২৮শে বৈশাখ, ১৪২৪
যথারীতি, বিয়ের দিন চলে এলো।
'২৫শে বৈশাখ, ১৪২৪'
পাত্রের কথা তো আগেই বলেছি। অগ্নিভ রায়চৌধুরী। পারিবারিক ব্যবসা, ওই chain of hotels। অবস্থাপন্ন, কিন্তু আমাদের মতো না।
আইবুড়োভাত পর্ব -- বাড়ির সকলে মিলে অনেক ভালো ভালো রান্না করে খাইয়েছিলেন, মানে আমার জাজ পছন্দ। যেমন, সাদা ভাত, সোনামুগের ডাল, পাঁচ ভাজা (শাক, আলু, পটল, বেগুন আর বড়ি), ইলিশ পাতুরি, দই-কাতলা, মাছের একটা মস্ত বড়ো মুড়ো, টমেটোর চাটনি, ৫ রকম মিষ্টি , আর দই।
বিয়ের দিন ভোর সাড়ে ৪টে তে উঠতে হয়েছিল, দধিমঙ্গলের জন্য। খই, মিষ্টি দই আর বাতাসা'র একটা খাবার খাওয়ানো হয়েছিল আমাকে। উপায়ও ছিল না। দিনের একমাত্র খাবার বলে খেয়েছিলাম। না খেয়ে তো আর অতক্ষন থাকা যায় না। তারপর, গায়ে হলুদ। মানে ঐ বলির আগে ছাগলকে ready করা !
আস্তে আস্তে দিন গড়িয়ে বিকেল হলো। দুপুর 4টে থেকে শুরু হলো আমার সাজুগুজু। সব মিলিয়ে তৈরি হতে লেগেছিল প্রায় ৩ ঘন্টা। যখন আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম, নিজেকে প্রথমে চিনতেই পারিনি। পড়নে লাল বেনারসি, মাথায় ওড়না, খোঁপায় সাদা ফুল জড়ানো, কপালে সুন্দর নিখুঁত কল্কা।
গায়ে ও হাতে সোনার অনেক গয়না। অবশ্য, আমি যা গয়না পেয়েছিলাম, তার অর্ধেকটাও পড়িনি। আসলে, গয়না পড়তে আমার খুব একটা ভালো লাগে না, তাই যেটুকু না পড়লেই নয়, শুধু সেটুকুই পড়েছিলাম।
বিয়ের লগ্ন রাত্রি ৮টায়। আমাদের বাগানবাড়ি থেকে বিয়ে হয়েছিল আমার। আলোয় ভরে উঠেছিল পুরো চত্বর। শহরের নামী দামী মানুষে ভরে উঠেছিল সন্ধ্যাটা। সময় এগিয়ে এলো। পিঁড়িতে করে দাদারা ছাদনাতলায় নিয়ে গেলেন।
চোখের সামনে থেকে পানপাতা সড়িয়ে সামনের ভদ্রলোকটির মুখমন্ডলের দিকে চাইতে যে কতক্ষন লেগেছিল তার কোনো হিসেবে নেই। শুধু এটুকু মনে আছে, সেইদিন বরের বেশে মানুষটাকে দেখতে দুর্দান্ত লাগছিলো।
বাবার চোখে সেইবারই প্রথম জল দেখেছিলাম, কন্যাদানের সময়। মাও কেঁদে ফেলেছিলেন আর তার সঙ্গে আমিও। কিন্তু, পরক্ষনেই সামলে নিয়েছিলাম নিজেদেরকে।
সময় এলো, সিঁদূরদানের। মাথার টিকলি টা সড়িয়ে সিঁথি ভরে গেল লাল রঙে। শিমন্তীনি দেবরায় থেকে হয়ে গেলাম শিমন্তীনি অগ্নিভ রায়চৌধুরী ।।
----------------------------------------------------------------
Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro