Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

১০- দুঃস্বপ্নের প্রথম প্রহর- (দ্বিতীয় পর্ব)

রাত ১২:০০টা বাজে, কাছে কোথায় জানি বিশাল এক ঘণ্টা ঢং ঢং শব্দে তা জানান দিচ্ছে।

সবাই চলে এসেছে। যদিও গোল হয়ে চক্রে বসা মাত্রই সবার উত্তেজনা একদম দমে গেছে।

এতক্ষণ সান আত্মা নিয়ে ভীষণ ডার্টি ডার্টি জোকস মারছিল। এগুলিকে সে ঠাকুমার ঝুলি বলে ডাকে। যার আত্মা ডাকা হবে- প্রিয়া নাম যার, সে নাকি পরীর মত সুন্দর দেখতে।

পরীর মত সুন্দর মানে- আর কি লাগে। ঠাকুমার ঝুলি খুলে গেলো। সবার দাঁতের মাড়ি প্রশস্ত হল।

আসলে কিন্তু অতটাও সুন্দরী না, একটু বেশি মোটা। সান বাড়িয়ে বলছে। তবু কথা হল, ডার্টি জোকস কে সান একেবারে আর্টের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

বলতে দ্বিধা নেই যে, সানের ডার্টি জোকস শুনলে ধুম মেরে পড়ে থাকা- মরা মানুষও খিল খিল করে হেসে উঠবে। সবাই ভাববে, এ বুঝি এতক্ষণ মরার ভং ধরে ছিল, মরে নাই। আসলে কিন্তু তা না।

শুধু আবীর আজ ঝিম মেরে আছে, কোন কথা বলছেনা। এমনিতে ডার্টি জোকস আবীরের খুবই পছন্দ, কিন্তু আজ সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার।

সত্যি বলতে কি চক্রে বসার পরপরই সবাই-ই একদম ম্যাদা মেরে গেছে। মাঝখানের আনন্দটুকু পরিবর্তন হয়ে একধরণের বিষাদ অনুভূতি বিরাজ করছে।

গ্যারেজের বাতি ফিউজ হয়ে গেছে কাল রাতেই। মোমের বাতি হালকা করে জ্বলছে। অমাবস্যা মানে চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। মোমের বাতি একটুখানি আলো দিলেও, আসলে আরো বেশি অন্ধকার করে ফেলেছে চারিদিক।

মোম মাঝখানে থাকায় কেউ কারো মুখ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেনা। এমন হালকা আলোতে সবকিছুই যেন আধা-ভৌতিক লাগছে। মাঝরাতে অতি সামান্য আলোতে আয়নায় তাকিয়ে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকলে যেমন একটা ক্ষীণ অস্বস্তি আর ভয় কাজ করে তেমনি কিছু একটা কাজ করছে সবার মধ্যে।

আবার মনে হয় যেন আড়াল থেকে কিছু একটা তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। খুব সন্তর্পণে তাদের দিকে লক্ষ্য রাখছে খুব অস্বাভাবিক কিছু একটা।

যে বিল্ডিংটায় মেয়েটা মারা গেছে তার পাশের বিল্ডিং এর নীচ তলায় সানদের গ্যারেজের কাছে একটা ছোট্ট রুমে বসে আছে ওরা, তারকা চিহ্নিত একটা চক্রের মাঝে পাঁচজন বসা।

তারকার প্রতিটা মাথায় একটি করে মোট পাঁচটি মোম জ্বালানো হল। একে অপরের হাত ধরে একটি গোল বৃত্তের মত করে বসে আছে আবীর, সান, মিলন, মোকতার আর লিয়ন। ঘরের চারদিকে চারটি আগরবাতি জ্বালানো হয়েছে।

পুরো রুম একটু একটু করে ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে চারিদিকে কেমন যেন অশরীরী একটা ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়েছে। রুম আরো অন্ধকার হয়ে গেছে। কিছু একটার ছায়া যেন দেয়াল বেয়ে বেয়ে উপরের দিকে উঠে পুরো দেয়ালটাকে অদৃশ্য করে ফেলেছে।

খুব সাবধানে তাকালেও দেয়াল আর কিছুতেই দেখা যায়না। ক্ষীণ সন্দেহ হয় সবার মনে, আদৌ তারা কোন ঘরে বসে আছে নাকি খোলা আকাশের নীচে।
একটা অজানা আশংকায় সবার সিনা টানটান হয়ে গেছে।

১৮৫২ সালের 'মডার্ন স্পিরিচুয়ালিজম' নামের একটা বই থেকে কিছু মন্ত্রের লাইন পড়া হবে, বিদেহী আত্মার উদ্দেশ্যে।

আত্মার আগমনের উদ্দেশ্যে মিলন খুব জোড়ে জোড়ে লাইনগুলি পড়তে লাগলো। তার গলার স্বরে একই সঙ্গে প্রচণ্ড উত্তেজনা আর অনেকখানি ভয় মিশ্রিত।

"Come to us who call you near,
come to us and settle here,
blood to blood, I summon thee,
blood to blood, return to me".

পুরোটা পড়ে শেষ করা মাত্রই, চক্রের একটা মোমবাতি ধুপ করে নিভে গেলো।

প্রচণ্ড শব্দে ধাম করে দুটো জানালার কবাট খুলে গেলো একসঙ্গে। এক মুহূর্তের জন্যে সবার হৃদপিণ্ড বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রচণ্ড বাতাসে কবাটগুলি জানালার সাথে বাড়ি খেতে লাগলো অনবরত। সোঁ সোঁ করে বাতাস ঢুকছে ঘরের মধ্যে। মনে হচ্ছে যেন একসাথে কয়েক হাজার বুনো জন্তুর মত কিছু ঢুকে পড়ছে ঘরে।

বাতাস যেন সরসর শব্দে কানের পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। সে শব্দ এতোই জান্তব যে মনে হচ্ছে অনেকগুলি প্রাণী একসাথে কথা বলার চেষ্টা করছে। সবাই একে অপরের হাত আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আতংকে সিটিয়ে যেতে লাগলো।

মিলন পড়তেই থাকে, আগের চেয়ে আরো জোড়ালো শব্দে। তার গলার স্বর কেঁপে কেঁপে উঠছে। ও ভয় পেলে ওর গলার শব্দ আরো বেড়ে যেতে থাকে।

"Come to us who call you near,
come to us and settle here,
blood to blood, I summon thee,
blood to blood, return to me".

আরো একটি মোমবাতি নিভে গেলো। দূরে কোথায় জানি সশব্দে বাজ পড়লো। যে শব্দে আত্মা পর্যন্ত কেঁপে যায়। ঠিক তখনই আবীর শুনতে পায় একসঙ্গে অসংখ্য কুকুর আর্তনাদের মত করে ডেকে ওঠে। যেন কুকুরগুলিও কোন অশরীরীর উপস্থিতি টের পেয়েছে।

আবীর মাঝরাতে অনেকবার দেখেছে, রাস্তায় অসংখ্য কুকুর অদৃশ্য কিছুকে ঘিরে চিৎকার করছে। তারপর কিছু একটাকে তারা করতে করতে বিদ্যুতের বেগে ছুটে যায়। কে জানে, তারা হয়ত এমন কিছু দেখতে পায় যা মানুষ কখনো পায়না।

হয়ত খুব খারাপ কিছু, হয়ত বা না, তবু তারা তাকে মানুষের আস্তানায় ঢুকতে দিতে চায়না। মানুষের অনিষ্ঠ যেন কিছুতেই না হয়, সে পাহারায় অলিখিত সৈনিক এর দায়িত্বে নিয়োজিত তারাও যেন এক নৈশের অতন্দ্র প্রহরী।

অন্ধকার প্রকট হয়ে চারিদিকে এক ধরণের ভ্যাপসা গরম বাতাস ছড়িয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে। অনেকটা উৎকট গন্ধযুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে যেন গা গুলিয়ে আসে সবার। জানালা খোলা। তবু সে জানালা দিয়ে দৃষ্টি ঘরের ভিতরে ফিরে আসে বারবার।

এই ঘরটি যেন পৃথিবী থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে। এই ঘরের বাইরে সবই যেন শূন্যতা। যেন মহাশূন্যে ভেসে আছে তারা এই পাঁচজন। আর কোথাও কিছু নেই। যেন চিরদিনের জন্য তারা হারিয়ে গেছে তাদের পরিচিত জগত থেকে।

ঠিক এমন সময় আবীর কানের পাশ দিয়ে কিছু একটার গরম শ্বাস ছাড়ার শব্দ শুনলো। আবীর নড়াচড়া না করে একদম স্থির হয়ে নিজেকে শান্ত রাখল। ধীরে ধীরে তার বাঁদিকে তাকানোর চেষ্টা করে, যেন তার পাশেই কিছু একটা লকলকে জিহ্বা বের করে তার ঘাড়ের উপর দিয়ে মাথা বের করে দিয়ে তার দিকে হিংস্র চোখে তাকিয়ে আছে। যেন মাথা ঘুরালেই ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে তার শরীর।

মিলন হঠাৎ করে পাগলের মত ছটফট করতে লাগলো। সে যেন জন্তুর মত কিছু একটা দেখতে পেয়েছে। সে নিশ্চিত দেখেছে, খুব কদাকার কিছু একটা। কি বিশাল, কি কুৎসিত, কি দানবীয়, কি অপরিমেয় শক্তিধর এক জন্তুর মত ছায়া। মিলন নিজের উপরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। তার চোখ লাল হয়ে ধীরে ধীরে ফুলে উঠছে, বিস্ফারিত চোখে বড় বড় করে তাকিয়ে আর্তনাদের মত করে দুনিয়া কাঁপিয়ে পড়ে যেতে লাগলো, blood to blood- I summon thee, blood to blood - return to me!

চতুর্থ মোমবাতি নিভে গেল।

প্রচণ্ড তীব্রতায় কি যেন মাথার উপর দিয়ে কি ভীষণ ক্ষিপ্র গতিতে মিলনের দিকে ছুটে গেলো। মাথা ঘুরিয়ে কেউ কিছু দেখতে পেলোনা। তবু এটুকু সবাই দেখতে পেলো, মিলন বৈদ্যুতিক শক খাওয়ার মত ভয়ংকরভাবে কাঁপছে।

মিলনের চোখ আস্তে আস্তে উল্টে যাচ্ছে। তার বুকে কিছু একটা আঁচড়ে আঁচড়ে সবকিছু ছিঁড়ে ফেলছে নিমিষেই। কিন্তু কাউকে দেখা যায়না সেখানে।

মিলনের মুখ দিয়ে ফেনা উঠছে, অপ্রকৃতস্থের মত মাটিতে পড়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলো, মৃগী রোগীর মত মোচড়াতে লাগলো সারা দেহ। শরীরের প্রতিটা কোষ নিয়ন্ত্রণহীনভাবে নড়ছে। তবু মৃদু উচ্চারণে সে পড়ে যেতে লাগলো, come to us who call you near, come to us and settle here.

সবাই বুভুক্ষের মত চেপে ধরেও কিছুতেই থামাতে পারেনা তাকে। চারিদিকে কি হচ্ছে সেটা বোঝার মত কারো একবিন্দু হুস নেই, বোঝার ক্ষমতাটুকু হারিয়ে গেছে।

মিলনের নিজের উপর কোন কন্ট্রোল নেই। কেউ তাকে চুপ করাতে পারছেনা।

বাতাসের তীব্রতায় চারপাশের সবকিছু শূন্যে উড়ছে। পুরো ঘর যেন এক জাহান্নামে পরিণত হয়ে গিয়েছে। কেউ দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেনা। শরীরের সকল শক্তি কে যেন চুষে খেয়ে ফেলছে। এতজন মিলেও এতক্ষণ ধরে মিলনকে থামিয়ে রাখতে পারছিলনা। তার শরীরে কোথা থেকে অসুরের মত শক্তি এসে জমা হয়ে গিয়েছিল।

জ্ঞান হারাবার আগে শেষবারের মত উচ্চারণ করলো, " Blood to blood I.... summon thee............ blood to blood.. return...to.....me "

ঘরের পঞ্চম এবং শেষ বাতিটাও দপ করে নিভে গেলো।

ঠিক সেই মুহূর্তে যে বিভীষিকাময় ঘটনাটা ঘটেছিলো, তা কেউ মৃত্যুর পরও ভুলতে পারবেনা। কেউ বর্ণনা করতে পারবেনা সেই বীভৎস দৃশ্যের কথা। দেহের মৃত্যু ঘটবে কিন্তু তবু আত্মার মাঝে সেই ভয় ছড়িয়ে থাকবে শতাব্দীর পর শতাব্দী।

ঘরের ঠিক বাহিরেই সারা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কাঁপানো প্রচণ্ড শব্দে মৃত্যুক্ষুধার মত ভয়ংকর অজস্র গোঙ্গানির মত শব্দ করতে করতে ঘরের দরজা ভেঙে অদৃশ্য মহা শক্তিধর কিছু ঘরে প্রবেশ করতে লাগলো।

" আবীর! ওরা চলে এসেছে "
সান জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছে। মাটিতে ঢলে পড়ার আগে মাথা ঘুরিয়ে আবীরের দিকে তাকিয়ে তার রক্তশূন্য মুখে একফোঁটা নির্জীব হাসি ফুটিয়ে বলল, " আবীর! প্রিয়া নয়! সব পিশাচেরা চলে এসেছে। রক্তচোষা পিশাচ।।"

.... * ..... * ...... * ..... * ...... * ..... * .....

বহুদূর থেকে সমুদ্রের ভয়ংকর গর্জন শোনা যাচ্ছে। এক ঘন অরণ্যের ভিতর দিয়ে হেটে যাচ্ছে আবীর। দুপাশ থেকে গাছগুলি যেন সরে সরে জায়গা করে দিচ্ছে তাকে।

আবীরের সমস্ত শরীরে এক বিন্দু শক্তি নেই। পথ চলতে পারছেনা। দুটো পা অসাড় হয়ে আসছে। ক্লান্ত অবিশ্রান্ত শরীরটাকে কোনভাবে টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কাছে কোথায় একটা ছোট কুটির আছে। কিন্তু তার ধারণা, ঐটুক পথ ছুটে চলার শক্তি তার নেই।

এখানে আবীর অনেকবার এসেছে। তবু অমাবস্যার আলোহীন অন্ধকারে সবকিছু অচেনা মনে হয়। পথের বুনো লতা, ডালপালার তীক্ষ্ণ খোঁচা শরীর ভেদ করে অনায়াসে ঢুকে যাচ্ছে আবীরের শরীরে।

প্রতিটা পদক্ষেপে পায়ে কাঁটা ফুটে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে অপর পাশ দিয়ে। কিন্তু কিছু করার নেই। একটু একটু করে রক্তে ধুয়ে যাচ্ছে সারা শরীর। বুনো পোকা মাকড় কামড়ে চামড়ার নীচে বিষ ঢুকিয়ে দিচ্ছে। নিমিষেই দগদগে ঘা হয়ে যাচ্ছে এখানে ওখানে।

আবীর ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে কতবার তা সে জানেনা।কিভাবে পৌঁছেছে, এটা কোন জায়গা তাও তার জানা নেই।

বনের গাঢ় অন্ধকারে একটি ছায়া হয়ে চলমান অশরীরীর মত পা টেনে টেনে ছুটে যাচ্ছে আবীর। তার কালো জামা আর আলোহীন বন, দুটি অন্ধকার যেন এক হয়ে আঁধারে একাকার করে ফেলেছে সবকিছু, আলাদা করে সেখানে আবীরকে খুঁজে পাবার সাধ্য নেই কারো।

আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে কুটিরটা দেখা যাবে। এদিকে বামে একটা রাস্তা চলে গেছে একটা ছোট খালের দিকে। ছোট্ট খাল, মাত্র এক হাঁটু পানি। অথচ এতটুকু পানিতে বাস করে চার চারটা বিশাল দানব সাইজের কুমীর। ক্ষুধার্ত কুমীরগুলি প্রায়ই রাতের অন্ধকারে খাদ্যের সন্ধানে বের হয় বনের সরু পথ ধরে। বনের পশু-পাখিরা নড়াচড়া পর্যন্ত করতে সাহস পায়না সে সময়ে। আবীর সে কথা জানেনা।

তবে ঠিক উল্টোদিকে আধা মাইলের মত গেলেই চোখে পড়বে সেই সমুদ্র। যার সাথে মিশে আছে আবীরের কত যুগ যুগান্তরের গল্প। আবীরের তেপান্তরের গল্প। অগণিত হৃদয় তোলপাড় করা ইতিহাস।

সমুদ্রের ভয়াল গর্জন এখন আর শোনা যাচ্ছেনা। আবীর কুটিরের দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। তার ক্লান্ত শরীর যেন আর প্রাণের স্পন্দনও খুঁজে পায়না। হাঁটু ভেঙে মাটিতে পড়ে যায় সে। দূরে কয়েকটা ডাহুক ডাকার শব্দ শোনা যাচ্ছে। সে ডাকটাও যেন কি ভীষণ করুন শোনায়। গা হিম হিম করা এক অন্যরকম অনুভূতি লাগে। যে ডাক শুনে বুকের কোথায় যেন মোচড় দিয়ে ওঠে এক অসহনীয় শূন্যতায়।

আবীর শুয়ে আছে বিছানায়। সারা শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসছে। পুরো শরীর রক্তে ভিজে গেছে, যদিও অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। মাথার উপর প্রচণ্ড ভারী কিছু একটা যেন চেপে বসে আছে। প্রচণ্ড জ্বরে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছে তার পুরো শরীর। ঘোরের মাঝে কি যেন প্রলাপ বকছে। কিছুই শোনা যাচ্ছেনা।

এখন একটুকুও হুস নেই তার। যদি থাকতো তাহলে শুনতে পেতো তার মাথার কাছে কে যেন বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। সে কান্না মানুষের না তা নিশ্চিত। অন্ধকারে দেখা যাচ্ছেনা তাকে, তবে আলো থাকলেই তাকে দেখা যেত, এতটা নিশ্চিন্তে কেউ বলতে পারবেনা সে কথা।

কুটিরের খোলা জানালা দিয়ে হুহু করে বাতাস ঢুকছে ঘরে। কয়েকটা জোনাকি পোকা এসে জড়ো হয়েছে আবীরকে ঘিরে। সে সামান্য আলোতে আবীরের নিষ্প্রভ মায়াভরা মুখখানি দেখা যাচ্ছে অল্প অল্প। আর তার বুকের দেখা যাচ্ছে একটা ইংরাজি বই। যার নাম, " 'The Immortal Ghost Nature and the unseen crack of the Reality!'

হ্যাঁ! এই সেই নির্জন দ্বীপ যেখানে তার বাবা সব ছেড়ে ছুড়ে চলে এসেছেন। এই সেই জায়গা যেখানে তিনি প্রকৃতির অস্বাভাবিক ও অচিন্তনীয় কিছু পরিবর্তন করে ফেলেছেন। সে পরিবর্তনের ভয়াবহতা কতটা ব্যাপক তা আবীর অনেক পরে জেনেছিল। জেনেছিল তার সবটুকু বিসর্জন দিয়ে। সবই যেন এক জান্তব হ্যালুসিনেশন।

যে দ্বীপ পানির নীচে থাকার কথা তা কি করে আবার উপরে উঠে এসেছে, সে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মত কেউ ছিলনা সেখানে।

আবীরের শ্বাস ঘন থেকে ঘন হয়ে আসছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ভীষণ। আজ রাতটা কোনভাবে বেঁচে থাকলে তার আর ভয় নেই।

ঘরের দরজা সম্পূর্ণ খোলা। রক্তের গন্ধে মরিয়া হয়ে হিংস্র দানবের মত ক্ষুধার্ত কুমীরগুলো চষে বেড়াতে লাগলো পুরো বন। ফোঁটা ফোঁটা রক্তের ছোপ ছোপ দাগ অনুসরণ করে এ অবধি পৌঁছুতে তাদের দেরী নেই আর। সেও আর কয়েক মুহূর্তের অপেক্ষা কেবল মাত্র।

  আবীরের মাথার কাছের কান্নাটা বন্ধ হয়েছে। কি কারণে তাও কেউ বলতে পারেনা। সবই যেন দুর্বোধ্য প্রকৃতির এক অদ্ভুত লীলা।  

Next part

** Revealed **
+++ Turn the page+++

ভালো লাগলে ভোট করতে
ভুলবেননা, :)
আর আপনার অনুভূতি অবশ্যই
কমেন্টে জানাবেন।
:)

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro