Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

১৬. পরাবাস্তব স্বপ্নের খোঁজে- ১

দেয়াল ঘড়ির পেন্ডুলামটা ঢং ঢং আওয়াজ করে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। ঘুমন্ত আবীরের পিটপিট করা চোখ আর মুখের উপর প্রশান্তির ছায়া বলে দিচ্ছে, খুব সুন্দর কোনো স্বপ্ন দেখছে সে।

হ্যাঁ দেখছেই তো,

আবীর আর আঁখি বাতাসে ভেসে যাচ্ছে উড়ে উড়ে। ভেসে যাচ্ছে মেঘের ভিতর দিয়ে, বয়ে যাচ্ছে নাম না জানা কোন অজানা শহরের উদ্দেশ্যে। আকাশের শূন্যতার মাঝে কোনো এক বিচিত্র ধরণীতে।

ব্যস্ত নগরীর অলিগলিতে মানুষের নিজেদের স্বপ্ন ভাঙা গড়ার এক অদ্ভুত খেলা চলে। মাথা উঁচিয়ে কারো স্বপ্ন পূরণ হওয়ার দৃশ্য তাদের চোখে পড়েনা কখনো।

আঁখি হতবুদ্ধের মত তাকিয়ে দেখছে চারিদিক।
বাতাসে উড়ছে আঁখির গায়ের পাতলা কাপড়। তার ফিনফিনে কাপড়ের মাঝ দিয়ে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে তার মাখনের মত পেলব স্নিগ্ধ সৌন্দর্য।

আঁখির হাত শক্ত করে ধরে আছে আবীর। যেন কিছুতেই হারিয়ে না ফেলে তাকে এই বিশাল শূন্যতার মাঝে। আঁখির কাছে কখনো যেন এ স্বপ্নের চেয়ে অবাস্তব বলে মনে হয়।

চারপাশে শুভ্র মেঘের কণারা ছাড়া আর কিছুই স্পষ্ট নয়, তবু সে যেন এক স্বপ্নের মাঝে এক বর্ণের ছটা। আর এক বর্ণের মাঝে এক স্বপ্নের দ্যুতি।

চারপাশে সারি সারি অসংখ্য বক উড়ে যাচ্ছে তাদের আশে পাশে, ডানা মেলে প্রশস্ত করে দিয়েছে চারিদিকে যতটা সম্ভব। আঁখি বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়ে আছে বকেদের বিস্তৃত সুবিশাল ডানার দিকে। আকাশের এতো উঁচুতে যে মেঘের ঠাণ্ডা শীতল কোমলতা ফুঁড়ে তারা উড়ে যেতে পারে মহাশূন্যে, তা আঁখির মোটেও জানা ছিলোনা।

বকেদের মেলে ধরা ডানা তার শরীরের তুলনায় এতোটা বিশাল হতে পারে, তাও সে জানতো না কোনোদিন।

সাদা বকেদের মত আঁখিও যেন নিজেকে প্রশস্ত করে দেয় সে নীলাম্বুর বুকে। তার গালের পাশ দিয়ে মেঘের ঠাণ্ডা স্পর্শ যেন জল হয়ে গড়িয়ে যায় শরীরের ভিতরে। সে যে কি এক ভালোলাগাময় মুহূর্ত তা আঁখি কিছুতেই বলতে পারেনা।

আকাশের বুকে নৈস্বর্গের সকল শুভ্রতা এসে ভর করেছিলো সেদিন, যেন এই দুই মানব মানবীর আগমনের অভ্যর্থনা জানাতে।

আকাশের ঠিক সে জায়গায় গিয়ে থামল তারা দুজন, যেখানে 'মিল্কি-ওয়ে গ্যালাক্সি' ফুটে উঠেছিলো একদম স্পষ্ট। হাজার কোটি নক্ষত্রের আবছা আলোয় খানিক বিচলিত হয়েছিলো দুজনের মন। একে অপরের হাত ধরে হালকা ভাবে বৃত্তাকারে ঘুরছিলো তারা।

আঁখি মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে তাকিয়ে আছে আবীরের চোখের দিকে। যেন এ কল্পনার জগত ফুঁড়ে সব কিছু ছড়িয়ে দিয়েছে বাস্তবে। এই তো ছিল তার স্বপ্নের জগত। যেখানে আবীর ছাড়া আর কেউ নেই। আর কিছু নেই। শূন্যতার মাঝে এক নিঃসীম ভালোবাসার হাতছানি থাকবে শুধু। আর তো নেই কিছু চাওয়ার।

আঁখি যেন এক পলকের জন্যেও চোখের পালক ফেলেনি। যদি চোখের পলকে মুছে যায় সবকিছু? যদি ধুয়ে যায় সব কিছু সাদা খাতার দাগহীন পাতার মত? কিন্তু মুছে যায়না কিছুই।

আঁখির মুখের হাসি প্রশস্ত হয়। আবীর ও হাসছে। আঁখি ঘাড় কাঁত করে তাকায়,

আচ্ছা, কে তুমি বলো এভাবে আছো তাকিয়ে?

কোথা থেকে এসেছ তুমি আমার কাছে?

কোথায় লুকিয়ে ছিলে তুমি এতকাল?

কেনো এতো পাগল হয়েছিলাম আমি তোমায় দেখে?

কি দেখেছিলাম আমি তোমার মাঝে?

কেনো আমার ধূসর বাগানে এতো ফুল ফুটেছিল তোমার কমল স্পর্শে?

কি ছিল তোমার চোখের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ-তে যার মাঝে আমি বাঁধা পড়েছি জন্মান্তরের মত?

কি ছিল তোমার বিদগ্ধ চাহনিতে, আমি নিজের মাঝে হারিয়েছিলাম অনন্তকালের মত?

কি ছিল তোমার চোখের কৃষ্ণবিবরে, আমি ক্ষয়েছি তোমার আপন বিকিরণে নির্লিপ্তের মত?

কেনো লিখেছিলে তোমার ডায়েরীতে আমায় নিয়ে, আমায় প্রথম আলিঙ্গন করে? আমি তো ভুলতে পারিনা সে কথাগুলি....

" তুমিই তো ছিলে আমার সে গান
আমার অন্ধকার, শব্দহীনতার
কুরু নক্ষত্রের মত

অথবা গ্রন্থি পরিক্রমার
মৃদু রক্তক্ষরণের মত,
তুমিই তো ছিলে,
শুধু তুমিই তো ছিলে!"

.....যেদিন পড়েছিলাম আমি,

সেদিন থেকে আজ অবধি এক রাতের জন্য ঠিকমত ঘুমাতে পারিনি। কি চেয়েছিলে তুমি? আমার ঘুম চুরি করে পূব দরিয়ার হাটে নিয়ে বেঁচে দেবে?

আবীর হেসে ফেলে। আঁখি মুখে কিছুই বলেনি। দুজনার মধ্যে কখনোই তেমন কোনো কথা হয়না। আপন মানুষদের সব কথা মুখে বলতে হয়না! সব কিছু তো মুখে বলার প্রয়োজন নেই। প্রিয় মানুষদের হৃদয়ে কোথায় যেন একটা করে প্রকোষ্ঠ আছে, সেখানে আপনা আপনিই কথাগুলি একে অপরের হৃদয়ে অদলবদল হতে থাকে। তাই পৃথিবীর নীরবতায় কখনো হারিয়ে
যায়না তাদের অস্ফুট কথাগুলি।

আঁখি আরো কাছে এসে আবীরের গালে আলতো করে তার ঠোঁট ছোঁয়ায়। আবীর সে ঠোঁটের ভাষা বোঝে। তাই কোনো আড়ষ্টতা না রেখে আঁখিকে আরো বেশি কাছে টেনে নিয়ে আসে। কত সুখ আর কত বেদনা মিশ্রিত অনুভূতি ল্যান্ড করতে থাকে আঁখির বুকের এরোড্রমে।

আঁখির কেনো যেন মনে হয়, তাদের জীবনটা যদি কখনো উপন্যাসের গল্পের মত শেষ না হয়ে চিরকাল ধরে চলতে পারতো! আজীবন প্রবহমান নদীর মত। তার আবীরকে ভালোবাসার জন্য একটি জীবন কি যথেষ্ট??

এই পৃথিবী, এই সাগর, এই মেঘ আর এই বৃষ্টির পানি ছুঁয়ে ছুঁয়ে এখনো তো তাকে ভালো করে ভালোবাসি হয়নি বলা?

ঐ পাহাড়, দূরের ঐ পর্বত ধুয়ে ধুয়ে ঝর্ণার পানি হয়ে ঝরে ঝরে গিয়ে নদ-নদীদের মাঝ দিয়ে এখনো তো হয়নি বয়ে চলা?

এখনো তো পুব আকাশের রঙধনু আঙুলে মেখে মেঘদের মাঝে হয়নি কিছু লেখা। হয়নি তো, পাহাড়ের বুকে শুয়ে রাতের আকাশের তারাদের রাশিমালা দেখা।

ভালোবাসার বুক চিঁড়ে অন্দরে ডুব দিয়ে আঁখি জেনেছে, এর গভীরতা মাপা মানে যেন- এক আকাশ সমান পর্বতের বুকে আরেক আকাশ সমান দীর্ঘশ্বাস জমা হয়ে থাকা।

সামান্য মেঘগুলি তাদের এখনো অদ্ভুতভাবে আগলে রেখে ভাসিয়ে রেখেছে শূন্যে। আর তারা
একে অপরের হাত আঁকড়ে ধরে রেখে কোথায় যেন ভেসে উড়ে যেতে যেতে হারিয়ে যেতে থাকে দুজনে। দূরে আরো দূরে....

তাদের মাঝে কি কথা হচ্ছে তা আর কিছুতেই বোঝা যায়না।

***
continued to next part...... :)

আঁখিদের গল্প লিখতে লিখতে কখন যে নিজেই ওদের মাঝেই হারিয়ে যাই বুঝে উঠতে পারিনা। বুঝতে পারিনা ঘটনার প্রবাহমাত্রা কোন দিক থেকে কোনদিকে যাচ্ছে।
গল্পটা আমার হতে পারে। কিন্তু জীবনটা তো ওদের। ভালোবাসাটাও তো ওদের একান্তই নিজের।  আমি কে বলার? :)

plz vote & comment,
& turn the page for next chapter...

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro