Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

১২- মৃত্যুছায়া - ( পর্ব-২)

দুপুর গড়িয়ে, বিকাল হয়ে প্রায় সন্ধ্যা হবে হবে করছে।

আঁখি তার রকিং চেয়ারে বসে ঘুমুচ্ছে। তার পাশে কফির কাপে 'কপি লুয়াক' এর অবশিষ্টাংশ এখনো পড়ে আছে। আঁখি স্বপ্ন দেখছে.....

* * *

.... সমুদ্রতীরে হাঁটু গেড়ে বসে আঁখি চেয়ে আছে আবীরের দিকে। আঁখির কোলের উপর মাথা রেখে নীল আকাশের নীচে নীলাভ রঙে একটু একটু করে ছেয়ে যাচ্ছে আবীরের মুখ।

নীল হয়ে আসছে তার সারা দেহ। একটু একটু করে যখন পুরোটা নীল হয়ে যাবে, তখন আকাশ তাকে তার সাথে করে নিয়ে যাবে ঐ আকাশের বিশাল উচ্চতায়।

সবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

এক খণ্ড তারা হয়ে জ্বলবে সে রাতের আকাশে। এক বেদনা বিধুর কল্পনা হয়ে দেখা দেবে কখনো আঁখির হৃদয়ে।

আঁখি আবীরের দুটি গালে আস্তে করে হাত রাখে। কি ভীষণ ঠাণ্ডা তার গাল দুটি। আবীরের কপালের উপর তার ঠোঁট স্পর্শ করে। তার বন্ধ দুটি চোখ থেকে ঝরে পড়া অশ্রু আবীরের গাল বেয়ে নামতে থাকে নীচে।

চাঁদের আলোতে মুক্ত হয়ে জ্বলতে থাকে সে অশ্রুকণা গুলি।

" আমি তো আমার সবটুকুর বিনিময়ে চেয়েছিলাম তোমায়! আমার সর্বস্ব রেখেছি জমা, তোমার অপেক্ষায়। আমায় দুঃখের নদীতে ভাসিয়ে তুমি কোন শহরে রবে? "

আঁখি দেখল তার মত করে একফোঁটা অশ্রু যেন আবীরের চোখ থেকেও গড়িয়ে পড়লো। আঁখি অশান্ত হয়ে উঠে, ক্ষিপ্র হয়ে উঠে।
শক্ত হয়ে উঠে বসে। হঠাৎ করে তার ভিতরে এক ধরণের ক্রোধ জেগে ওঠে, এ জগত তার শেষটুকু কিছুতেই কেড়ে নিতে পারবেনা।

আঁখি বেঁচে থাকলে আবীরও বেঁচে থাকবে।

অনেকটা ছেলে মানুষের মত কাঁদতে কাঁদতে ফিসফিস করে বলতে থাকে আঁখি,

"আবীর শুনতে পাচ্ছো আমার কথা? আমার কথার এক বিন্দুও যদি পৌছায় তোমার কানে, তোমাকে ফিরে আসতে হবে। তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই আবীর, আমার আর কিছু নেই। আমার দিকে চোখ মেলে তাকাও। এই যে দেখো আমি বসে ডাকছি তোমায়, আমার জন্যে হলেও তুমি ফিরে এসো। এ প্রহর শুরু হয়েছে কেবল, চোখ মেলে তাকাও আবীর। আমি বিশ্বাস করি তুমি ফিরে আসবে। "

আঁখি জানে তার সকল কথা অসংলগ্ন, অর্থহীন, তবু সে বিশ্বাস করতে চায়না সে কথা। মিথ্যা! সব মিথ্যা। আবীরের কিছুই হয়নি। তার কিছু হতে পারেনা।

খুব সম্ভবত চারপাশের প্রকৃতির উপর কোন এক অজানা কারণে আঁখির প্রভাব ছিল।

তাই যেন প্রায় এক যুগ পরে হলেও এই পৃথিবীর শত সহস্র বছরের নিয়মকে অগ্রাহ্য করে আবীর ফিরে এলো।

" আঁখি? "

আঁখি চমকে উঠে ঘুরে তাকিয়ে দেখে আবীর যেখানে পড়ে ছিল সেখানে সে আর নেই। আবীর দাঁড়িয়ে ছিল তার পিছনে। আঁখির ঘাড়ে হাত রাখতেই আঁখি চমকে গিয়ে পিছনে ফিরে আবীরকে দেখতে পেলো।

আঁখির পলকহীন চোখে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।

আবীর এক পা করে আঁখির কাছে এগিয়ে যায়। আঁখি বিস্ময়ে কথা বলতে পারেনা। আবীর কাছে এসে একটু খানি হেসে আঁখিকে দুবাহুর মাঝে আঁকড়ে ধরলো। আঁখি প্রায় না শোনা যাওয়ার মত ঠোঁট নাড়লো,

" এও কি সত্যি?? " বলতে বলতে চারিদিক ঘোলা হয়ে আসে, চোখ ভিজে উঠে আঁখির। সৃষ্টিকর্তা কি তাকে সত্যি সত্যি অলৌকিক নিদর্শন দেখাচ্ছেন? ভোরের আলোয় আবার সব মিথ্যে হয়ে যাবেনা তো?

আবীর আঁখিকে ছেড়ে দিয়ে তার গালে হাত দিয়ে স্বরযন্ত্রীর মত করে বলে,

" না আঁখি। মিথ্যে হয়ে যাবেনা, আর কিছুই মিথ্যে হতে পারবেনা। " আবীর আবারো মুচকি হেসে আঁখির মুখের আরো কাছে মুখ এনে বলে,
" আমি বলেছি না, আর কোন ভয় নেই! আমাকে দেখো, আমি পুরোপুরি ঠিক আছি। আমার পুরো শরীরে একটি আঁচড়ের দাগও নেই। "

কথা বলতে বলতে আবীরের মুখ আঁখির এতো কাছাকাছি চলে এসেছে যে, আবীরের ঠোঁট আঁখির ঠোঁটের ঠিক সামনে।

এক অজানা আশংকায় আঁখির বুক দুরু দুরু করতে লাগলো। সে কিনা শ্বাস পর্যন্ত নিতে পারছেনা ঠিক মত। যেন একবিন্দু কেউ নড়লেই ঠোঁটে ঠোঁটে একে অপরকে ছুঁয়ে ফেলবে।

আঁখি চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। তবু সে অনুভব করতে পারে আবীরের সমগ্র সত্ত্বা, তার হৃদয়ের প্রতিটা অণু পরমাণু, প্রতিটা বিন্দু কণা।

আবীরের গরম শ্বাসে তার সারা শরীরে শিহরণের ঢেউ খেলতে থাকে দিয়ে। আঁখি চোখ বন্ধ করে আছে। শ্বাস নিতেও যেন তার বুক কেঁপে উঠছে।

আবীর বলে চলেছে, " এ তো তোমারই স্বপ্ন আঁখি! তুমি সে স্বপ্নের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছ। তোমার স্বপ্নকে তুমি এখন যেভাবে সাজাতে চাইবে এটা সেভাবেই তৈরি হবে। "

আঁখি চোখ বড় বড় করে তাকায়, " সব স্বপ্ন!! "

" না! শুধু স্বপ্ন নয়। স্বপ্নের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। এ এক পরাবাস্তব জগত। বাস্তব আর অপর কোন ভিন্ন সময়ের ভিন্ন কোন স্থানের বাস্তবের মাঝামাঝি পর্যায় হলো স্বপ্ন।

স্বপ্ন কোন অলীক বস্তু নয়। স্বপ্ন অসংখ্য জগতের মাঝে একটি লিংক মাত্র। অন্য বাস্তবে প্রবেশের এক অনন্য দরজা। প্যারালাল ইউনিভার্সের মূল মিডিয়া। "

আঁখি অবাক হয়ে বলে, " প্যারালাল ইউনিভার্স? "

" হ্যাঁ! অসংখ্য জগত! একটির সমান্তরালে আরেকটি জগত, তার পাশে আরেকটি, এভাবে। সব জগতে তুমি আছো, আমি আছি, অন্যভাবে।

অন্য জগতে, খুব কাছাকাছি হলেও আমাদের অন্য শরীর, অন্য রকম মস্তিষ্কের সিন্যাপ্স সংযোগ, ভিন্ন সে স্মৃতি। তবু আত্মা একই। আত্মাও এক ধরণের আলো, এক ধরণের শক্তি, সুপার লুমিনাস লাইট। কখনো কখনো সেও কিছু তথ্য বয়ে নিয়ে যায় এক জগত থেকে অন্য জগতে।

মানুষ এক স্থানে ঘুমিয়ে অন্য কোন স্থানে জেগে ওঠে। এই স্থানগুলিতে কোথাও সময় খুব দ্রুত, আর কোথাও খুব ধীর। এখানকার এক মিনিট হয়ত অন্য কোথাও এক ঘণ্টার চেয়ে বেশি, হয়ত এক বছরের চেয়েও বেশি। কিংবা এক ন্যানো সেকেন্ডের থেকেও কম।

যখন তার অন্য কোথাও জেগে ওঠার সময় হয়ে যায়, তার সকল ইন্দ্রিয় ঘুমে ঝাপসা হয়ে ওঠে। তাকে ঘুমাতে হয়।

ঘুমের মাঝে যখন কেউ ডেকে দেয়, তার উঠতে কয়েক মুহূর্ত ব্যয় হয়, এই কয়েক মুহূর্ত অন্য কোথাও অনেক বেশি সময়।

মানুষ চাইলেই অন্য জগতে চলে যেতে পারেনা। দুটি জগতের মাঝেও আটকা পড়ে যায়।

যেমন এখন আছি। এটাই দুই বাস্তবের মাঝের অংশ। পরাবাস্তবতা। তাই তুমি যেমন চাইছো, তেমন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছো।

এই পরাবাস্তব জগতের নিয়ন্ত্রণ অন্য কেউও নিয়ে নিতে পারে। যখনই অন্য জগতের খুব কাছাকাছি চলে যাবে, সব তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

আঁখি কেবল শুনে যায়, কিন্তু বিশ্বাস করতে পারেনা আবীরের কথা।
" এসব তুমি কি বলছ? এর মানে কি? তোমাকে কে বলেছে এসব? "

আবীর দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে উত্তর দেয়,
" বই পড়ে জেনেছি। "

আবীর অন্যমনস্ক হয়ে সাগরের তরঙ্গের দিকে তাকিয়ে প্রায় মনে মনে উচ্চারণ করে, " The Immortal Ghost Nature & The Unseen Crack of the Reality! "

আঁখির চিন্তা ভাবনা এলোমেলো হয়ে যায় আবীরের কথা শুনে। তারও জানার ইচ্ছা ছিল, এরকম কতগুলি জগত আছে! এ কি শুধু ডাবল রিয়ালিটি, নাকি ট্রিপল, নাকি অসংখ্য - অগণিত রিয়েলিটির সমন্বয়? কিন্তু তার আগেই সবকিছু তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলো।

আঁখি সাগরের দিকে তাকিয়ে দেখে, সাগরের মাঝ থেকে কেউ একজন উঠে আসছে। কিছুটা এগিয়ে আসতেই যখন স্পষ্ট চেহারা দেখা গেল, আঁখি প্রচণ্ড রকম শক খেলো। সে বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে দেখে আবীর। অন্য এক আবীর।

আঁখি ভয় পেয়ে তার আবীরের হাত চেপে ধরে। আবীরও তখন অনুভূতিহীন চোখে সে পথে তাকিয়ে আছে।

আরেকটু কাছে আসতেই আঁখি বুঝতে পারলো, দ্বিতীয় আবীরের সারা শরীর রক্তে ভেসে গেছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাড় ভেঙে বেড়িয়ে গেছে। এক পা এক পা করে এগিয়ে আসছে সামনে।

তার একটু পর পিছন থেকে আরো একজন আবীর উঠে এলো। তার পিছনে আরেক জন, কারো হাত ভেঙে ঝুলে গেছে, কারো কোটর থেকে চোখ খুলে পড়েছে। কারো দুটি পা ভেঙে গেছে, হাতের উপর ভর দিয়ে তীর বেয়ে অশরীরীর মত শিষ দিয়ে দিয়ে এগিয়ে আসছে।

আঁখি ভয়ে চিৎকার করতে থাকে। এক একটা বীভৎস শরীর দেখে তার গা গুলিয়ে যাচ্ছে। সে তাকিয়ে থাকতে পারেনা, কি ভয়ংকর একটার পর আবীরের মত দেখতে কিছু মৃত মানুষের মত তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। শত শত, হাজার হাজার, পুরো সমুদ্র যেন ভরে যাচ্ছে লক্ষ কোটি আবীরের সমাগমে।

এক মৃত্যুপুরীর মত ভয়াল অশরীরী পরিবেশে পাল্টে গেলো পুরো সমুদ্র।

আবীর আঁখিকে ধরে প্রচণ্ড বেগে ঝাঁকি দিতে থাকে,

" জেগে ওঠো, জেগে ওঠো আঁখি, এখনি তোমাকে জেগে উঠতে হবে। অনেক বড় বিপদ হয়ে যাবে নইলে। সবকিছু আমাদের আয়ত্তের বাইরে এখন। ওরা আমাদের সকল নিয়ন্ত্রণ দখল করে ফেলছে। তুমি ওদের আটকে রাখতে পারবেনা। জেগে ওঠো আঁখি। তুমি জেগে গেলেই ওরা আর আমাদের নাগাল পাবেনা। দোহাই তোমার জেগে ওঠো। "

* * *

ছোট্ট একটা তারের উপর দুটো কাক বসে আছে। এক পায়ে ভর দিয়ে তাদের একজন অপর পায়ে রুটির টুকরা ধরে খাওয়ার চেষ্টা করছে। বেশি সুবিধা হচ্ছেনা। অপর কাকটা তাকিয়ে দেখছে।

শুধু আঁখি নয়, কাকেরাও হয়তো এমন দৃশ্য আর দেখে নাই। মনে হচ্ছে যেন পাশের কাকটাকেই ইমপ্রেস করতে সার্কাস দেখাচ্ছে। যদি ব্যালেন্স হারিয়ে কাকটা পিছনের দিকে ঝুঁকে পড়ে একটা ঘুরান্তি দিয়ে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসতে পারতো, তাহলে আর কোন সন্দেহ থাকতো না।

আঁখি এক কথায় মেনে নিতো, হি ইজ দা ম্যান! জিনিয়াস!

দূরের একটা হিজল গাছে দুটি বাচ্চা দোল খাচ্ছে। একজন পিছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছে। ধাক্কা দিতে সে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করছে, পারলে তাকে ঠেলে আসমানে পাঠিয়ে দেয়।

আঁখির ভয় হয়, পিছন দিকে দোলনা ফিরে এসে তাকেই না আবার বাড়ি দিয়ে চোঁ করে উড়িয়ে দেয়।

কিন্তু তা হলোনা। যাকে ধাক্কা দিয়েছে সেই বেগ সামলাতে না পেরে কয়েকবার ঘুর পাক খেয়ে মাটিতে সাটাম করে আছাড় দিয়ে পড়লো। এক আছাড়ে চিত।

আঁখি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আরেক কাপ কফি খাচ্ছে। কাঁচের জানালা খুলে দিয়ে জানালার একপাশে উঠে বসলো। তার মন বেশ ভালো। কিছু একটা স্বপ্ন দেখছিলো হয়তো সে, বোধহয় স্বপ্নটা তেমন খারাপ ছিলোনা। কিন্তু আঁখির কিছুই মনে নেই এখন।

এটুকু শুধু মনে পড়ে আবীর তাকে বুকের মাঝে ধরে রেখেছে। আর তার গরম শ্বাসে আঁখির সারা শরীরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। আর চারিদিকে অসংখ্য জোনাক জ্বলছে।

* * *

আঁখি রেডি হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হলো মিলন কে দেখতে। সাদিয়া ফোন করে অবশ্য বলেছে তেমন কিছুই হয়নি। পড়ে গিয়ে বুকে সামান্য ব্যথা পেয়েছে। ওরা পাঁচজন ছিলো একসাথে। কি জানি কি দেখে ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে পাঁচজনেই চিত।

সকালে বুয়া এসে পানি মেরে মেরে সবাইকে জাগিয়েছে। এখন সবাই ঠিক আছে। তবে মিলন হাসপাতালের বেডে পায়খানা করে সবাইকে বিব্রত করে ফেলেছে। এই হলো ঘটনা।

* * *

Next part>>>

১৩. ডঃ এরিক কার্নেলের বই
ও নিষিদ্ধ এক্সপেরিমেন্ট

পরের পৃষ্ঠায়>>>>

ভালো লাগলে ভোট করতে
ও আপনার মতামত
জানাতে
ভুলবেননা।
:)

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro