি। গোছগাছ করতে হচ্ছে। বেশ কিছুদিনের বিচ্ছেদ। কি আর করা। হাসিমুখেই সমস্তটা শেষ হলো। আপাতত নিজ নিজ কাজে মনোযোগ দুজনেরই।
.
.
.
শ্রাবণের ভালো লাগছে ঘুরতে। দুই বেণির কথা মনে পড়লেও কিছুই করতে পারছে না। নেটওয়ার্কও নেই। সুমনের নানাবাড়ির নাম্বারও জানে না। আপাতত পুরান স্মৃতি মনে করো বসে বসে। দুইদিন হলো এসেছে। আজ একটু দূরে ঘুরতে যাবে ওরা। ফোন, জরুরী জিনিস একটা ব্যাগেই নিলো শ্রাবণ। ক্যামেরা অবশ্য হাতে আছে। শ্রাবনের প্ল্যান আছে আজ ওর বেস্ট ফ্রেন্ডকে সমস্তটা বলবে। ওর জন্যই তো নাম্বারটা দেয়ার সাহস করলো। আর ওকেই কিছু বললো না? ব্যাপারটা টের পেয়ে খারাপ লাগছে শ্রাবণের।
মাত্র পাঁচজন দলে। হাঁটছে ওরা। এর মধ্যেই বাজে একটা ব্যাপার ঘটলো। বন্ধুকে ঘটনা বলতে গিয়ে পুরা দলই জেনে ফেললো। সবাই মজা নিচ্ছে শ্রাবণের। এতে শ্রাবণ লজ্জাও পাচ্ছে , ভালোও লাগছে আবার সুমনকে দেখার জন্য মন কেমন করছে। এতো অনুভূতি একসাথে টের পেয়ে কোনটা প্রকাশ করবে শ্রাবণ তা বুঝতে পারলো না। এতে করে আরও অদ্ভুত মুখভঙ্গি হলো তার। আবার যা হওয়ার তাইই হলো। বিচ্ছু বন্ধুগুলো সেটাও টের পেলো। আর তাদের পায় কে......
কয়েকটা ব্যাগ নিয়েছিল শ্রাবণরা। এর মধ্যে একটা ব্যাগ যত্নেই রেখেছিল। ছবি তোলার সময় একসাথে রেখে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। মিনিট পাঁচেক পর ফিরে এসে ব্যাগের খোঁজ নিতেই মোটামুটি বাজ পড়লো শ্রাবণের মাথার উপর। তার ফোন, জরুরী জিনিসওয়ালা ব্যাগ আর সেখানে নেই। লোপাট হয়ে গিয়েছে। আরেকটা ব্যাগও লোপাট হয়েছে। তবে শ্রাবণের তো প্রায় সব জিনিসই গেলো। আশেপাশের সবাইকেই তো ভদ্র মনে হয়েছিল। কার মনে কি চলে আসলেই বুঝা যায় না। আপাতত বন্ধুদের ফোন থেকে বাড়িতে কথা বলা যাচ্ছে। সে তো বলা যাবেই। কিন্তু সর্বনাশ হল তখনই যখন শ্রাবনের মনে পড়লো সুমনের কাছে ওর হারিয়ে যাওয়ার নাম্বারটা ছাড়া আর কোনো নাম্বারই নাই। সিমও রেজিষ্ট্রেশন করেনি সে। বাসায় অবশ্য কাগজটা আছে। গিয়েই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিম উঠিয়ে ফেলবে। মোটকথা সুমন নানাবাড়ি থেকে না আসা পর্যন্ত দেখা তো দূরে থাক, কথাও হচ্ছে না। আবার এও ভেবে আফসোস হচ্ছে শ্রাবণের কেন যে সুমনের নানাবাড়ি ঠিকানা আর ফোন নাম্বার রাখলো না। ভেবে আবার নিজের অজান্তেই হেসে ফেলে শ্রাবণ। দূর। দেখা তো হবেই। এই কয়দিনের বিচ্ছেদ যদি সহ্য নাই করা যায় তবে সুমনকে দেখে যে অনুভূতিটা হয় তার নামটা ভালোবাসা দেবে কি করে শ্রাবণ।
বগুড়া এসে পৌঁছেছে সুমন। মাথা ব্যথা ভীষণ কিন্তু মায়ের মুখ দেখে আর সাহস হচ্ছে না কিছু বলার। বাসা থেকে বের হবার পরই মায়ের মুখ গম্ভীর। কেঁদেছে যে সেটা আন্দাজ করা যায়৷ যাকগে সে নিয়ে না ভাবলে হবে তার। এখন বেড়ানো হবে তার। এটা নিয়ে ভাবতে হবে।
দিন আনন্দেই কাটছে সুমনের। মাঝে মাঝে কিছু কিছু মনে হচ্ছে তবে সেগুলো চেপে রাখাই এখন শ্রেয়। এখানেও চাপা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ঝামেলাটা কি বাড়তি আকার ধারণ করছে? আচ্ছা পাড়ার সেই শয়তানগুলো নয় তো? বড় আপুকে বেশ জ্বালাতো তারা। আবার তার পিছনেও লেগে ছিলো কয়েকদিন ধরেই। ছেলেগুলো খুব খারাপ। এখানেই ভয়টা লাগছে তার।
এক সপ্তাহ গেলো। সুমনের আর ভালো লাগছে না। মা খারাপ ব্যবহার করছে তার সাথে। আপু তো সেদিন বিনা কারনেই মার খেলো। মেরেই মা আবার আপুকে জড়িয়ে ধরে কি কান্না। এ আজব ব্যবহার অদ্ভুত লাগছে সুমনের কাছে। কিছু তো জানা যাবে। এমনভাবেই ঘটনা লুকাচ্ছে সবাই, জানার কোনো পথই আর খোলা নেই। বাবাও এসেছেন গতকাল।
কি করে যেন সবাই জেনে গেছে ছোট ভাইকে চকলেট দিতে গিয়েছিল ওই বখাটে ছেলেটা।
তারপর তো তারপরই। বকার আর শেষ আছে?তবে চকলেটটা নিতে দেয়নি সে। তারপরও সবার ব্যবহার অবাক ঠেকছে। বেশ বুঝতে পারছে শুরু থেকেই ঝামেলাটা ওই বখাটেদের নিয়েই।
শ্রাবণের প্রেমে নাক কান গুঁজে ছিলো তাই আর টের পেলো না। এখন হয়েছে তো। শ্রাবণেরও খোঁজ নেই আর। লুকিয়ে তাকে ফোন দেয়া হয়েছে কয়েকবার। নাহ। বন্ধই নাম্বারটা। এমন কেন করছে শ্রাবণ? দম বন্ধ লাগছে তার। কেউ কি একটুও বুঝবে না তাকে? চেনা দুনিয়া অচেনা হওয়ার পর এতো কঠিন হয় নাকি? এই তবে বাস্তবতা। বুঝলো সুমন।
গ্রামে সন্ধ্যা নামার দৃশ্যটা কেমন যেন। একটা ঘুম ঘুম ভাব চলে আসছে সুমনের। তাও পুকুরপাড়ে গিয়ে বসলো সে। মিটিং বসেছে। মামা আর খালামনিও এসেছেন। মানুষের সমস্যা থাকেই। তাই বলে এতো বড়? এতো কিছু লুকোতে হবে তার কাছে। শ্রাবণের প্রেমে তো সে একেবারেই অন্ধ হয়ে ছিলো। তাই এই সহজ অথচ ভীষণ কঠিন ব্যাপারটা চোখ এড়িয়ে গেছে৷ কিছু সে আন্দাজ করেছিলো। এতো মারাত্মক সে তো স্বপ্নতেও কল্পনা করেনি। আর শ্রাবণ? হুহ। ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না তাকে। সব অনুভূতি একাকার হয়ে অনুভূতি শুন্য হয়ে গেছে সুমনের। কোনো বোধই তার হচ্ছে না।
আফজাল সাহেবের ঘরে মিটিং বসেছে। গুরুতর ঝামেলা হয়েছে একটা। দুই মেয়ে তাদের ছেলে মেয়ে নিয়ে এসেছে। কোথায় তিনি তার নাতিনাতনিদের সাথে আনন্দ করবেন, তা না এই ঝামেলা হতে হলো এখন। সব শুনে চট্টগ্রাম থেকে ডেকে পাঠিয়েছেন ছেলেকে। এখন তার সাহায্য দরকার।
আফজাল সাহেবের বড় জামাই শফিক রহমান বেশ ভালো দেখতে। তবে আলাভোলা আর ভীরু প্রকৃতির। বিয়ের পর ঢাকায় ভালো চাকরি করছিলেন। দেখতে দেখতে তারও তিন ছেলে মেয়ে। সমস্যাটা বেঁধেছে বড় নাতনিকে নিয়েই।
শফিক রহমান এর বড় মেয়ে রুমন। বেশ সুন্দরী। রুমন বাবার ধাঁচের হয়েছে। কয়েকমাসের মধ্যেই হঠাৎ করে বড় হয়ে গেলো। অবশ্য বয়সটাই এমন। সব ঠিকঠাকই চলছিলো। হঠাৎই রুমনের পিছনে লেগেছে এলাকার কিছু বখাটে ছেলে। প্রথম প্রথম স্কুল যাওয়া আসার সময়ে পিছু নিলেও পরে তারা বাসার জানালায় ঢিল ছুঁড়ে। রাত বিরাতে রুমনের নাম ধরে চিৎকার করে ডাক দেয়। বাবা মায়ের সাথে বের হলেও আজেবাজে কথা বলে তারা। আগে শুধু রুমনকে চিঠি দিতো। এখন সুমন আর ফাহিমের হাত দিয়েও দেয়। সেইদিনই নাকি ফাহিমকে চকলেট দিতে যাচ্ছিলো। কার মনে কি আছে কে জানে। বড় কোনো কিছু হয়নি তাইই স্বস্তির ব্যাপার।
তবে শেষ চালটা বড় মারাত্মক ছিলো। এখন পর্যন্ত পাওয়া সর্বশেষ চিঠিতে বাড়ির সবার ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছে। রুমন আর সুমনের জীবন আর স্বাভাবিক হতে দেবে না ওরা। সে অনুযায়ী কিছু নমুনা তারা দেখিয়েছে। তড়িঘড়ি করে সুমনের বাবা সবাইকে বগুড়া পাঠিয়েছে। শফিক রহমান খুব দ্রুতই বদলির ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। অফিসের কাজে খুবই দক্ষ তিনি। তাই সবাই তাকে হেল্প করে এবং সেই অনুযায়ী সম্মানও করে। তার সমস্ত সমস্যা শুনে শফিক রহমান এর বসও তাকে অনেক দ্রুতই হেল্প করেছেন। যদিও তার মেয়েদের পড়াশোনায় অনেক সমস্যা হবে। তবে মেয়েদের জীবন আর নিরাপত্তার কথা ভেবে এইটুকু ছাড় দিলেন শফিক রহমান। ছেলেটা ছোট। ওইটুকু ছেলের যদি কোনো ক্ষতি করে দেয় বখাটেগুলো। এক নেতার ছায়ায় থাকে তারা। চাইলেও কিছুই করতে পারবেন না তিনি। উল্টো তারই সর্বনাশ হবে। তাই আর খুব ভাবনা চিন্তা না করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। সুতরাং তিনি আর সুমনের মা ছাড়া আর কেউই জানে না যে তাদের আর ফেরা হবে না। মেয়েদেরকেও বলেননি। ভয় পেয়ে যেতে পারে। চিঠিটা যা ভয়াবহ ছিল!!!!!
শ্রাবণের ঘর থেকে এত্তো এত্তো পুরান বই খাতা, কাগজ নিয়ে বাইরে এসেছেন তার মা। বিক্রি করবেন।
শ্রাবণ তার সিমের কাগজটা একটা বইয়ের ভেতরে রেখেছিলো। বইটি পুরনো নয়। তবে ট্যুরে যাওয়ার দিন সকালে জিনিসপত্রের নাড়াচাড়ায় বইটা পুরনো কাগজের উপর পড়ে যায়। শ্রাবণ খেয়াল করেনি। সে ট্যুরে যাবার তাড়াহুড়োয় ছিলো। মাও বিক্রির সময় খেয়াল করলেন না যে বইটা ওতো পুরনো নয়। তারপর যা হবার তাইই হলো। শ্রাবণ আর সুমনের যন্ত্রণা দ্বিগুণ করার জন্য সিমের কাগজ সমেত বইটা ঝুঁড়ির মধ্যে চলে গেলো।
......................................
ঘরে গুমোটভাব প্রকট। শ্রাবণের তাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। শ্রাবণ ফিরেছে এক সপ্তাহ হয়ে গেলো। সুমন ফেরেনি নানাবাড়ি থেকে। সিমটা হারিয়েই গেলো। সুমন ফোন করলেও আর পাবে না শ্রাবণকে। কারণ শ্রাবণ সিমের রেজিষ্ট্রেশন করেনি। শ্রাবণ ভেবে রেখেছিলো করবে। আলসেমির কারণে করেনি।বাসায় সিমের সাথে দেয়া কাগজ রেখে গিয়েছিল। ফিরে এসে দেখে মা পুরনো কাগজের সাথে ফেলে দিয়েছে। শ্রাবণেরই দোষ। একটু সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিলো। মা তো আর বুঝতে পারেনি। খুব খারাপ লাগা কাজ করছে শ্রাবণের। সুমনকে আর কোনো নাম্বার দেয়নি। তার মানে ফোন করলেও শ্রাবণকে পাচ্ছে না সুমন। আচ্ছা সুমন যদি তাকে ভুল বোঝে? অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে শ্রাবণের। হঠাৎই রেডি হতে শুরু করলো শ্রাবণ। একবার যাবে সুমনদের বাসায়। কি হবে না হবে সেটা ওখানেই ঠিক করবে সে। উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগাবে।
সময়টা বিকেল বেলা। সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই সুমনদের দরজার দিকে চোখ গেলো তার। নিজেকে সামলানোর প্রবল চেষ্টা সত্ত্বেও সিঁড়ির উপর বসে পড়ল সে। ঠিক এমনি সময় পাশের ফ্ল্যাটের দরজা খুলে গেলো। এক আন্টি তাড়াতাড়ি তাকে ধরে ফেললেন। মনে করেছিলেন শ্রাবণ অসুস্থ।
এক ঘন্টা কিভাবে যেন কেটে গেলো। শ্রাবণ থম মেরে বসে আছে। আর আন্টি বারবার বলছেন এভাবে ভীতুর মতো পালিয়ে যাওয়া আমার খুবই অপছন্দ। সুমনের মা তার পাশের বাসার এই ভাবিকে সবটাই বলেছিলেন। কারণ তারও একটি মেয়ে আছে কিনা। আর তিনি তো এই এলাকায়ই থাকেন। আগে থেকে সাবধান হওয়া ভালো। তবে শ্রাবণের মাথায় কিছু ঢুকছে না। বারবার মনে পড়ছে সেই দৃশ্য। সুমনদের দরজায় কাগজ টানানো। তাতে লেখা " ফ্ল্যাট ভাড়া হবে" ।
পরের কাহিনি আর পাঁচটা কাহিনির মতো হয়নি। শ্রাবণ এর প্রতিবাদ করেনি। বখাটেরা আর তাদের নেতা এলাকায় কুখ্যাত। কিছু করতে গেলে উল্টো শ্রাবণ আর তার পরিবারেরই ক্ষতি হবে। তবে এর মধ্যে একটি কাহিনি ঘটে গেলো। একই দলের আরেক নেতার সাথে দলীয় পদ নিয়ে ঝামেলা বেঁধে গেলো। বখাটেগুলো সেই নেতার মেয়েকে অপহরণ করলো। পুলিশের সাহায্য নিলো সেই নেতা। রাতের বেলায় শ্রাবণের এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ চললো বখাটেগুলো আর পুলিশের মধ্যে। একজন গুরুতর আহত আর বাকিগুলো পুলিশের হাতে বন্দি। কিছুদিন পরে বখাটেদের আশ্রয় দেয়া নেতা তার পরিবার নিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেলো। এর পিছনে অবশ্য রাজনৈতিক চাল ছিলো। এলাকার মানুষজন শান্তি পেলো বহুদিন পর। আফসোস করলো সুমনদের জন্য। এলাকায় ভালো বলে বেশ পরিচিত ছিল এই পরিবারটি। যদিও কুখ্যাত নেতাটির জন্য সুমনদের পাশে থাকতে পারেনি। তবে শ্রাবণের মনে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। সুমনের জন্য খারাপ লাগছে আবার ভাবছে সুমন থাকলে যদি ওর কোনো ক্ষতি হতো। মিশ্র অনুভূতি।
বখাটেদের আর শাস্তি দেয়ার প্রয়োজন পড়েনি শ্রাবণের। নিজেরাই নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ফেঁসে গেলো। সাজা পেয়ে গেলো যত অপকর্ম করেছে তার জন্য।
সবকিছুই হলো। তবে শ্রাবণের জন্য তোলা রইলো এক অসহ্য যন্ত্রণা। সুমনকে ভুলে যাওয়া সম্ভব না। খালি দুই বেণি চোখের সামনে ভাসে। নিজেকে পরিবর্তন করতে শুরু করেছে সে। শুধুই সুমনের জন্য.......
"জ্বর জ্বর লাগছে। " শ্রাবণ বললো। "এক কাপ চা খাই চল"।
"ঠিক আছে। " অয়নের জবাব।
"কি হলো রে তোর হঠাৎ করে শ্রাবণ? "
" জ্বরটা আসাতে ভালো লাগছে"
"এখনও পুরনো কথা নিয়ে পড়ে আছিস, সামনে আগাও বন্ধু "
" ঠিক তা নয়। অনেক আগে জ্বরের মুখে এক আকাশ দেখেছিলাম। কড়া রোদ। ঝকঝকে নীল আকাশ। এক টুকরো সাদা মেঘ। আহামরি কিছু না। এরকম আকাশ তো হয়ই। কিন্তু সেই কড়া রোদের দুপুরেই দুই বেণিকে দেখেছিলাম।"
"নামটা আর বদলালি না? "
"ডাকতে ভালো লাগে। সেই কড়া রোদে সে যেন কেমন করে ছবি আঁকছিলো রে। জ্বরের ঘোরে দেখা সেই দৃশ্যটা আজও ভুলিনি। "
" মনে করে কি লাভ আছে? ওই মেয়ের জন্য বগুড়াও গেলি। লাভের লাভ তো কিছুই হয়নি।"
" লাভের জন্য নয়। তাকে সেই অবস্থায় দেখে জ্বরের মধ্যে অদ্ভুত লেগেছিল। পরে তো তার সাথে কথাই হতো। তাকে দেখে কেমন যেন প্রশান্তি লাগতো। এই অনুভূতি আর হয়নি অন্য কোনো মেয়েকে দেখে। চিন্তা কর। জ্বর জ্বর ভাব, ক্লান্ত দুপুর, ঝকঝকা আকাশ আর সামনে জানালার ওপারে এক মেয়ে ড্রয়িং করছে। হালকা রঙের জামা আর সেই দুই বেণি। এই অনুভূতি বলে বোঝাতে পারবো না"
" অন্য কোনো মেয়েকে আর ভালো লাগেনি?" হঠাৎই প্রশ্ন অয়নের।
" লেগেছে। লাগবে না কেন? তবে সেই প্রশান্তি মাখা অনুভূতি আর হয়নি। "
"সুমন যদি অন্য কারও সাথে জড়িয়ে যায়? বা ওর দেখা যদি আর না পাস?"
" পাবো কি পাবো না সেটা পরের ব্যাপার। পাওয়ার আশা করতে দোষ নেই। "
" বাহ। তুই কি কবি হয়ে যাচ্ছিস? "
অয়নের কথায় হাসল শ্রাবণ।
" সেই দুপুরের আলাদা একটা গন্ধও ছিলো রে। মাঝে মাঝে আমি সেটা টের পাই।" স্মিত হেসে শ্রাবণের জবাব।
সুমন আর রুমন আর ফাহিম ভালোই আছে।সুমনের আঁকার হাত খুব ভালো হয়েছে। বেশ কয়েকবার পুরস্কারও পেলো সে। বাবা মা বেশ খেয়াল করছেন তাদের। তবে সুমন এক চাপা কষ্ট নিয়ে বেড়ায়। একজনকে যে ভোলা যাচ্ছে না কোনোভাবেই । বখাটেদের কাহিনির পর তেমন ছেলেদের সাথে মেশা হয়নি। তাই সুমনের অনুভূতি একজনাতেই আটকে আছে।
মাঝে মাঝে জানালায় আসে। আকাশ দেখে। ভাবে যদি শ্রাবণ অন্য কারও সাথে জড়িয়ে যায় বা সুমন যদি শ্রাবণকে আর খুঁজে না পায়?
"পাবো কি পাবো না সেটা পরের ব্যাপার। পাওয়ার আশা করতে দোষ তো আর নেই।"
পাঁচ বছর পর.....
"এই তুই তুই তুই। তুই কি আর জীবনে শুধরাবি না? সারাদিন আকাশ দেখে বেড়ানো আর এটার ছবি আঁকা। মানা করছি না ছবি আঁকতে। কিন্তু পরীক্ষার আগে একটু তো সিরিয়াস হ। আমি চাইলেই তোকে হেল্প করতে পারি। কিন্তু করবো না। কারণ তুই আর সিরিয়াস হবি না। "
সুমন মাথা নিচু করে নোট করছে। তার ব্যাগে একটা ছবি আছে। আকাশের। সে এঁকেছে। অনেকটা সেইদিনের আকাশের মতো যেইদিন প্রথম শ্রাবণের সাথে দেখা হয়। ভেবেছিলো নিবেদিতাকে দেখাবে। কিন্তু তার মন খারাপ হয়ে গেছে। অবশ্য দোষ তারই। হঠাৎ স্যার ডেকে পাঠিয়েছেন নিবেদিতাকে। স্যারের রুম থেকে আসলে দেখাবে ছবিটা।
চেয়ার টানার শব্দ পেল সুমন। ব্যাগ থেকে ছবিটা বের করলো। ভেবেছে নিবেদিতা এসেছে। সামনে তাকাতেই স্থির হয়ে গেলো।
"তোমাকে যেইদিন প্রথম ভার্সিটিতে দেখলাম সিঁড়িতেই বসে পড়েছিলাম। জানো? এতোদিন সামনে আসার সাহস হয়নি। আজ হলো।" বলেই হাসল শ্রাবণ।
সুমন হতভম্ব। শ্রাবণ না এটা? বেশ চেঞ্জ হয়ে গেছে। চিনতে অনেক দেরি হলো। কিন্তু শ্রাবণ তাকে চিনলো কিভাবে?
"তোমাদের পাশের বাসার আন্টির কথা মনে আছে? এখনও ওই এলাকায় আছেন। "
মনে পড়লো সুমনের। মা সব বলেছেন জানতো সে।
"তোমাকে খুঁজে পাওয়ার আর কোনো উপায়ই যখন পাচ্ছিলাম না তখন আন্টির কাছে যাই। আন্টির এক আত্মীয় তোমার বাবার অফিসে চাকরি করতেন। তোমার বাবাকে এখনও মনে রেখেছে অফিসের সবাই। খুব ভালো আর দক্ষ ছিলেন কিনা। তবে তোমার খোঁজ বের করেছেন অন্যভাবে। মেইন অফিসে ফোন করে জানা গেছে কোন শাখায় বদলি হয়েছেন তোমার বাবা। তারপরই তোমার খোঁজ পাওয়া গেলো। কিন্তু আমাকে অনেক কাঠখড় পোহাতে হলো"
"কেন?" অনেক কষ্টে এইটুকুই বলতে পারলো সুমন।
" তোমার প্রতি আমার অনুভূতিগুলো সত্যিই কিনা এটা প্রমাণ করার পরই ছাড়পত্র দিলেন আন্টি। " বলেই হাসতে লাগলো শ্রাবণ।
আস্তে আস্তে সময় গড়ালো। আরও অনেক কথা হলো। সবই জানতে পারলো কিভাবে কি হয়েছিল।
হঠাৎই টেবিলের উপর চোখ গেলো শ্রাবণের। একটা আকাশের ছবি। অনেকটা সেইদিনের মতো। সুমনের দিকে তাকাতেই চোখ নামিয়ে নিলো সে।
" অন্য কারও সাথে জড়িয়ে যাইনি কিন্তু। " একসাথে বলে উঠলো দুজনেই। বলেই হেসে ফেললো।
এতো হাসি আজ চারদিকে।
"আপনাদের আইসক্রিম। " সুমন অবাক দৃষ্টিতে তাকালো। শ্রাবণ বললো, " আমিই অর্ডার করেছি। আগে অনেক খেতে তো তাই।"
সুমন একটু নড়েচড়ে বসতে গিয়ে হঠাৎ করেই তার চোখ গেলো বাইরের দিকে। শ্রাবণ সুমনের দৃষ্টি অনুসরণ করলো এবং সেও স্থির হয়ে গেলো।
টেবিলের উপর দুজন দুজনের হাত ধরে রেখেছে। আকাশটা যেন রঙ বদলালো। অনেকটা সেইদিনের মতোই হয়ে গেলো যেইদিন তাদের প্রথম দেখা হয়েছিলো।
(সমাপ্ত)
( এই গল্প পুরোপুরি বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা। সেই অনুযায়ী গত পর্বেই গল্প শেষ। কিন্তু আমি খুব করেই চাই তাদের আবার দেখা হোক। এখনো সেটা হয়নি। তাই এই শেষ পর্ব পুরোপুরি আমাকে বানাতে হয়েছে। যা মনে এসেছে তাই লিখেছি। তবে অনেক চেঞ্জ করতে হয়েছে। অনেক ভাবতে হয়েছে। তাই ভুলত্রুটি হলে ক্ষমাপ্রার্থী। দেরি করার জন্য দুঃখিত। আর সব পাশের বাসার আন্টি কিন্তু খারাপ হয়না।)
লেখনীতে...
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro