Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

১৩. ডঃ এরিক কার্ণেলের বই ও নিষিদ্ধ এক্সপেরিমেন্ট

শরতের মেঘমুক্ত আকাশের নীচে সাদা মাখনের মত জমে থাকা বালুর আস্তরণের উপর দেখা যায় অল্প কিছু নুড়ি পাথরের আনাগোনা। পানির হিল্লোলে তারা আসছে, যাচ্ছে, কখনো ভাসছে, হারিয়ে যাচ্ছে। এই পৃথিবীতে জন্ম নেয়া অল্প দিনের অভিযাত্রীদের মত অনেকটা।

তরঙ্গের উপর দিয়ে সোঁ সোঁ করে বাতাস ছুটে আসছে দ্বীপের ভিতরেও। যে বাতাসে উত্তপ্ত বালুর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অস্তিত্ব মিশে আছে। দ্বীপের যাবতীয় সমস্ত কিছুর ঘ্রাণ মিশে অদ্ভুত একটা পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

প্রকৃতি প্রেমীদের ঘ্রাণ ও অনুভূতি শক্তি- জন সাধারণের চেয়ে এক দুই ডিগ্রী উপরেই থাকে বৈকি।

অদ্ভুত সে ঘ্রাণের খানিকটা বিনা সংকোচে ঢুকে পড়েছে আবীরের ঘরের জানালা দিয়েও।

আবীর এই মুহূর্তে তার বাবার লেখা প্রকৃতির সবচেয়ে গোপনীয় আর যুগান্তকারী বৈপ্লবিক বইটি খুলতে যাচ্ছে। যে বইয়ের প্রথম পাঠক তার বাবা হলে পরের জন সে নিজেই।

এটা সত্যিকারের বইয়ের মত মনে হলেও এটা একটা অত্যাধুনিক ইলেকট্রিকাল হলোগ্রাফিক ডিভাইস বই। বই খুললেই এর নীচের ধাতব পাত থেকে লেখাগুলি উপরে উঠে শূন্যের মাঝে ভাসছে। আবীর অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে, ফিউচারে বই হয়ত এমনই হবে দেখতে।

" THE IMMORTAL GHOST NATURE & THE UNSEEN CRACK OF THE REALITY "

' আমি ডঃ এরিক কার্নেল। একজন বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন স্পেশালটি থাকে, পদার্থ বিজ্ঞানী, নৃবিজ্ঞানী, পরমাণু বিজ্ঞানী, জীব বিজ্ঞানী ইত্যাদি। আমারো আছে, আমি একজন কথিত পাগল বিজ্ঞানী। হাহা

প্রথমেই বলে রাখছি, আমি যখন এই বইটি লিখছি তখন আমরা পৃথিবী থেকে ১২ হাজার কোটি আলোক বর্ষ দুরুত্বের এক সুপার নোভা বিস্ফোরণের পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছি। যে নক্ষত্র পুঞ্জকে অতিক্রম করছি, তা শুধু অসাধারণ নয়, একেবারে অবিশ্বাস্য। অনুভূতি নতুনদের জন্য শ্বাস রুদ্ধকর হবার কথা। কিন্তু এর কোন নাম নেই। থাকবে কিভাবে? কে দেবে নাম?

অর্থাৎ এটি এমন একটা জায়গা যেখান থেকে আলোর পৃথিবীতে ফিরে যেতে বারো হাজার কোটি বছর লাগার কথা। আমি কেবল ৩৮ পা দিয়েছি। তাহলে আমরা কিভাবে এতো দুরুত্বে এসে পৌঁছেছি?

মনে হতে পারে, আমরা একটা ওয়ার্ম হোলের ভিতর দিয়ে চলে এসেছি। কিন্তু সত্যি বলতে আসলে আমরা তার থেকে আরো অনেক বেশি ক্রিটিকাল কন্ডিশনের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি

আচ্ছা 'আমরা' বলতে আমি কি বুঝাচ্ছি? আমরা বলতে আর কে?

আমিই আমরা। আর আমরাই আমি

আমি যখন এটা লিখছি, তখন আমি এক বিশালাকার স্পেসশিপের মধ্যে বসে আছি। এর ওজন প্রায় মাইনাস ১০০০ মিলিওন পাউন্ড

মাইনাস???

হ্যাঁ অবশ্যই। নেগেটিভ মাস ( ঋণাত্মক ভর)!
.x১০^(-৩১) কোন নেগেটিভ সংখ্যা নয়। তবে ক্ষুদ্র সংখ্যা। কিন্তু -.x১০^(৩১) সত্যিকারের ঋণাত্মক সংখ্যা। যার সাথে গ্রেভিটির সম্পর্ক বিপরীত। নেগেটিভ ম্যাটার। মহাবিশ্বের এক বিস্ময়কর পদার্থ। যার অস্তিত্ব পৃথিবীর মানুষ এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছে, কিন্তু পায়নি

এই অদ্ভুত ভরের স্পেসশিপ নিয়ে যেকোনো সময় আমরা ব্লাকহোলের ভিতর থেকে প্রায় অচিন্তনীয় বেগে বেরিয়ে আসতে পারি

গ্যালিলিও যখন টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন, সেই টেলিস্কোপে দিনরাত তাকিয়ে থাকতে থাকতে শেষ বয়সে অন্ধ হয়ে মারা গেছেন। বিজ্ঞানী কার্ল শীল এর নিজের তৈরি ক্যামিকেল টেস্ট করতে খুব পছন্দ করতেন। নিজের আবিষ্কৃত সায়ানাইড জিহ্বা লাগিয়ে টেস্ট করতে গিয়ে মৃত্যু ডেকে এনেছেন। আলেকজেন্ডার বোগদানব নিজের আবিষ্কৃত ব্লাড ট্রান্সফিউশন নিজের শরীরে একাধিকবার ব্যাবহার করে কঠিন অসুখে মারা গেছেন। ইতিহাসে লেখা একমাত্র ডাবল নোবেল বিজয়ী মেরি কুরী, নিজের আবিষ্কৃত রেডিয়েশন থেরাপি নিয়ে স্টাডি করতে করতে অত্যধিক রেডিয়েশন বিষক্রিয়ার কারণে তাকেও মরতে হয়েছে

আমার অবস্থা তাদের চেয়ে ভালো নয়। আমি আজ কতদিন আয়নায় নিজেকে দেখিনা তা আর কিছুতেই মনে করতে পারিনা। নিজের কদাকার মুখের দিকে তাকাতে ভীষণ ভয় হয়, সারা শরীর আতংকে শিউরে উঠে। কারণ আমি এখন আর মানুষের মত নেই। আমি প্রায় দানব হয়ে গেছি। লিকলিকে এক কুৎসিত জন্তুর মত আমার গড়ন। আমার গলা অস্বাভাবিক লম্বা হয়ে জিরাফের মত গিয়েছে, মাথার দুই পাশ চ্যাপ্টা হয়ে গিয়েছে, সারা শরীর সাপের মত পেঁচিয়ে গিয়েছে, কখনোও মনে হয়েছে আমি বাষ্প হয়ে গেছি, কখনো বা ধোঁয়াটে তরল। কখনো কোয়ার্ক গ্লুয়োন প্লাজমা। কিন্তু তবু বেঁচে আছি। বেঁচে আছি আমি আর এটাই সত্য

মহাবিশ্বের স্কুইজ এর মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, টিপলার সিলিন্ডারের (প্রাকৃতিক টাইম মেশিন) মাঝ দিয়ে গিয়েছি, কখনো কসমিক স্ট্রিং এর ভিতর দিয়ে গিয়েছি, ডউগনাট ভ্যাকুয়াম ফুঁড়ে বের হয়েছি, ব্ল্যাক হোলের মাঝ দিয়ে মহাবিশ্বের বাইরে চলে গিয়েছি, ওয়ার্ম হোলের ভিতর দিয়ে ভিন্ন সময়ে, ভিন্ন স্থানে ফিরে এসেছি

এসবের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় আমার শরীর পার্মানেন্টলি বিকৃত হয়ে গেছে। মহাবিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শক্তিশালী রেডিয়েশন, ভাইব্রেশন, কসমিক ওয়েভ আমরা একেবারে বদলে গিয়েছি। জানিনা আমাকে এখন মানুষের স্বীকৃতি দেয়া যাবে কিনা। কিন্তু এখন আর কিছুই আসে যায়না

খুব সম্ভবত আমার মৃত্যুও সন্নিকটে। অস্বীকার করছিনা আমাদের কৌতূহলের বাড় মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছে। আমরা একের পর এক এমন অবিশ্বাস্য রকম বিপদজনক এক্সপেরিমেন্ট করে যাচ্ছি যার ভয়াবহ ফলাফলের দরুন পৃথিবীর মানুষ কোনদিন ক্ষমা করতে পারবে বলে আমার মনে হয়না

তবুও আমরা ছুটে চলেছি কখনো আলোর কাছাকাছি গতিবেগে, কখনো আলোর গতিতে, এবং আইনস্টাইনের রিলেটিভিটিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টাকিওন** কণার পার্টিকেল, এন্টি-পার্টিকেল ব্যাবহার করে ছুটে গেছি আলোর চেয়ে হাজার গুণ বেশি গতিবেগে। আইনস্টাইনের মতে এটিকে বলে ইম্পসিবল জার্নি। আলোর চেয়ে বেশি বেগে বা সমান বেগে কেউ ছুটে যেতে পারবেনা। কিন্তু আমরা জেনে গিয়েছি কিভাবে এই মহাবিশ্ব আলোর চেয়ে বেশি বেগে সম্প্রসারিত হচ্ছে। কিভাবে কিছু গ্যালাক্সি বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্রকে সাথে নিয়ে আলোর চেয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে

শূন্যতাও একটি স্থান। কোন বস্তু থাকতে হলে স্থান লাগে। বিগ ব্যাঙ এর পরেই এই মহাবিশ্বের ভিতরে সময় স্থানের সৃষ্টি হয়েছে আকাশে ধূমকেতুরা শূন্যের মাঝ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে, এই শূন্যতাও স্থান বা স্পেস। কিন্তু তাহলে এই মহাবিশ্ব কিসের মধ্য দিয়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে? এই মহাবিশ্ব কোন স্পেসের ভিতর দিয়ে ছুটে যাচ্ছে? সেই শূন্যতা কিরকম শূন্যতা?

এর উত্তরও আমি বা আমরা খুঁজে পেয়েছি এক দশক আগে তবে-

প্রকৃতির রহস্যের জট খুলতে খুলতে আমরা যেমন এগিয়ে চলেছি, প্রকৃতি আমাদের পিছন দিয়ে নতুন জট পাকাতে পাকাতে ধেয়ে আসছে ফিরে যাওয়ার সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে

সময়ের চক্রে ফেঁসে গেছি আমরা। চক্র থেকে আরো গভীর চক্রে আটকা পড়ছি। সব কিছু গুলিয়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। প্রকৃতির নিয়ম ভাঙতে ভাঙতে এমন জটে আটকে গেছি যে, এর থেকে মৃত্যু ছাড়া মুক্তির উপায় নেই। মরতে যদি হয়ই তাহলে এই প্যাঁচের সবচেয়ে গভীরে গিয়ে মরতে চাই

দেখতে চাই কোথা থেকে এই সুতোর প্যাঁচগুলি বেরিয়ে আসছে। কোথায় এর সবকিছুর শুরু। কে আছে সবকিছুর কেন্দ্রে

দেখতে চাই, কে আড়ালে থেকে সবকিছুর কলকাঠি নাড়াচ্ছে!

একবার পৌঁছে গেলেই সব জট খুলে যাবেনা সত্যি, কিন্তু জানার মত আর কিছু বাকি থাকবেনা মানুষের। পৃথিবীর প্রথম কোন মানুষ তার জ্ঞান অর্জনের চরম বিন্দুতে পৌঁছে যাবে। তবে সেখানেই সব শেষ। The End! সব জেনে ফেলার পর কেউ বেঁচে থাকতে পারবেনা আর। কেউ না, আমিও না

তুমি কি বুঝতে পারছো আমি কি বলতে চাইছি?

হ্যাঁ! তোমার বইটি বন্ধ করার সময় হয়েছে। "

****

আবীর বইয়ের পাতা উল্টালো। তার চারপাশ ঘিরে জোনাক পোকারা জ্বলছে নিভছে। সন্ধ্যে না হতেই জোনাক জ্বলার মাঝে সে রহস্য খুঁজে পায়না। কারণ যে রহস্যের সন্ধান সে পেয়েছে, সেটার কাছে তার চারপাশের জগত খুব তুচ্ছ মনে হয়।

"
আমাদের নতুন অবস্থান বর্ণনা করছি, আমরা এখন আইনস্টাইনের 'ইম্পসিবল জার্নি' তে রিভার্স টাইমের মধ্য দিয়ে ছুটে যাচ্ছি। অর্থাৎ সময়ের উল্টোদিকে। ওয়ার্ম হোল দিয়ে নয়, সত্যিকারের FTL ( Faster than Light) বেগ দিয়ে। টাইম মেশিনে নয়, টাইমকে অস্ত্র করে উন্মুক্ত মহাবিশ্বের পথে

সেই সংগে তৈরি হচ্ছে ইলিউশনস। আমাদের একটা ইমেজ সৃষ্টি হয়েছে যা ভবিষ্যতের দিকে ছুটে যাচ্ছে, একটি ইমেজ অতীতের দিকে ছুটে যাচ্ছে। দুটোর কোন একটি হয়ত সত্যি। কিন্তু সত্য মিথ্যার বাইরেও অনেক বড় সত্যি থাকে। মানুষ সেগুলি এখনো দেখেনি, তাই তার নামকরণ করা হয়নি আদৌ

বুঝিয়ে বলছি। একটা রিলের অসংখ্য ছবিকে যেমন একের পর এক দ্রুত দেখিয়ে তা সিনেমা হলে ভিডিও আকারে দেখানো হয়, তেমনি আমাদের জগতও অসংখ্য রিলের মতই সত্যি। প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন রিল পার হয়ে যাচ্ছে, অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ, সব ছবিই একই সাথে বিদ্যমান। তবে রিলের বিভিন্ন জায়গায় তার অবস্থান কতগুলি আমাদের সামনে, কতগুলি পিছনে, তবে সবই কিন্তু আছে

এখন তাহলে নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে একটা জটিলতাটা বলছি। মনে কর, তুমি একটি অফিস রুমে হাঁটছো। 'উত্তর থেকে দক্ষিণে' দুই পাশেই কাঁচের তৈরি দেয়াল। দৌড়াতে থাকলে সীমাহীন লম্বা সে রাস্তা ধরে, তুমি ছুটে যাচ্ছ কোনোদিক না তাকিয়ে

একসময় সকাল টা বাজলো, যেতে যেতে টা বাজলো, তারপর ৯টা... ১০ টা

হঠাৎ বেগ বাড়িয়ে আলোর গতিকে অতিক্রম করতেই পথ ঘুরে গিয়ে বামের দরজা খুলে গেলো। বামে ঢুকে দেখলে আরেকটি রাস্তা দক্ষিণ থেকে উত্তরে উল্টোদিকে যাচ্ছে। তুমি ছুটে চলেছ নং রাস্তা দিয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তরে অসীম গতিতে। ছুটে যাচ্ছ সীমাহীন গতিতে। তোমার ঘড়িতে ১১ টা বাজছে, তারপর ১২ টা। হঠাৎ বামে তাকিয়ে দেখলে সেখানে তোমাকেই দেখতে পাচ্ছো। যে কিনা তোমার সাথে দক্ষিণ থেকে উত্তর উল্টোদিকে দৌড়চ্ছে। তার হাতের ঘড়িতে টা বাজে, তার সময় উল্টোদিকে যাচ্ছে। তার ঘড়িতে একটু পরে বাজলো টা, তারপর ৬টা। তোমার সময় যদি হয় পজিটিভ, তার সময় হবে নেগেটিভ

তুমি বা তোমরা দুজন একই দিকে ছুটে যাচ্ছ অর্থাৎ দক্ষিণ থেকে উত্তরে যদিও সময়ের বিপরীত দিকে তবুও তুমি কখনোই তার নাগাল পাবেনা। সে ছুটে যেতেই থাকবে তোমার আগে আগে। তুমি গতিবেগ বাড়ালে তার গতিও বাড়বে

তুমি হয়ত তোমার ভবিষ্যৎ - যাচ্ছ, কিন্তু একই সাথে তোমার অন্য ইমেজ যাচ্ছে তোমার অতীতে দুটি দুই দেয়ালের দুই পাশে। কেউ কারো পথে হস্তক্ষেপ করতে পারবেনা। কিন্তু মনে রেখো তুমি কিন্তু দুজন নও, একজন। এদের মধ্যে কেবল একটি সত্যি, কিন্তু মিথ্যে একটিও নয়। কাঁচের যে কালো দেয়ালের ভিতর দিয়ে তুমি আগে কিছু দেখনি, এখন সেটা পরিষ্কার, প্রকৃতিতে এমন দেয়াল দেখা যায়না তবে যা দেখবে তা হল তোমার একটি আবছা ছায়া ছুটে যাচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখার পর তোমার মাথা ঘোলা হয়ে যাবে এটুকু আমি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি। হাহাহা

আজকাল ভয়ংকর ভয়ংকর ঘটনায় খুব হাসি পাচ্ছে। মৃত্যুকে খুব সহজভাবে নেওয়ার পর মাথার উপর থেকে চাপ কমে যাচ্ছে। প্রতিটা নতুন পদক্ষেপের সাথে আগে যেমন আনন্দ হত, একই সাথে মাথায় কাজ করতো, ফিরে যাব কেমন করে!! এখন আর ভাবিনা, ফিরে যাবনা। ব্যাস! দুশ্চিন্তা শেষ। এখন ভালো লাগছে

যাই হোক তুমি বেগ কমিয়ে আলোর চেয়ে আরো কমিয়ে আনতেই ডানে তিন নম্বর গেট খুলে গেলো। অন্য আরেকটি রাস্তা। ঘড়ির কাটা আবারো উল্টোদিকে ঘুরতে লাগলো, তোমার নয়! তোমার কাছে অন্য আর সবার। কিন্তু তাদের সাথে রয়েছে তোমার অপর স্বত্বারাও তুমি আগের জায়গায় যেতে পারলেনা। সিনেমার রিল উল্টোদিকে ঘুরবেনা। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ এসব শব্দ প্রায় অর্থহীন লাগে আজকাল। এটা কোন সাল, কত তারিখ প্রশ্ন এখন আমাদের কাছে অবান্তর

এমনটি - ঘটে চলেছে আমাদের সাথে, আমার সাথে, প্রায় এক যুগ ধরে। সকল ইনফরমেশন নিয়ে ছুটে যাচ্ছি ভবিষ্যৎ- অতীতে কিছুই পাঠাতে পারছিনা
অতীতে নাক গলাতে পারছিনা। কাউকে বলতে পারছিনা

কারণ প্রকৃতি অতীতে গিয়ে তোমায় বিশৃঙ্খলা করতে দেবেনা। যেমন মরার পর মানুষকে আবার পৃথিবীতে ফিরে এসে তার মৃত্যু অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সুযোগ দেয়া হয়না

তুমি সব দেখবে, নিজের চোখে সব কিছু ঘটতে দেখবে.. কিন্তু ছুঁতে পারবেনা

পৃথিবীর মানুষের সাথে এখন আমাদের লক্ষ কোটি বছরের ব্যবধান। পৃথিবী নামক গ্রহ হয়ত তার সূর্যসহ কবেই ধ্বংস হয়ে গেছে। জানিনা, অনুমান করছি। পৃথিবী থেকে আমরা তো অনেক অনেক দূরে

কিন্তু তবু যদি এই বই তোমার হাতে এসে পৌছায়, আর সালটা যদি হয় ২১০০ সালের পূর্বে। তাহলে জেনো যে প্রকৃতির সবচেয়ে প্রলয়ংকারী অশুভ ঘটনাটাও ঘটে গেছে। প্রকৃতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বিধ্বংসী স্পর্ধা। কারণ এই বইটি তোমার হাতে যাওয়া মানে, অতীতে পৌঁছে যাওয়া। যা কিছুতেই হওয়ার কথা না

তুমি যদি নিষেধ অমান্য করে বইটি এখনো পড়া চালু রাখো, তোমারও তাই হবে যে আমার সাথে হয়েছে। আমার এক্সপেরিমেন্টের সবচেয়ে বড় এক্সিডেন্ট। জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল, সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা, সবচেয়ে বড় ত্রুটি। যার জন্য অনন্তকাল কেউ আমায় ক্ষমা করবেনা

যার জন্য মৃত্যুর পরও আমাকে অনুশোচনায় পুড়তে হবে। আমার সে ভুলের ক্ষমা নেই

ওরা আমায় পর্যবেক্ষণ করছে, আমাকে যে কোন সময় মেরে ফেলবে। ওদের আমি দেখতে পাইনা। কিন্তু ওরা সারাক্ষণই আমার দিকে চেয়ে আছে। আমাকে পর্যবেক্ষণ করছে। আমি ওদের উপস্থিতি টের পাই

যদি কখনো তোমার চারপাশে মৃদু আলোর ঝলকানি দেখতে পাও যা তোমার কাছে জোনাক বলে ভুলও হতে পারে। তা এক বিপদজনক শক্তিশালী রেডিয়েশন। তার শরীর থেকে বিচ্ছুরিত হচ্ছে। গামা রে রেডিয়েশন। সে আসছে। তোমার দিকে ছুটে আসছে এক মুহূর্তে সব ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেবে সে। এই পর্বত, পাহাড়, সমুদ্র সব এক নিমিষেই চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারে এক নিমিষেই। দয়া মায়াহীন নিষ্ঠুর, আর ভয়ংকর পিশাচের মত এক উন্মাদ দানব, যাকে দেখা যায়না, ধরা যায়না, ছোঁয়া যায়না। তাকে মারতে পারবেনা, কারণ তার মৃত্যু নেই। তাকে হারাতে পারবেনা, কারণ সে তোমার ভবিষ্যৎ দেখতে পারে, বদলে দিতে পারে, তোমাকে না জানিয়েই নৃশংসভাবে হত্যা করে ফেলতে পারে

এই- হল, The Immortal Ghost.

আমার একটি ভুলের ফসল। যার ক্ষতিপূরণ পৃথিবীকে হাজার হাজার বছর পোহাতে হবে।"

***
আবীর বই বন্ধ করে হতবুদ্ধের মত বসে আছে। তার চারপাশে এতো রেডিয়েশন হচ্ছে যে, পুরো ঘর আলোয় ধূসরিত হয়ে গেছে। তার শরীরের ভিতর দিয়ে বিপদজনক গামা রে প্রবেশ করছে। এভাবে চলতে থাকলে কারো আসার প্রয়োজন নেই, এই তেজস্ক্রিয় গামা রে- বিকিরণেই তার মৃত্যু হয়ে যাবে।

আবীর কল্পনাও করতে পারেনা, যার শরীর থেকে এমন ভয়ানক রেডিয়েশন হতে পারে, যার কেবল শরীরের রেডিয়েশনে মানুষ মারা যেতে পারে সে কি অভাবনীয় শক্তিধর প্রাণী!!!

****

আবীরের মনে পড়ে যায় তার ক্লাসের এক ছেলের শরীর থেকেও ভয়ংকর এক রেডিয়েশন হয়, যার দরুন সে মরতে বসেছিল।

তবে সে রেডিয়েশনের নাম দুর্গন্ধ! :p

Next part

published..

পরের পেজে,
১৪. পরা মহাবিশ্বের ঠিকানায়

(**টকিওন- ইমেজিনারি ভরের একটি হাইপোথেটিকাল কণা যা আলোর চেয়ে বেশি বেগে ছুটে যেতে পারে )

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro