Chào các bạn! Vì nhiều lý do từ nay Truyen2U chính thức đổi tên là Truyen247.Pro. Mong các bạn tiếp tục ủng hộ truy cập tên miền mới này nhé! Mãi yêu... ♥

৯ম

কিছু মনে না করলে একটা কথা বলবো?

আইহানের প্রশ্নটা রাওনাফকে সচেতন করে তুলল। ও কি ওভার রিয়্যাক্ট করে ফেলেছে? আর সেটা ভীষন বিসদৃশ ঠেকছে? কেমন একটা জটিল পরিস্থিতিতে পড়ে গেল রাওনাফ। তবু উত্তর তো দিতেই হবে, তাই হাসিমুখে সায় জানাল।

নিশ্চই বলবেন। বলুন কী বলতে চান।

না মানে ইয়ে... আপনার গায়ের শার্টটা কি আপনার কোনো ছোটো ভাইয়ের?

ছোটো ভাইয়ের! নাতো।

ভ্রু জোড়া কুঁচকে এল রাওনাফের। এমন কেনো মনে হলো মিস্টার আইহানের।

আসলে আপনার গায়ের কাপড়টা খুব এটে বসে আছে বলে মনে হচ্ছে। জামার হাতাটাও বেশ ছোটো আপনার শরীরের তুলনায়। সেই সাথে কাপড়ের রঙটাও অনেক ফেড, তাই.....সবমিলিয়ে কথাটা মাথায় এল আরকি।

ভীষন হাসি পেল রাওনাফের। কিন্তু সব কথায় হাসাটা ঠিক মানায় না। ইজ্জতের ফালুদা হবার সম্ভাবনা থাকে। রাওনাফ তাই খুব কষ্টে হাসিটা চেপে বলে উঠল,

এটা আসলে আপনার ব্যবহৃত পোশাক মিস্টার আইহান।

আমার! কিন্তু আপনি আমার কাপড়ে কেনো?

বিস্ময় ফুটে উঠল আইহানের চোখেমুখে।

সরি... আমি আসলে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই সিলেটে চলে এসেছি আর আমার সাথে কোনো লাগেজও ছিলনা। আপনার মা আমাকে হেল্প করতেই মূলত আপনার ব্যবহৃত কিছু কাপড় আমাকে দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। আর উনি বোধহয় আপনাকে বলার কোনো রকম সুযোগ পাননি... কারন আমি ততক্ষণে শাওয়ার নিতে ঢুকে গেছি।

রাওনাফের উত্তরে আইহানের কনফিউশন তো দূর হয়ে গেল কিন্তু এত দামী একজন গেস্টকে এমন জরাজীর্ণ কাপড় দেওয়ার কারন ওর মাথায় ঢুকলনা।

কী ব্যাপার মাটি... আমার এত আনইউসড কাপড় থাকতে তুমি ওনাকে আমার পুরানো কাপড় কেনো ব্যবহার করতে দিয়েছ?

ধরা পড়া চোরের মতো আঁতকে উঠল মাটি।

আসলে আইহান... মামনি এত তড়িঘড়ি করে কাজগুলো করতে বলেছিল যে আমার মাথা থেকে কথাটা বের হয়ে গিয়েছিল। আর তারপরে ঘরে যেয়ে দেখি উনি শাওয়ারে ছিলেন, সেজন্য কাপড়গুলোতে কোনো প্রবলেমস থাকলেও আমি সেটা জানতে পারিনি... সরি।

রাওনাফের মুখের হাসিটা নিজের অজান্তেই আরও প্রসস্ত হলো। তারমানে ওকে কাপড়গুলো দিতে মেঘ নিজে এসেছিল! থুক্কু মাটি নিজে এসেছিল। বুকের দ্রিম দ্রিম শব্দটা কয়কেশ গুন বেড়ে গিয়ে বুনো ঘোড়ার মতো ছুটতে লাগল রাওনাফের।

ইটস ওকে মিস্টার আইহান, আমি একটু পরেই বাইরে যেয়ে আমার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনে নিয়ে আসব। আপনি বরং আমাকে একটা ভালো মার্কেটের ঠিকানা বলে দিন।

থ্যাঙ্কিউ ডক্টর। আপনি এক কাজ করুন, বাইরে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিন। আমি ততক্ষণে অফিসে পৌছে যাব আশাকরি। আমার ড্রাইভার আমাকে ড্রপ করে দিয়েই আপনাদের দুজনকে শপে নিয়ে যাবে।

আমাদের দুজনকে মানে!

মাটি আর রাওনাফ দুজনেই প্রায় একই সাথে প্রশ্নটা করে বসল।

ডক্টর আপনি আমার মায়ের খুব অনারেবল একজন গেস্ট। তা না হলে আমার কাপড় মা আপনাকে পরতে দিতেন না কখনোই। কিন্তু আমার মায়ের ইন্সট্রাকশনে ভুল ছিল আর মাটির বোঝায়। দুজনের ভুল বোঝাবুঝিতে একটা হযবরল অবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন সেই ভুল ঠিক করার অর্ধেকটা দায়িত্ব যেহেতু আমি নিচ্ছি, সুতরাং বাকি দায়িত্বটা অটোমেটিকালি মাটির উপরই বর্তায়।

কিন্তু আইহান আমি... দেখো আমি তো জানতাম না যে কাপড়গুলো উনার গায়ে আঁটবে না। মামনি শুধু বলেছিল তোমার কয়েকটা কাপড় উনাকে দিয়ে আসতে।

মাটির কন্ঠটা কেমন ভারী হয়ে আসল। এই ডাক্তার লোকটা আসলে অপয়ার হদ্দ। প্রথমদিন এসেই কেমন আইহানের কাছে ওকে বকা খাওয়াচ্ছে।

মাটি আমি বলছি না যে দোষটা সম্পূর্ণ তোমার। কিন্তু ভুলটা আমরা করেছি... রাইট।

হুমম।

কাজেই এটা কারেক্টও আমাদেরই করতে হবে। আর তুমি শুধু আমার বেটার হাফই নও, আমার আনন্দ ভুবনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার একজন পার্টনারও বটে। আর ডক্টর রাওনাফ এখানে আমাদের হেল্প করতেই এসেছেন। আর এখন শুরুতেই আমরা যদি ওনাকে এভাবে ওয়েলকাম জানাই, তাহলে আমরা কী করে আশা করতে পারি যে উনি আমাদেরকে সেই গাইড লাইনটা দিবেন।

আইহানের কথার পিঠে কথা বলার মতো কোনো যুক্তি মাটি খুঁজে পেল না। সত্যিই তো... ডাক্তার লোকটা বিনা ওজুহাতে ওদের কাজটা এমনি এমনি করে দিবেই বা কেনো। মাটি খুব ভালো মতো বুঝতে পারছে পুরো ব্যাপারটা। কিন্তু ওর ওই ডাক্তারের সাথে কোথাও যেতে, কেনো যেন মন সরছে না। কাঁটার মতো খচখচ করছে। ওই লোক গতকাল সারা পথ ওকে জ্বালিয়ে মেরেছে। পাঁচ মিনিট যায়না আবার গোল গোল করে তাকিয়ে থাকে। মাটির ইচ্ছে হচ্ছিল অসভ্য লোকটার চোখ দুটো খোঁচা দিয়ে নষ্ট করে দেয়। ব্যাটা তুই একটা ডাক্তার মানুষ হয়ে, এত হাজার হাজার রোগী দেখার পরও নিজের স্বভাব ভালো করতে পারলিনা! নোংরা মানুষ একটা।

রাওনাফ মাটির মনের কথা শুনতে না পেলেও, ওর মুখের অভিব্যাক্তিটা উপলব্ধি করতে পারল পরিষ্কার ভাবে৷ আইহান যে মেয়েটাকে এক ধরনের বিপাকে ফেলে দিয়েছে সেটাও বুঝতেও ওর তেমন বেশি বেগ পেতে হলোনা। বুকের ভিতরে মুচড়ে উঠে একধরনের চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হলো রাওনাফের। এমনিতেই মেঘের শূন্যতা ওকে পাগল করে রেখেছে তার উপর.... মাটি আর মেঘের এই গোলকধাঁধা ওর ক্ষতকে আরও গভীর ক্ষতের রূপ দিচ্ছে।

কিন্তু রাওনাফ এটুকু বুঝেছে... মাটি সত্যিই অন্য কেউ, নাকি ওর মেঘলা এটা বুঝতে হলে ওকে মাটির কাছাকাছিই থাকতে হবে। ওর সাথে কথা বলতে হবে। তবে সামনে থাকা মেয়েটি মাটি হোক অথবা মেঘলা... ওকে কোনো ভাবেই সহ্য করতে পারছে না, এটুকু রাওনাফের কাছে পরিষ্কার। ঢাকা টু সিলেট জার্নির বেশিরভাগ সময়টাই মেয়েটা ওকে ইগনোর করে গিয়েছে। হয় প্রশ্ন করলে কোনো জবাব দেয়নি অথবা কোনো খটমটে উপায়ে উত্তর দিয়েছে, যা শুনলে দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করার ইচ্ছেটই মরে যায়।

মিস্টার আইহান, আমার মনে হয় আপনি অযথাই ম্যাডামকে ঝামেলায় ফেলছেন৷ তারচেয়ে আমি একাই বরং ড্রাইভারকে নিয়ে কাজগুলো সেরে আসি। রাওনাফের কাছে এই প্রস্তাবটাই সঠিক মনে হলো। মাটি এখনই ওর উপর চটে গেলে রাওনাফের জন্য কাজটা ভীষন কঠিন হয়ে যাবে।

গুড... ভেরি গুড।

রাওনাফের কথায় মনে মনে আশার আলো দেখল মাটি। লোকটার এখনকার কথা শোনার পরে লোকটাকে আগের চেয়ে একটু বেটার কোয়ালিটিরই মনে হচ্ছে। একেবারে লুচ্চা মনে হয় না।

আপনি শিওর ডক্টর যে আপনি একাই ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করতে পারবেন। এখানে কিন্তু প্রত্যেকটা মার্কেটে বার্গেনিং করা একেবারে মাস্ট।

সমস্যা নেই, আমি ঢাকা মেডিকেল থেকে পড়াশুনা করে তারপর দেশের বাইরে গিয়েছি মিস্টার আইহান। সো এখানকার পরিবেশ হ্যান্ডেল করতে আমার খুব বেশি সমস্যা হবেনা। আপনি জাস্ট আমাকে একটা বাহন দিয়ে হেল্প করলেই এনাফ।

আপনি শিওর ডক্টর?

অফকোর্স কিন্তু আমার এই মুহুর্তে অন্য একটা হেল্প লাগবে মিস্টার আইহান।

কোনো রকম সংকোচের ধার ধারবেন না ডক্টর। আপনার যা যা হেল্প লাগবে স্রেফ বলে ফেলুন।

উমম... আসলে আমার এই শার্টের বাটনটা খুব লুজ হয়ে গেছে। এখন ঠিক করে না বের হলে দেখা গেল রাস্তার উপরই কোথাও খুলে গেল।

মাটি তাকিয়ে দেখল, রাওনাফের শার্টের দুই নম্বর বাটনটা বড়ো অসহায় ভাবে, ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো দোল খাচ্ছে।

মাটি... প্লিজ বিষয়টা একটু দেখো না।

আইহানের মিষ্টি মধুর ডাক শুনে পিলে চমকে উঠল মাটির৷ সর্বনাশ... এখন ওকে এই লোকের বোতাম সেলাই করে দিতে হবে নাকি! না.. কখনোই না। এই কাজ মাটি জীবনেও করবে না। গতকাল রাতে কাপড় দেয়ার সময়ে যে অদ্ভুত অনুভূতির শিকার ও হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি হোক মাটি তা চায় না। ভয়ে গা কেমন জড়োসড়ো হয়ে আসতে চায় ওর। কেমন গা গুলিয়ে আসে।

................

নিশ্চই ইচ্ছে করে টেনে হিচড়ে বোতামটা খুলে লুজ করেছে। এই ডাক্তারের মতলব ভালো না। কিন্তু এতক্ষণে আইহান নিশ্চই ড্রাইভারকে ছেড়েও দিয়েছে। দ্রুত লোকটার বোতাম ঠিক না করে দিলে, দেখা গেলো আইহান আর মামনির কাছে ওর নামে একগাদা কমপ্লেন করল.... তখন?

সুঁই সুতোর বাক্স থেকে সাদা সুতো মিলিয়ে নিয়ে ডাক্তারের ঘরের দিকে চলল মাটি। মনে মনে ভাবছে, সাথে একটা কাজের মানুষ নেওয়া ভালো ছিল নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে। কিন্তু লোকটার নিশ্চই এত সাহস হবেনা। আর হলে হাতের সুঁইটা ঠিক ওর চোখে ফুটিয়ে দিবে মাটি।

ঠক ঠক শব্দ হতেই দরজাটা পুরোপুরি খুলে দিল রাওনাফ। মাটির হাতে সুঁই-সুতো দেখে একটু অবাকও হলো। মেয়েটা আবারও এসেছে। কেনো? সে তো ওকে পছন্দই করছে না৷

আপনি!

আপনার শার্টের বোতামটা।

আমাকে দিন, আমি নিজেই লাগিয়ে নিচ্ছি।

উত্তরটা ভালো লাগল মাটির। লোকটা মনে হয় অত খারাপও না। তবে আইহানের উপর ওর অভিমান হয়েছে। সময় আসুক, মাটিও ব্যাপারটা দেখে নিবে তখন।

না ঠিক আছে, আমাকে দিন আমি করে দিচ্ছি।

রাওনাফ আর কথা না বাড়িয়ে গায়ের শার্টটা খুলে মাটির হাতে দিয়ে দিল। তারপর দূরে বিছানায় গিয়ে বসে রইল। এমন না যে মাটি ওর বোতাম ঠিক করে দিচ্ছে বলে ও খুশি না। কিন্তু মাটি যদি ওর মেঘ না হয়ে অন্য কেউ হয়। কিন্তু অন্যকারো গলা তো আর মেঘের মতো হতে পারেনা। গভীর এক দোলাচলে দুলতে থাকে রাওনাফ, কোনো কূল কিনারা পায়না।

মানুষটা ওর থেকে কমছে কম পাঁচ হাত দূরে হবে, অথচ মাটির হাত কাঁপাটা কিছুতেই থামছে না৷ বুকের ধুকপুকানি আর কানের লতিও সেই একই তালে কাঁপছে। নিজের উপর রাগে ফেটে পড়ল মাটি। কী আজব... ওই লোকটা আসলে ওর কিছুই করছে না। চুপ করে ওর সেলাই করাই একভাবে দেখে যাচ্ছে। অথচ ওর হাত কাঁপাকাপি করা দেখলে যে কারও মনে হবে ও বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সমস্যাটা এমন যেন... এই সেলাইয়ের উপর ওর জীবন মরন সমস্যা।

ক্রমশ.......

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen247.Pro